ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সকল ছাত্র সংগঠনের ঐক্যের ডাক
বাংলাদেশ বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দেশের সকল ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ঐক্যের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঐক্যের বিকল্প নেই উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় নেতারা এ ঘোষণা দেন।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক জোট আয়োজিত ‘বিপ্লবোত্তর ছাত্র-ঐক্য’ সমাবেশে এ ঘোষণা দেন তারা।
সমাবেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সকল ছাত্র সংগঠনগুলোকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার প্রতিজ্ঞা করতে হবে। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আমি এই ঘোষণা করছি, দেশের ক্লান্তিলগ্নে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পথ চলবো। যে ঐক্যের ডাক এসেছে এটাতে আমরা সম্পূর্ণ একমত। বিএনপি সর্বাত্মকভাবে ঐক্যকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সাংবাদিক জোটের ঐক্যের ডাককে প্রশংসনীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৪ -এর আন্দোলনে সরকার তার রাষ্ট্রীয় বাহিনী নিয়ে সমগ্র ছাত্র-জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতার ঐক্যের কারণে বিজয় নিশ্চিত হয়েছে। এই ঐক্য ছাড়া জাতির সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বর্তমানে কাঠগড়ায় আমরা যেভাবে হাসিনাকে দায়ী করছি, ঐক্যবদ্ধ না থাকলে ভবিষ্যতে এই মঞ্চে যারা আছে তাদেরকে একইভাবে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তাই এই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের অখণ্ডতার বিষয়ে আমাদের ইস্পাতের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার দিল্লিকে কিবলা বানিয়ে ঢাকাকে শাসন করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর যে ছাত্র সংগঠন গুলো আন্দোলন করেছে তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। সরকার গঠনে কোনো ছাত্র সংগঠন মতামত নেওয়া হয়নি। গুটিকয়েক ছাত্রদের গণভবনে ডেকে সরকার গঠন করা হলো।
আগামীর বাংলাদেশ কি হবে সকল ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করতে হবে। সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামীর ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ ঠিক করবো।
ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ছাত্র ঐক্য ছিল, বিপ্লবের পর সেই ঐক্য গেলো কোথায়। আন্দোলনের ১০০ দিন পর কেন এই ঐক্যের আবার ডাক দেওয়া হচ্ছে। যারা সরকারে কাজ করছে তারা এতোদিন বুঝেন নাই? দেশ চালাতে সবাইকে লাগবে। যে ছাত্র জনতা রক্ত দিয়েছেন তাদের ধারণ করতে হবে।
তিনি বলেন, যেভাবে বিজেপি আক্রমণাত্মক আচরণ করছে এতে বোঝা যায় আমরা সত্যিকার অর্থে সংকটে আছি। এই সরকারকে আমরা সম্মিলিতভাবে সহযোগিতা করবো। এ সময় জাতীয় ছাত্র কাউন্সিল গঠনের দাবি জানান তিনি।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, শেখ হাসিনা আয়্যুব খানের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়নি। আয়্যুব খান তার দেশে থাকতে পেরেছিলেন, আর হাসিনা পালিয়ে গেছে। আমাদের দেশে সাম্রাজ্যবাদ হস্তক্ষেপ আগেও ছিল এখনো আছে। ভারতবর্ষের যে চক্রান্ত তা যদি আমরা না বুঝি তাহলে বিপ্লব ব্যর্থ হবে। ভারতের মিডিয়ার প্ররোচনায় আমরা বিভাজিত হবো না। আমরা কারো দাসত্ব মানবো না। যারা সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি চান তারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহমুদুল হাসান তানভীরের সভাপতিত্বে এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সুবর্ণ আসসাইফের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, জাস্টিস ফর জুলাই এর জবি আহ্বায়ক সজিবুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি নুরুল বাশার আজিজী এবং বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দ।