সেতু যখন গলার কাটা
একপাশে গাজীপুর সিটি করপোরেশন অপর পাশে কালিয়াকৈর উপজেলা। দুই এলাকাকে বিচ্ছিন্ন করে বয়ে গেছে তুরাগ নদী। নদীর তীরে অবস্থিত প্রাচীন এক বাজার সাকাশ্বর। আশপাশের অন্তত ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের মানুষ ওই বাজারে হাট-বাজার করতে আসে প্রতিদিন।
এক সময় দুই পাড়ের মানুষের নদী পারাপারে প্রধান মাধ্যম ছিল নৌকা। সেই নৌ পারাপার বন্ধ হয় তুরাগের বুকে সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু নির্মাণে। তবে আলোর মুখ দেখেনি সেতুটি। পাঁচ বছর ধরে সেতু হলেও এখনো এক পাশে হয়নি সংযোগ সড়ক। যার ফলে সেতুর সুফল ভোগ করতে পারছে না দুই পাড়ের মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাজীপুর সিটি ও জেলা সদরের মাস্টার বাড়ি- খালিশাবর্তা- সাকাশ্বর সড়কে তুরাগ নদের ওপর নির্মিত সেতুর নাম দেওয়া হয়েছে মন্ত্রী সামসুল হক সেতু।
সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিয়ে বছরের পর বছর কেটে গেলেও আজ অব্দি সড়ক নির্মাণের কোন বাস্তব চিত্র দেখা যায়নি। অবহেলিত এ অঞ্চলের কৃষক ও আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করে। সেতুতে উঠার রাস্তা উঁচু ও ঝুঁকিপূর্ণ।বয়স্ক, নারী ও শিশুদের অন্যের সহযোগিতায় সেতুতে উঠতে হয়। এতে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে। বর্ষা মৌসুমে থাকে অথৈজল।
স্থানীয় বাসিন্দা মোজাম্মেল হোসেন আক্ষেপ করে বার্তা২৪.কমকে বলেন, কত আশা আছিল মরার আগে ব্রিজ দেইখা যামু। ব্রিজ দেখলাম কিন্তু রাস্তা দেখবার ভাগ্য মনে হয় হইব না।
সুরাইয়া খাতুন নামে এক গৃহবধূ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আগে নৌকা দিয়া পারাপার হতাম ওটাই ভালো ছিল। ব্রিজ হওয়াতে আমাদের সুবিধা হবার কথা থাকলেও উলটো দুর্ভোগ বেড়েছে।
এবিষয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানান, একবার রাস্তার দরপত্র আহবান করা হয়েছিল, কিন্তু এলাকার মানুষ জমি দেয়নি এজন্য দরপত্রের প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আবারও ৪২ কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট দেওয়া হয় কিন্তু সেটাতেও মাটি কাটতে বাধা তৈরি হয়।
তিনি জানান, এই সেতুর সংযোগ সড়ক হওয়া খুবই প্রয়োজন। এতে কালিয়াকৈরসহ কয়েক এলাকার মানষের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হবে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন জোন-৫–এর তত্ববধায়ক প্রকৌশলী এ. কে. এম. হারুনুর রশীদ বলেন, সংযোগ সড়কের জন্য জনসাধারণের কষ্ট হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি সংস্কার করার জন্য চেষ্টা করবো। আগে কিছু জটিলতার কারণে সম্ভব হয়নি।