অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকশ চৌধুরী এবং গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল করিম খানের অপসারণসহ বেশ কিছু দাবিতে সমাবেশ করেছে উলামা মাশায়েখ ও তওহিদি জনতা।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় তাবলিগের বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের ৬ নম্বর গেটের সামনে তাবলিগের শুরায়ী নেজামের আহবানে উলামা মাশায়েখ ও তওহিদি জনতার ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বক্তারা এসব দাবি জানান।
সমাবেশ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আমাদেরকে হেফাজত বলে গালি দিতেন। আমরা সহ্য করেিছ। ইজতেমা নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সহকারী উপদেষ্টা খোদাবক্স ও জিএমপির কমিশনার নাজমুল করিম খান আওয়ামী লীগের দোসর। তাদের অপসারণ করতে হবে। আমরা সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইজতেমার ময়দানে অবস্থান নিলাম। কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে ওই দুই জনকে দায় নিতে হবে। তারা দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতকে বিনষ্টের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, আলেম সমাজের প্রতিনিধি ধর্ম উপদেষ্টা এখন দেশের বাইরে। এই সুযোগে খোদাবক্স ও কমিশনার নাজমুল করিম খান এসব করছে। একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মুরুব্বিদের নিয়ে সমস্যা সমাধান করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে আমরা আছি। যেকোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে দায় ওই দুই জনের।
সমাবেশ থেকে বলা হয়, গত ৭ নভেম্বর গৃহীত সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইজতেমার মাঠ শুরায়ী নেজামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। কোনো অবস্থাতেই মাওলানা সাদকে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হবে না।
এ সময় দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের বিরুদ্ধে মানহানিকর মিথ্যা মামলা প্রদানকারীসহ ২০১৮ সালে ১ ডিসেম্বর ইজতেমার মাঠে মাদরাসার ছাত্র ও তাবলিগের সাথীদের ওপর সাদপন্থীদের সন্ত্রাসী হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানেরও দাবি করেন বক্তারা।
মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ বক্তব্য রাখেন- মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমি, মুফতি আমানুল হক, মুফতি মাসউদুল করিম ও মাওলানা হামেদ জাহেরি প্রমুখ। মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারি সমাবেশ পরিচালনা করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানি, মাওলানা আনিসুর রহমান, মাওলানা সালাউদ্দিনসহ দাওয়াত ও তাবলিগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
এর আগে, মাওলানা সাদকে নিয়ে জোড় ইজতেমা করার দাবিতে সকাল ৯টায় আলটিমেটাম দেন সাদপন্থীরা। গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি থেকে ৩৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম ঘোষণা দেওয়া হয়। অবস্থান কর্মসূচি থেকে বলা হয়, আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরদিন ১৭ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বাড়ির সামনে লাখ লাখ মুসল্লি নিয়ে তারা অবস্থান নেবেন ও ধর্মঘটের ঘোষণা দেবেন। সাদপন্থীদের এমন ঘোষণায় শুরায়ী নেজামের মুরুব্বিরা ইজতেমা ময়দানে বাদ প্রতিবাদ সমাবেশ করে।