নতুন ঢুকেছে ৮০ হাজার রোহিঙ্গা: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশে নতুন করে অন্তত ৮০ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল মিসরের কায়রোয় মালয়েশিয়ার হায়ার এডুকেশন মন্ত্রী ড. জামব্রি আবদুল কাদিরের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
ড. ইউনূস বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতার কারণে গত কয়েক মাসে ৮০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এ সময় তিনি রাখাইনের বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস কায়রোয় ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে অবস্থান করছেন এবং বৈঠকটি ছিল তাঁর সম্মেলন সফরের অংশ। এ বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগ, উচ্চশিক্ষায় সহযোগিতা, রোহিঙ্গা সংকট এবং আসিয়ানে বাংলাদেশের সম্ভাব্য যোগদানবিষয়ক আলোচনা।
এ সময় ড. জামব্রি আবদুল কাদির বলেন, রোহিঙ্গা সংকটসহ অন্যান্য বিষয়ে কুয়ালালামপুর বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের দিকে তাকিয়ে আছি।
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, সংঘাত, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, রোহিঙ্গা সমস্যা সব সময় ওয়াশিংটনের অগ্রাধিকারের তালিকায় আছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে সব সময় কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, বাংলাদেশের সরকার এবং জনগণ সবসময় রোহিঙ্গা ইস্যুতে উদারতা দেখিয়েছে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। আমরা রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য অরক্ষিত সম্প্রদায়কে সমর্থনে সবসময় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করব।
বিবিসি বাংলায় ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখন রোহিঙ্গার সংখ্যা ১২ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে আট লাখ রোহিঙ্গা ঢুকেছে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী কয়েকমাসে। তবে বাস্তবে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে দাবি স্থানীয় সূত্রগুলো।
মিশর সফরে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থী অনুপ্রবেশের যে তথ্য তুলে ধরলেন তা যোগ করলে এ সংখ্যা আরও বাড়বে। সর্বোপরি মিয়ানমারের চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতি যে রোহিঙ্গা শরণার্থী অনুপ্রবেশের ঝুঁকি অনেকগুণ বাড়িয়ে তুলছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।