স্ত্রীর মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালালেন স্বামী, প্রথম স্ত্রী আটক
প্রেম করে কিশোরী রিমা আক্তারকে (১৫) বিয়ে করেন পারভেজ মিয়া (২৬)। বিয়ের তিন মাসের মাথায় রিমার মৃত্যু। এমন অবস্থায় মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়েছেন স্বামী পারভেজ। খবর পেয়ে পুলিশ পারভেজের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার প্রথম স্ত্রীকে আটক করেছে।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) এমন ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
নিহতের পরিবারের দাবি, পারভেজ ও তার প্রথম স্ত্রী মিলে রিমাকে হত্যা করেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রিমা আক্তার নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের কোনাডাংগর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়ন করতো। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে পাশের গ্রামের পারভেজ মিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তিন মাস আগে আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করেন তারা।
বিয়ের পর রিমা জানতে পারে তার প্রেমিক পারভেজের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। এনিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হলে রিমা বাবার বাড়ি চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। এদিকে পারভেজের প্রথম স্ত্রী ঝুমা আক্তারও বায়না ধরে দ্বিতীয় স্ত্রী বাড়ি না ছাড়লে তিনিও বাবার বাড়ি চলে যাবেন। এরপর আজ ভোরে রিমা গুরুতর অসুস্থ হলে দ্রুত তাকে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্বামী পারভেজ। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মিনহাজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, অনেক আগেই রিমা মারা গেছে। এই খবর শুনে স্ত্রীর লাশ রেখেই স্বামী পালিয়ে যায়।
এদিকে ঘটনার পর পারভেজেকে ধরতে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এসময় তাকে না পেয়ে তার প্রথম স্ত্রী ঝুমাকে আটক করে।
রিমার মা মর্তুজা বেগম জানান, তার মেয়ে পাশের একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ত। এ সময় যাওয়া-আসার পথে পারভেজ তাকে উত্ত্যক্ত করত। প্রায় তিন মাস আগে রিমা বিদ্যালয়ে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে জানা যায়, পারভেজ তার মেয়েকে বিয়ে করেছে। এ খবরে পরিবারের লোকজন আর কোনো খবর নেয়নি। মায়ের ধারণা, পারভেজ ও তার প্রথম স্ত্রী মিলে তার মেয়েকে হত্যা করেছে।
নান্দাইল থানার ওসি ফরিদ আহম্মেদ জানান, ঘটনা জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে প্রথম স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।