দুবাইফেরত বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজ জব্দ
চোরাচালানের সোনা বহনের অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ জব্দ করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটির একটি আসনের নিচ থেকে ২ কেজি ৩৩০ গ্রাম (২০টি বার) ওজনের সোনার বার জব্দ করা হয়। এরপরই বিকেলে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের কর্মকর্তারা উড়োজাহাজটি জব্দ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উড়োজাহাজটি জব্দ করার বিষয়ে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, কাস্টমস আইনে, কোনো যানবাহন যদি চোরাচালানের পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত থাকে, তবে সেটি জব্দ করা যাবে। আমরা উড়োজাহাজটি ওই আইনের আওতায় জব্দ করেছি।’ তিনি আরও জানান, এই জব্দের অর্থ এই নয় যে উড়োজাহাজটি চলাচল করতে পারবে না, বরং এটি কাগজে কলমে জব্দ থাকবে এবং তদন্তের স্বার্থে জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইবো, উড়োজাহাজটির পাইলট ও ক্রুসহ সাপোর্ট স্টাফরা কে ছিলেন এবং তাদের মধ্যে কেউ এই চোরাচালানে জড়িত কি না।
মিনহাজ উদ্দিন উল্লেখ করেন, সিটের নিচে সোনার বারগুলোর অবস্থান এবং সেগুলোর লুকানোর কৌশলটি থেকে স্পষ্ট হয় যে এটি একা একটি ব্যক্তির পক্ষে করা সম্ভব ছিল না, এবং অন্যের সহায়তা প্রয়োজন ছিল।
এ ঘটনায় উড়োজাহাজের যাত্রী আতিয়া সামিয়াকে আটক করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে তার সাথে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, তিনি অনলাইন স্বর্ণ ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার কথা মৌখিকভাবে স্বীকার করেন। তার ভিজিটিং কার্ডেও একই তথ্য পাওয়া গেছে। তাকে পতেঙ্গা মডেল থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ জব্দের ঘটনা এটিই প্রথম বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এক দশক আগে ঢাকায় চোরাচালানের সোনা বহন করায় দুটি উড়োজাহাজ জব্দ করার নজির রয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুবাই থেকে আসা বিমানের সিটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা ২ কেজি ৩৩০ গ্রাম (২০টি বার) সোনা উদ্ধার করা হয়েছে।
সোনার বারগুলো বিমানের ৯-জে সিটের নিচে প্লাস্টিক টেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় লুকানো ছিল।
উদ্ধারকৃত সোনার বাজারমূল্য প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এটি বিমানবন্দর শুল্ক গোয়েন্দার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, চোরাচালানের উদ্দেশ্যে বিশেষ কায়দায় আনা এসব সোনা রাষ্ট্রীয় অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। তদন্তের স্বার্থে আটক যাত্রীর পরিচয় আপাতত গোপন রাখা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে পতেঙ্গা মডেল থানায় ফৌজদারি মামলা প্রক্রিয়াধীন।