কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরের ওপর বেড়া, যা বলছে এলাকাবাসী

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

কুমিল্লা সীমান্তে একটি পুকুরে কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। পুকুরটি দুই দেশের সীমান্ত রেখার মাঝখানে পড়েছে এবং দীর্ঘ সময় ধরে উভয় দেশের বাসিন্দারা এ পুকুরে গোসলসহ প্রয়োজনীয় কাজ তথা পানি সংগ্রহ করে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুকুরটির এক তৃতীয়াংশ ভারতে। বাকি একাংশ বাংলাদেশে পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

পুকুরটির এপাশটা কুমিল্লা সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রাম আর ওপাশটা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহি জেলার সোনামুড়া থানার সূর্যনগর।

এতদিন বেড়া না থাকায় দুই অংশের বাসিন্দারাই সম্প্রীতির সাথে একই পুকুর ব্যবহার করে আসছিলেন। এপাড়ের মানুষ ওপাড়ে, ওপাড়ারে মানুষ এপাড়ে যাতাইয়াত করতেন বিনা বাধায়। এমনকি রয়েছে বৈবাহিক সম্পর্কও। সেখানে কিছুদিন আগে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করে বিএসএফ। এবং সে কাজ চলমান রয়েছে। তবে এই বেড়া নির্মাণে বাংলাদেশের ভুখণ্ড ব্যবহার করে  হচ্ছেনা এবং তা সিদ্ধান্ত মোতাবেকই হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিন কুমিল্লার ওই সীমান্ত ঘুরে দেখে বার্তা২৪.কম।  সেখানে দেখা যায়, পুকুরটির কাছেই বিজিবির চার সশস্ত্র সদস্য সতর্ক প্রহরায় রয়েছেন। তাদের উপস্থিতিতে চলছে কাঁটাতারের পিলার বসানোর কাজ। ভারতীয় অংশে টহল বাড়িয়েছে বিএসএফ। এদিকে বিজিবির সদস্যদের টহল বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে প্রবেশের সব রাস্তায় এখন কড়া পাহারা।

বিজিবির সদস্যদের টহল বাড়ানো হয়েছে

এ সময় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে। রাজিবা সুলতানা নামে একজন বাসিন্দা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী থাকার কারণে আসা-যাওয়া করেছি। ওপাড়ে আত্মীয় স্বজনও রয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া তৈরি হওয়ায় আমদের আত্মীয়-স্বজনের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়ে গেল। বিএসএফ আমাদের সাথে বেশি জুলুম করতেছে।

একই এলাকার ৭০ বছর বৃদ্ধ মাইনুল হাসান মিয়া বলেন, ভারতে আমি বিয়ে করেছি। ওখানে আমার শ্বশুরবাড়ি। বেড়া দেওয়ার কারণে আর আমার শ্বশুরবাড়িতে আগের মতো নিয়মিত যেতে পারবো না।

কুমিল্লা ১০ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এম জাহিদ পারভেজ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে কুমিল্লা সীমান্তের জিরো পয়েন্টের কিছু অংশে ১৫০ গজের মধ্যে বেড়া নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়। এখন সেই কাজ চলছে। তবে নকশার বাইরে কাজ করছে কি না, আমরা সর্বদা তা মনিটরিং করছি। নকশা অনুসারে কাজের কোনো হেরফের হলে সঙ্গে সঙ্গে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা আমাদের এক ইঞ্চি মাটিও তাদের দখলে যেতে দেব না।