চাঁদপুরে ৬ টাকা কেজিতেও নেই মিষ্টি কুমড়ার ক্রেতা, বিপাকে কৃষকরা
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় গত বছরের চাইতে দ্বিগুন জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন ভালো হলেও বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কুমড়ার কম-বেশি আবাদ হলেও হাজীগঞ্জের ডাকাতিয়া নদী এলাকায় পলিমাটি ঘেরা বলাখলা ও শ্রীনারায়ণপুর, অলিপুর গ্রামে বেশি চাষ করা হয়েছে মিষ্টি কুমড়া।
জেলার হাজীগঞ্জে এ বছর প্রায় ৬১৮ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে। গেলো বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে মিষ্টি কুমড়া ক্রয় করতো। ফলে ভালো দাম পেতো কৃষকেরা। এবছর মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু ক্রেতা সংকটে কেজি প্রতি ৬ টাকায় বিক্রয় করেও জমিতেই পড়ে আছে মিষ্টি কুমড়া।
কৃষক আব্দুল মোতালেব, নাজির আহমেদ ও শুকুর গাজী জানায়, চলতি মৌসুমে বলাখাল, শ্রীনারায়নপুর গ্রাম জুড়ে চাষাবাদ করা হয়েছে হাইব্রীড জাতের কুমড়া। এ কুমড়া এখন বিক্রয় হওয়ার সময়। প্রতি বছর এ সময়ে জমির প্রায় ৬০ ভাগ কুমড়া বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর বিক্রয় হয়নি। প্রতি বছর এ সময়ে ঢাকার কারওয়ান বাজার, চট্রগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালি ও লক্ষীপুর থেকে পাইকার এসে উৎপাদিত কুমড়াগুলো কিনে নিতেন। এ বছর পাইকারদের দেখা নেই। স্থানীয় বাজারে ৬ টাকা থেকে শুরু করে ১২ টাকা কেজি প্রতি বিক্রয় করছি। তবুও ক্রেতা পাচ্ছিনা।
এদিকে কৃষি মাঠের সমস্যা সমাধানে কৃষি কর্মকর্তাদের পাশে পায়না বলেও অভিযোগ করেন কৃষকেরা। তাদের দাবি গেলো ২ দশক ধরে কৃষি অফিস থেকে তাদের খোঁজ খবর নেওয়া হয়নি।
তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম বলছেন, এবছর মিষ্টি কুমড়া আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৬১৮ হেক্টর জমিতে। সরকারি সহায়তা ও কৃষি প্রনোদনার মাধ্যমেও কৃষকদের মাঝে উচ্চ ফলনশীল মিষ্টিকুমড়া বীজ বিতরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে আধুনিক চাষাবাদের উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
অন্যান্য বছর ঢাকা বিশেষ করে চট্টগ্রাম থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে এই কুমড়া কিনে নিয়ে যেতো। এবছর সরকারি সহায়তা ও কৃষি প্রনোদনার কারণে চট্টগ্রাম, লক্ষীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুরের অধিক মিষ্টি কুমড়া আবাদ হয়েছে। তাই বাইরের জেলার ব্যবসায়ীরা এখনো আসেনি। কৃষকরা যাতে নিজেরাই ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করে সেই পরামর্শ দিচ্ছি।