ওয়ার্ড বয়দের হেনস্তায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, স্বজনদের মারধর
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত ওয়ার্ড বয়দের দাবিকৃত ৫০০ টাকা না দেয়ায় রোগীকে নিয়ে হেনস্তা ও অবহেলায় মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। এছাড়া ওই রোগীর স্বজনদেরও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা হাসপাতালের পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে হাসপাতালটির কার্ডিওলজি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া ওই রোগীর নাম স্বপ্না হালদার (৩২)। সে জেলার ভাঙ্গা উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের বিশোরীকান্দি গ্রামের প্রাণকৃষ্ণ বালার মেয়ে এবং পাশ্ববর্তী মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার খালিয়া গ্রামের রমেন হালদারের স্ত্রী। তাঁর ছোট দুই শিশু সন্তান রয়েছে।
মারা যাওয়া রোগীর স্বামী রমেন হালদার জানান, ‘শনিবার বিকালে স্বপ্নার বুকে ব্যাথা হলে রাত ৯টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। এরপর ডাক্তাররা ভাল চিকিৎসাও দিয়েছে এবং অনেকটা সুস্থ্যও হয়ে উঠেছিল। আজ সকালে হাসপাতালের দুইজন স্টাফ এসে টাকা দাবি করে এবং টাকা না দেয়ায় জোড় করে অন্য একটি বেডে পাঠিয়ে দেয়। রোগীকে ওই বেডে নিয়ে ফেলে দেয়। তখন তার ক্যানুলা দিয়ে রক্ত উঠে যায় এবং অক্সিজেনও ঠিকমতো লাগিয়ে দেয়নি। ওই সময় স্বপ্না জানায় তারা বুকে বেশি ব্যাথা হচ্ছে। এর দুই মিনিটের মধ্যেই মারা যায়। আমি এর বিচার চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন আমার শ্যালক আকাশ ও তার মামা বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে তাঁদের কলার ধরে নিয়ে হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যায় এবং সেখানে নিয়ে তাঁদের কিল-ঘুষি দেয়া হয়।’
অভিযোগে উল্লেখ করেন, হাসপাতালের কর্মচারী আনোয়ার মোল্যা ও আউটসোর্সিং ২৯ ব্যাচের সুইপার মো. সমেস মিয়া তাঁদের এসে বলেন, এই বেডে রোগীকে রাখা যাবে না। তখন পাঁচ মিনিট সময় চাইলে জোড় করে ওই রোগীকে অন্য বেডে নিয়ে যায় এবং ভাল বেড দেয়ার জন্য ৫০০ টাকা দাবি করেন। ওই টাকা না দেয়ায় অভিযোগকারীর গায়ে হাত দেন তাঁরা এবং ওই বেডে নেয়ার দুই মিনিটের মধ্যে মারা যায় বলে উল্লেখ করেন।
বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. হুমায়ুন কবির বলেন, গতকাল রাতে স্বপ্না বালাকে মুমূর্ষু অবস্থায় আনা হয় এবং তাকে অবজারভেশন বেডে রেখে যথেষ্ট চিকিৎসা দেয়া হয়, আমাদের চিকিৎসায় কোনো গাফিলতি ছিল না।
তিনি আরও বলেন, আজ সকালে ওই রোগীকে অবজারভেশন বেড থেকে অন্য একটি বেডে নেয়া হয়। ওয়ার্ড বয় আনোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করব, স্বজনরা সময় চাওয়ার পরেও কেন তাকে বিছানা পরিবর্তন করা হলো এবং ওরা যদি এ ধরনের অন্যায় করে থাকে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।