সিন্ডিকেট বন্ধ ও একক ভিসায় বর্হিগমন ছাড়পত্র চালুর দাবি
মালয়েশিয়া ও অন্যান্য দেশে সিন্ডিকেট বন্ধ এবং সৌদিআরবে একক ভিসায় সত্যায়ন বিহীন বর্হিগমন ছাড়পত্র চালুর দাবি জানিয়েছে বায়রার সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্ট। একই সঙ্গে বিমানের টিকেট সিন্ডিকেট বন্ধেরও দাবি জানানো হয়।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে সাবেক সংসদ সদস্য ও বায়রার সাবেক সভাপতি এম. এ. এইচ. সেলিম বলেন, 'বিগত স্বৈরাচারী ও বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কিছু ভূলনীতি ও কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতিকারী, লোভী, অপরাধী এবং ষড়যন্ত্রকারী ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই সেক্টরটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাড়িয়েছে। স্বৈরাচারী সরকারের আশ্রয়ে, প্রশ্রয়ে ও প্রত্যক্ষ সমর্থনে সিন্ডিকেট হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারও তাদের কোন বিচার করেনি। এই বিচারহীনতার কারণে সিন্ডিকেটের মাস্টারমাইন্ড আমিন, স্বপনেরা পুনরায় মালয়েশিয়াতে সিন্ডিকেট করে অভিবাসী কর্মী রপ্তানি করার চেষ্টা করছে।'
তিনি আরও বলেন, 'স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে, দেশপ্রেমিক অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে কিন্তু মন্ত্রনালয় ও বিএমইটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মকান্ডে কোন পরিবর্তন হয়নি। বরং মনে হচ্ছে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের প্রেতাআত্মা এখনো মন্ত্রনালয় ও বিএমইটির প্রতিটি টেবিলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা শুনতে পাচ্ছি ঐ চিহ্নিত চক্রটি পুনরায় সিন্ডিকেট করে মালয়েশিয়াতে জনশক্তি রপ্তানি করার পাঁয়তারা করছে এবং তাদেরকে নাকি আমাদের মন্ত্রনালয়ের কেউ কেউ সহযোগিতা ও করছেন। এবার যদি অন্তবর্তীকালীন সরকার সিন্ডিকেটে মাধ্যমে মালয়েশিয়াতে কর্মী রপ্তানির সুযোগ দেন, তাহলে তাদের সাথে স্বৈরাচারী সরকারের পার্থক্য কোথায়। আশাকরি সরকার সিন্ডিকেট ফাঁদে পা দিবেন না এবং বাজারটি সকলের বৈধ রপ্তানিকারকদের জন্য উন্মুক্ত রাখবেন। যদি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মালয়েশিয়া বা অন্য কোন দেশে অভিবাসী কর্মী পাঠানোর চেষ্টা করা হয় তাহলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।'
সৌদি আরবের ভোগান্তির কথা তুলে ধরে এম. এ. এইচ. সেলিম বলেন, 'সৌদি আরব বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মীদের বৃহত্তর শ্রমবাজার। বর্তমানে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ শ্রমিক এই দেশে কর্মরত। কিন্তু দূতাবাসের কর্মীর সংখ্যা খুবই কম। বিগত অনেক বছর থেকে ২৫ জনের নিচে কোন চাহিদা পত্রের সত্যায়নের প্রয়োজন ছিলো না। কিন্তু এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতিটা চাহিদা পত্র দূতাবাস থেকে সত্যায়ন করা বাধ্যতামূলক করে দেন। এতে করে হাজার কর্মী ও শত শত রপ্তানিকারক ভীষণ বেকায়দায় পড়ে যায়। সরকারের এই প্রজ্ঞাপনের ফলে রিব্রুটিং এজেন্সির মালিকেরা শ্রমিক রপ্তানি করতে পারছে না। নিয়োগকর্তারাও বাংলাদেশের ব্যপারে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছে। বাজার চালু রাখার স্বার্থে, অভিবাসী কর্মী ও রপ্তানিকারকদের হয়রানি বন্ধ করার জন্য পূর্বে নিয়মে বহির্গমন ছাড়পত্র দেওয়া জন্য আমরা সরকারের নিকট বিনীতভাবে অনুরোধ করছি। এর পাশাপাশি সিন্ডিকেট প্রথা ভেঙে দিয়ে প্রতিটি রুটে যৌক্তিক ভাড়া ও অভিবাসী কর্মীদের জন্য লেবার ফেয়ার চালু করার দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলন বায়রার সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্টের মহাসচিব মোস্তফা মাহমুদ সহ বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।