বাংলাদেশের চেয়ে যেখানে এগিয়ে আফগানিস্তান
ফর্ম ভালো। কন্ডিশন এবং মাঠের সঙ্গে পরিচয়-সখ্য সবকিছুই তাদের একটু বাড়তি। দলটা আফগানিস্তান।
মাঠের বাইরে বিতর্ক। সাম্প্রতিক ফল চরম বাজে। অধিনায়ক অনাগ্রহী। বোর্ডও কিছুটা এলোমেলো। দলটা বাংলাদেশ।
দু’দল ঠিক এই পরিস্থিতিতে বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হচ্ছে। ভেন্যু শারজাহ। খেলা হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের। আফগানিস্তান এই সিরিজের হোস্ট। বাংলাদেশ মেহমান। সিরিজ শুরুর আগে উপরে বর্ণিত এই পরিস্থিতির সার্বিক ব্যাখ্যা দাড় করালে আপনি নিশ্চিন্তে বলতে পারেন- অ্যাডভান্টেজ আফগানিস্তান!
বিস্তারিত সেই ব্যাখ্যা শুনি।
আফগানিস্তান এই সিরিজে খেলতে নেমেছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর বিশাল আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে। ক্রিকেট ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো তারা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে ওয়ানডে সিরিজে হারিয়েছে। সেটাও আবার খুব বেশিদিন আগে নয়। মাত্রই এই সেপ্টেম্বরে। তাও আবার কোথায়, এই শারজায়! দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো সম্ভব হলে বাংলাদেশকে কেন নয়- এমন আত্মবিশ্বাস নিয়ে বুধবার প্রথম ওয়ানডেতে টস করতে নামছে আফগানিস্তান।
ঠিক অন্যদিকে বাংলাদেশ শেষ দুটি টেস্ট সিরিজে যে দুর্বল বা ভাঙ্গাচোরা পারফরমেন্স দেখিয়েছে তাতে আত্মবিশ্বাস খুঁজে পাওয়াটাই এখন এই দলের জন্য সবচেয়ে বড় সঙ্কট। ভারতের মাটিতে ধবল ধোলাইয়ের পর নিজে মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও বাংলাদেশ খেলল নেতিয়ে পড়া ক্রিকেট। টানা চার ম্যাচে ন্যূনতম প্রতিরোধ নেই। লড়াই নেই। একপেশে ভঙ্গিতে বড় ব্যবধানে হার। এক থেকে ছয় নম্বর পর্যন্ত ব্যাটারদের একযোগে ফর্মহীন হয়ে পড়া একটা দলের কাছ থেকে আফগান সিরিজে বড়কিছু মিলবে কি-সেই প্রশ্নটা উঠতেই পারে।
শারজার মাটি আফগানিস্তানের জন্য হাতের তালুর মতো চেনা। শারজার নামের সঙ্গে বাংলাদেশ অপরিচিত না হলেও এই মাঠে ওয়ানডে খেলতে নামছে ২৯ বছর পর! এই হিসেব জানাচ্ছে বর্তমান বাংলাদেশ দলের কোনো খেলোয়াড়ের এই মাঠে ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা নেই! শেষবার এই ভেন্যুতে বাংলাদেশ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিল ২৯ বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। তখন বর্তমান বাংলাদেশ দলের অনেক খেলোয়াড়ের জন্মও হয়নি! হ্যাঁ, বলতে পারেন এই মাঠে তো এই দলের টি- টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে ঠিকই। তা রয়েছে। তবে সেখানেও বিপত্তি আবার কম নয়। শেষবার এই মাঠে বাংলাদেশ যে টি- টোয়েন্টি খেলেছে তাতে প্রতিপক্ষ ছিল আফগানিস্তান। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন আপনি, সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল। ২০২২ সালের এশিয়া কাপের সেই ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আফগানিস্তান ৭ উইকেটের জয় পেয়েছিল।
আর তাই শুধু বর্তমান নয়, অতীতের সুখস্মৃতিকেও সঙ্গী করে এবারের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের মুখোমুখি হচ্ছে আফগানিস্তান।
তাহলে কোথাও কি বাংলাদেশ এগিয়ে নেই? আছে। দু’দলের মুখোমুখি ১৬ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জিতেছে ১০ ম্যাচে আফগানিস্তান ৬টিতে।
এটুকুতেই এগিয়ে থাকার সুখ নিয়ে শারজায় বুধবার ওয়ানডে সিরিজে লড়তে নামছে বাংলাদেশ। সিরিজ জেতার জন্য এটুকু এগিয়ে থাকা কতটুকু এগিয়ে নেবে বাংলাদেশকে।
১১ নভেম্বরের জন্য উত্তরটা তোলা রইলো। সেদিনই সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচ। শুরুর দুটি লড়াই ৬ ও ৯ নভেম্বর।