বিশ্ব ক্রিকেটে রাজত্বকারী দলগুলোর কথা বললে ভারতের নাম থাকবে ওপরের সারিতে। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের রানার্স-আপ,২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ভারত। বড় কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে গেলে জেতার জন্যই অংশ নেয় দলটি। তবে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের থেকে পাকিস্তানকেই বেশি এগিয়ে রাখছেন ভারতের সাবেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার-বিশ্লেষক সুনীল গাভাস্কার।
টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে স্টার স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গাভাস্কার বেছে নিয়েছেন সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন দলকে।
গাভাস্কারের মতে স্বাগতিক হওয়ার কারণে টুর্নামেন্টে পাকিস্তান সবার থেকে এগিয়ে থাকবে। নিজেদের মাঠে পাকিস্তানকে হারানো যেকোনো দলের জন্যই যথেষ্ট কঠিন হবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আয়োজক দল হিসেবে পাকিস্তানকে ফেভারিট হিসেবে বিবেচনা করা উচিত, কারণ প্রতিপক্ষের মাঠে খেলা সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং।’
২০২৩ সালে ভারতে আয়োজিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের পারফরম্যান্সের উদাহরণ টানেন গাভাস্কার। তিনি বলেন, ‘স্বাগতিক দল সব সময়ই এগিয়ে থাকে। ২০২৩ বিশ্বকাপে নিজেদের মাঠে ভারত কতটা দুর্দান্ত খেলেছিল। যদিও তারা ফাইনালে হেরে গিয়েছিল, তবুও তার আগে টানা দশ ম্যাচ জিতেছিল স্বাগতিক ভারত। এ কারণেই আমি পাকিস্তানকে সবার থেকে এগিয়ে রাখবো।’
১৯ নভেম্বর পাকিস্তানে শুরু হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসর। শুধুমাত্র ভারতের ম্যাচগুলো আয়োজিত হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে আসর শুরু করবে ভারত। ২৩ ফেব্রুয়ারি মুখোমুখি হবে ভারত পাকিস্তান।
মাত্র ৯১ রান নিয়েও বাংলাদেশ দল এমন লড়াই করবে কে জানতো? কিন্তু এটাও তো ঠিক, লো স্কোরিং ম্যাচ অনেক সময়ই ছড়িয়ে দেয় উত্তেজনা! এই রান নিয়েই অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলকে প্রায় হারিয়েই দিচ্ছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। শেষ অব্দি সমীকরণ মিলল না।
আজ সোমবার আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল ২ উইকেটে হাল অজি মেয়েদের কাছে। সমীকরণ এমন ছিল-শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার জিততে চাই ১ রান। বাংলাদেশের ২ উইকেট। সেখান থেকে অবশ্য ম্যাচ বের করা কঠিনই। লেগবাই থেকে ওভারের দ্বিতীয় বলেই জয়সূচক রান তুলে অস্ট্রেলিয়া। ৪ বল বাকি থাকতেই হার মানে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দল।
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বিশ্বকাপের ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট তুলে ৯ উইকেটে ৯২। জবাবে নেমে অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেট হারিয়ে ও ৪৯.২ ওভারে পা রাখে জয়ের বন্দরে।
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের হয়ে যা একটু লড়েন সাতে নামা আফিয়া আসিমা। রানআউট হওয়ার আগে করেন ৩৪ বলে ২৯ রান। সুমাইয়া আক্তার ১৩ বলে ১৩ রান তুলে ফেরেন।
বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট তুলেন জান্নাতুল মাওয়া। নিশিতা আক্তার, হাবিবা ইসলাম এবং আনিসা আক্তার নেন একটি করে উইকেট।
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বুধবার ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে নেপালকে ৫ উইকেটে হারিয়ে আজ হারল দেখল মেয়েরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ৯১/৯ (আফিয়া ২৯, সুমাইয়া ১৩; উইলিয়ামসন ২/১২, ব্রে ২/১৮)।
অস্ট্রেলিয়া: ১৯.২ ওভারে ৯২/৮ (হ্যামিল্টন ৩০, পেলে ১৬; মাওয়া ৩/১৫, হাবিবা ১/১২, সোবা ১/১৮)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ২ উইকেটে জয়ী।
এই সিরিজটা মহা গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের জন্য। সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করতে সিরিজটা জেতার স্বপ্ন ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির চোখে। কিন্তু সেই মিশনের শুরুতেই হোঁচট। সিরিজ শুরুর লড়াইয়ে চেনা গেল না বাংলাদেশের মেয়েদের।
আইসিসি উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় তলানির দিকে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ নেই। তারপরও দল হিসেবে তারা যে দুর্দান্ত দেখিয়ে দিল। ৯ উইকেটের জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করল উইন্ডিজের মেয়েরা।
সোমবার ভোরে সেন্ট কিটসে শেষ হওয়া ম্যাচে বাংলাদেশকে স্বাগতিকরা আটকে রাখে ১৯৮ রানে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতে যায় ১১০ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখেই।
এই সিরিজে ৩টি ওয়ানডে। যেখানে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলতে ২টি জয় চাই বাংলাদেশের। কিন্তু প্রথমেই হেরে লড়াইটা কঠিন করে দিল মেয়েরা। ২০২৫ নারী বিশ্বকাপ সরাসরি জায়গা করে নিতে পরের দুই ওয়ানডেতে উইন্ডিজ মেয়েদের হারাতে হবে বাংলাদেশকে। অবশ্য সমীকরণ বলছে সুযোগ থাকবে একটি ম্যাচ জিতলেও। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে বুধবার।
এদিন ব্যাটারদের ব্যর্থতাতেই সর্বনাশ। ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে মাত্র ১৯৮ রান। যা তুলতে বেগ পায়নি ক্যারিবীয় মেয়েরা। দুই ওপেনার হিলি ম্যাথুস ও কিয়ানা জোসেপ মিলে তুলেন ১৬৩ রান। কিয়ানা৬ চার ৪ ছক্কায় ৭৯ বলে খেলেন ৭০। অধিনায়ক ম্যাথুস ৯৩ বলে ১০৪ রান।
এর আগে ওপেনার ফারজানা হক ১০ রান করে আউট। তবে ওপেনার মুরশিদা খাতুন ৫৩ বলে ৪০ রান করেন। তিনে নামা শারমিন আক্তার দল ৭০ বলে ৪২ রান তুলে ফেরেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ১৯৮/৯ (ফারজানা ১০, মুর্শিদা ৪০, শারমিন ৪২, নিগার ১৪, সোবহানা ৩৫, স্বর্ণা ২৯, রাবেয়া ১, নাহিদা ৯, সুলতানা ২, মারুফা ৫*; ডটিন ১০-০-৪০-৩, ফ্রেজার ৫-০-১৬-০, গ্লাসগো ২-০-৯-০, অ্যালেইন ৫-০-২২-২, ফ্লেচার ১০-১-৩২-১, ম্যাথুস ১০-০-৪১-২, রামহারাক ৮-১-৩৭-০)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩১.৪ ওভারে ২০১/১ (ম্যাথুস ১০৪*, জোসেফ ৭০, ক্যাম্পবেল ১৪*; মারুফা ৬-১-২০-০, সুলতানা ৪-০-২৯-০, মেঘলা ৩-০-৩৩-০, নাহিদা ৭-০-৪২-০, রাবেয়া ৭.৪-০-৩৮-১, স্বর্ণা ২-০-১৮-০, সোবহানা ২-০-১৭-০)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ম্যাচসেরা: হিলি ম্যাথুস।
আলোচনাতেই থাকছেন তামিম ইকবাল। মেজাজ হারিয়ে শিরোনামে আসছেন নিয়মিত। এবারের বিপিএলে তো প্রায় প্রতি ম্যাচেই দেখা যাচ্ছে এমন দৃশ্য। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচে অ্যালেক্স হেলসের সঙ্গে ঝগড়ার ব্যাপারটা নিয়ে সরগরম এখনো চারপাশ। এরপর ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে সাব্বির আহমেদের সঙ্গেও ঝামেলা হয়েছি।। এবার ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক তামিম জড়ালেন নতুন বিতর্কে!
গতকাল রোববার চট্টগ্রামের মাঠে চিটাগাং কিংসের বিপক্ষে ওপেনার ডেভিড মালানের সঙ্গে তার কিছু একটা হয়েছে দেখা গেল। তার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে আউট হন তামিম। এরপর তামিম কিছু একটা বলেন। আবার সতীর্থ মালানকেও কিছু বলতে দেখা যায়।
কী হয়েছিল বরিশালের এই দুই ক্রিকেটারের? এনিয়ে অনেকেই যখন কথা বলছেন তখন তামিম জানালেন বিস্তারিত। আজ সোমবার এনিয়ে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন তিনি। তার অফিসিয়াল ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাস তুলে ধরা হলো এখানে-
‘অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, মাঠে ডাভিড মালানের সঙ্গে কিছু হয়েছিল কিনা। এটা নিয়ে নাকি অনেক আলোচনা হচ্ছে। অথচ আমার সঙ্গে মালানের কিছুই হয়নি। মালান তো ওভাবে জবাব দিচ্ছিল প্রতিপক্ষের একজনকে!
মাঠে দুই ব্যাটসম্যানের ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাশা প্রকাশ করাও স্বাভাবিক। আমি রান আউট হওয়ার পরই মালান হাতের ইশারায় ‘সরি’ বলেছে। আমি সেদিকে তাকিয়ে মাঠের বাইরে চলে যাই। তার সঙ্গে কোনো কথাই হয়নি। কাছেই থাকা প্রতিপক্ষের একজন ফিল্ডার তখন মালানকে একটা কথা বলেছে, যা তার ভালো লাগেনি। মালান সেই ফিল্ডারকেই জবাব দিচ্ছিল, তার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল। অথচ সেটাকেই অনেকে বানিয়ে ফেলেছে, আমার সঙ্গে নাকি মালানের ঝামেলা হয়েছে!
এরকম অনেক সময়ই অনেকে টিভিতে দু-একটি দৃশ্য দেখে নানা রকম ধারণা করে ফেলেন। গত কয়েক দিনে আমাকে নিয়েও এরকম হয়েছে। কিন্তু কোনো ঘটনা তো হুট করে হয় না। এটার পেছনেও অনেক ঘটনা থাকে। মাঠে এরকম অনেক কিছুই হয়, যা টিভিতে পুরোপুরি ফুটে ওঠে না এবং সেটা উচিতও নয়। কিন্তু টিভিতে দু-একটি দৃশ্য দেখেই চূড়ান্ত ধারণা নেওয়া উচিত নয়। যাদের নিয়ে ঘটনা, যারা মাঠে থাকেন, তারা সবকিছু জানেন। আজকের উদাহরণ দিয়েই আবার বলছি, টিভিতে এক-দুই ঝলক দেখেই সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়া উচিত নয়।’