জাল সনদধারীকে চাকরিচ্যুত করাসহ ৫ দাবি নিয়োগ বঞ্চিতদের

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা | 2024-10-20 14:21:18

জাল সনদধারী ৬০ হাজার শিক্ষকদের চাকুরিচ্যুত করে এনটিআরসির নিবন্ধন পরীক্ষায় পাশ করা শিক্ষকদের নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন বঞ্চিতরা।

রোববার (২০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নিয়োগসহ পাঁচ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এনটিআরসিএ নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফোরাম।

তাদের দাবিগুলো হলো-  

১. ১ থেকে ১২ তম সকল নিয়োগ বঞ্চিত সনদধারীরা যে বয়সে নিবন্ধন সনদ অর্জন করেছে সেই বয়স অনুযায়ী শর্তহীনভাবে সরাসরি নিয়োগ কার্যকর করতে হবে।

২. অনতিবিলম্বে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

৩. ১ থেকে ১২ তমদের জন্য মেরিট অনুযায়ী পৃথক ডাটাবেজ তৈরি ও সংরক্ষণ করতে হবে।

৪. নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত অন্যদের পরীক্ষা নেওয়া ও পরবর্তী ব্যাচের নিয়োগ বন্ধ রাখতে হবে।

৫. ৬০ হাজার জাল সনদধারীদের চিহ্নিত করে চাকরিচ্যুত করা ও তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর দাবি নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহেদ উদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে বঞ্চিত শিক্ষকেরা সাক্ষাৎ করেন বলে জানান। সেখানে শিক্ষা উপদেষ্টা তাদের নিয়োগে মৌখিক আশ্বাসও দেন বলে জানান তারা। তারা বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে জানতে পারি আমাদের আবেদনটি নিয়োগ জটিলতা নিরসনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আমরা এখনো পর্যন্ত কোন নির্দিষ্ট তথ্য জানতে পারি নাই। এজন্য আমরা আইন উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে অভিমুখে লংমার্চ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। 

দুপুর ১২টার পরে শিক্ষকেরা আইন মন্ত্রণালয় উদ্দেশে লংমার্চের জন্য প্রেসক্লাবে সামনে থেকে রওনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিলেও পুলিশের অনুরোধে তারা আবার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের সেখানে অবস্থান করতে দেখা যায়।

শিক্ষকেরা জানান, আমরা ভেবেছিলাম এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের সাথে হওয়া সকল বৈষম্য দূর করে আমাদের নিয়োগ কার্যকর করবেন। অথচ আমাদের নিয়োগের কোন আশ্বাস না পেয়ে আমরা বাকরুদ্ধ। গত সরকার আমাদের নিয়োগ বঞ্চিত করেছে। প্রায় তিন বছর ধরে নিয়োগের জন্য আবেদন করেছি, আন্দোলন চলছে, কুটনীতিক তৎপরতা চালাচ্ছি সমাধান আজ পর্যন্ত পায়নি।

তারা জানান, ২০১৬ থেকে আইনের মাধ্যমে নিয়োগের লড়াই চলছে। আইন আমাদের পক্ষে আসে, নিয়োগ হয় না। আবার রিভিউ হয়। জোর করে আমাদের ওপর আইন প্রয়োগ করা হয়। যে পরিপত্রের আওতায় পড়ি না সেই আইনের দোহাই দিয়ে নিয়োগ বঞ্চিত করে রাখার অপকৌশল অবলম্বন করে চলেছে এনটিআরসিএ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখন আমরা জানতে চাই, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের নিয়োগের ব্যাপারে কি ভাবছেন?

এনটিআরসিএ নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে নিয়োগ বঞ্চিত হওয়ায় আমরা হতাশ, অসহায়ত্ব, অর্থহীন হয়ে পড়েছি। মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। এনটিআরসিএ বিভিন্ন সময়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত, আইন পরিবর্তন, সংযোজন ও বিয়োজনের ফলে নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছি। নিয়োগ দেওয়ার জন্য আইন পরিবর্তন করা হয়নি। গভর্নিং বডির অনৈতিক লেনদেনের জন্য আমরা নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছি। ২২ হাজার ইনডেক্সধারীদের পুনরায় সিলেক্ট করে। আর ৬০ হাজার জাল সনদধারীদেরকে এখনো চাকরিতে বহাল রেখেছে। তাদের এমপিও করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের নিয়োগ না দেওয়ার একটি বিশেষ কারণ হল, আমাদের রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে জাল সনদ দেওয়া হয়েছে। আমাদের নিয়োগ কার্যকর হলে তাদের এমপিও বাতিল হবে। জাল সনদ ধরা পড়বে। সেই কারণে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা এখনো আমাদের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন এনটিআরসিএ নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফোরামের সভাপতি নীলিমা চক্রবর্তী, সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসরীন সুলতানা, সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক দুলাল মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক গণ-ছামিউল আলম, সুমন দাস, মারুফ মহসিন, নূরুদ্দীন, প্রসেনজিৎ বারোই, আজিম উদ্দিন প্রমুখ।

Related News