রংপুরে ফলের বাজার চড়া: ক্রেতার অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা

, জাতীয়

বর্ণালী জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর | 2024-10-20 22:27:10

রংপুরের বাজারে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী দেশী-বিদেশি ফল ক্রেতা সাধারণের নাগালের বাহিরে। বাজারে প্রবেশ মাত্রই নজর কাড়ে রং বেরঙের বাহারি ফল। ক্রেতাদের অপেক্ষায় পসরা সাজিয়ে বসে আছেন ফল ব্যবসায়ীরা। টসটসে টাটকা ফলের সমারোহ দেখে খেতে রুচি করলেও দাম শুনে হাত সরিয়ে নিচ্ছেন নিম্ন-মধ্যবিত্তরা৷

একদিকে সাধ্যের বাহিরে ফল কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতা সাধারণদের। অপরদিকে চড়া দামে বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কম থাকায় হতাশায় ফল ব্যবসায়ীরা।


রোববার (২০ অক্টোবর) রংপুর নগরীর সিটি বাজার ও জিলা স্কুল সংলগ্ন ফলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি দোকানে শোভা পাচ্ছে দেশী- বিদেশি বাহারি ফল। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশীয় ও বিদেশি ফলের দাম পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। হাতবদলে বেড়েছে দেশীয় ফলের দাম, অন্যদিকে আমদানি কম থাকায় দাম নাগালের বাহিরে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

দেশীয় ফলের তালিকায় জলপাই বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে, দেশী মালটা ৮০ টাকা, পেয়ারা ৮০ টাকা, পেঁপে পিস প্রতি ৬০-১২০ টাকা, জাম্বুরা আকারভেদে ৬০-১০০ টাকা, আনারস পিস প্রতি ১০০ টাকা,আমলকী ৩০০ টাকা,আমড়া ৮০ টাকা।

বিদেশি ফলের তালিকায় ড্রাগন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা, গালা আপেল ৩৫০ টাকা, ঘুঘু আপেল ৩২০টাকা, মাল্টা ৩২০ টাকা, আনার ৭০০-৬২০ টাকা, কমলা ৪০০ টাকা, আঙ্গুর ৬০০ টাকা, লাল আঙ্গুর ৪০০টাকা।

ফল কিনতে আসা ক্রেতা রাশেদুল ইসলাম বলেন, বাচ্চাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণে ফল কিনতেই হয়। বাজারে আগুন দাম ১ কেজি কিনতে পারি না তাই ২-৩ পিস করে নেয়া। আপেল, কমলা,আঙ্গুর এগুলোতে হাত দেয়াই যায় না, তবে দেশীয় ফলের দামও অনেক বেশি। আমরা মধ্যবিত্ত মানুষ আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সমন্বয় করা খুব কঠিন হয়। ফল যেন বিলাসবহুল পণ্য হয়ে গেছে।

ফলের বাড়তি দাম নিয়ে ব্যবসায়ী সুমন বলেন, আগে মালটার কার্টন ছিল ৩০০০ এখন ৪২০০ টাকা। গত সপ্তাহে লাল আঙুর বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা। চাহিদার অর্ধেক আমদানি হচ্ছে এজন্য দাম বাড়তি। ক্রেতাদের উপস্থিতি কম থাকায় আমাদের বেচাকেনা অনেক কমে গেছে। ক্রেতা কম থাকায় পচনশীল ফল দোকানে মজুদ করতেই ভয় হয়।


ব্যবসায়ী জীবন বলেন, আগে চাহিদা অনুযায়ী বেশি ক্যারেট ফল মজুদ রাখতাম। এখন দাম বেশি, ক্রেতাদের চাহিদা কম, ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একদিকে পাইকারি বাজার থেকে দাম বেশি। কাঁচামাল হওয়ায় পচে গিয়ে ফল নষ্ট হয়ে ক্ষতিও বেশি। এতে করে আমাদের বেচাকেনা কম হচ্ছে আবার লোকসান হচ্ছে।

দেশীয় ফলের আড়তদার বাচ্চু মোল্লা বলেন, আগে দৈনিক ৫০-৬০ ক্যারেট ফল বিক্রি হতো এখন বিক্রি হয় ১০-১৫ ক্যারেট। দুই-তিন মাস আগেও দৈনিক ৮-১০ লাখ টাকার ফল বিক্রি করে বেশ ভালো ব্যবসা হতো। বাহির দেশ থেকে ফল আসে ডিউটির দাম বাড়ার কারণে ফলের দাম বেশি। ব্যাংক থেকেও কোন সহযোগিতা আমরা পাচ্ছি না। আমদানি কম থাকায় বাজারে অস্থিরতা। আমাদের সাথে সাথে খুচরা ব্যবসায়ীদেরও হতাশা।

দেশীয় ফলের আরড়দার ইকবাল হোসেন বলেন, এখন বাগানীদের থেকে হাতবদলের কারণে দেশীয় ফলের দাম বেশি। আমরা বাড়তি দামে কিনি এই দামে খুচরা ব্যবসায়ীরা কিনতে চায় না। বাজারে হাতবদল হলেই দাম বাড়ে, জনগণের খাদ্যের উপর বাজার মনিটরিং করলে খুবই ভালো গরীব মানুষের জন্য ভালো।

Related News