বন্যাত্তোর কৃষক-শ্রমিকদের কর্মসংস্থানে ইটভাটা রক্ষার দাবি

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর | 2024-11-07 15:27:46

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বন্যাসহ জলাবদ্ধতার কারণে এবার জমিতে চাষাবাদ করতে পারেনি কৃষকরা। এতে কর্মসংস্থান হারিয়ে আর্থিক অনটনে কৃষি শ্রমিকরা বিভিন্ন ইটভাটা মালিকের কাছ থেকে দাদন নিয়েছে। এ মুহূর্তে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইটভাটা অভিযান পরিচালনা করে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এ বছর ইটভাটা বন্ধ না করার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঘণ্টাব্যাপী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক-শ্রমিক জনতার ব্যানারে কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্লেকার্ড গলায় ঝুলিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয় বিপুল সংখ্যক কৃষক ও শ্রমিক।

মানববন্ধন শেষে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস বরাবর স্মারক লিপি জমা দেওয়া হয়েছে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) কমলনগর উপজেলা কমিটির সভাপতি আবদুল মোতালেব, সমাজকর্মী ইমরান হোসেন শাকিল ও কৃষক-শ্রমিকদের পক্ষে নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

জেএসডি কমলনগর উপজেলা কমিটির সভাপতি আবদুল মোতালেব বলেন, দীর্ঘদিন কমলনগরে বন্যা ও জলাবদ্ধতায় কৃষিজমিগুলো পানিতে তলিয়ে ছিল। এতে চাষাবাদের সময় শেষ হয়ে যায়। এ কারণে এবার বিস্তির্ণ ফসলি জমিতে চাষাবাদ হয়নি। এর প্রেক্ষিতে অভাব অনটনে পড়ে কৃষি শ্রমিকরা ইটভাটার মালিকদের কাছ থেকে দাদন-ঋণ নিয়েছে। ইতিমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইটভাটায় অভিযান চালাচ্ছে। বিভিন্ন অভিযোগে বন্ধও করে দিচ্ছে। এ অবস্থায় ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেলে কৃষক ও শ্রমিকদের কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে যাবে। এতে দাদন ও ঋণগ্রস্ত হয়ে তারা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এবার ভাটাগুলো বন্ধ না করে কৃষক-শ্রমিকদের সহযোগিতার দাবি জানান তিনি।

সমাজকর্মী ইমরান হোসেন শাকিল বলেন, সমাজকর্মী হিসেবে আমরা আগে ইটভাটা বন্ধে আন্দোলনে নেমেছি। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কারণ বন্যা ও জলাবদ্ধতায় লক্ষ্মীপুরের মানুষ প্রায় ২ মাস পানিবন্দি ছিল। কমলনগরে ভুলুয় নদী এলাকায় প্রায় ৪ মাস জলাবদ্ধতার পানিতে ডুবে ছিল ফসলি জমিগুলো। এ অবস্থায় কৃষকরা আয়-উপার্জনের জন্য ইটভাটা কর্তৃপক্ষ থেকে ঋণ ও দাদন নিয়েছে। এবার প্রশাসন জোরালো অভিযান চালিয়ে ইটভাটা বন্ধ করে দিচ্ছে। কিন্তু গত ১২ বছর আমরা আন্দোলন করেও ইটভাটা বন্ধ করতে পারিনি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কৃষকদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য ইটভাটা কর্মসংস্থান এখন অত্যন্ত প্রয়োজন। এতে এবার ইটভাটা বন্ধ না করতে সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সবার কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

জেলা পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ পাঠান বলেন, মানববন্ধনের বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নেওয়া হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ান বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকায় কতটি ইটভাটা আছে। এরমধ্যে কতটি বৈধ, কতটি অবৈধ তা জানতে হবে। এছাড়া মানববন্ধনে দাবিকৃত ঘটনাটি যদি সত্য হয়। তাহলে মানবিকভাবে ঘটনাটি বিবেচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related News