গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বলা হতো ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক। কিন্তু সেটা আসলে বন্ধুত্বের ছিল না। একটা দল তার গদি রক্ষার জন্য দেশের স্বার্থকে বিকিয়ে দিয়ে তার গদি রক্ষা নিশ্চিত করেছে।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী আমরা ভারতের প্রতিবেশী। বাস্তব সত্য হলো প্রতিবেশী বদলানো যায় না। আমরা সবসময় বলেছি ভারতসহ অনান্য দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক থাকবে। কিন্তু সেই সুসম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক মর্যাদা রক্ষা করে এবং ন্যায্যতার উপর ভিত্তি করে। বলা হতো ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক। কিন্তু সেটা আসলে বন্ধুত্বের ছিল না। একটা দল তার গদি রক্ষার জন্য দেশের স্বার্থকে বিকিয়ে দিয়ে তার গদি রক্ষা নিশ্চিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যু্ত্থান জনগণের রায় হলো, বাংলাদেশকে আর ওই নতজানু অবস্থায় আর পাওয়া যাবে না। সারা বিশ্বকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই বাংলাদেশ আর নতজানু থাকবে না। বাংলাদেশ তার মর্যাদা ও জাতীয় স্বার্থের ভিতর ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে অপরাপর দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবে। নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের সঙ্গেও আমরা ওই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে সুসম্পর্ক করতে চাই। এই সরকারকে আমরা সাধুবাদ জানাবো, তারা অভ্যুত্থানের পর থেকে ভারত সরকারের স্পষ্টভাবে সেটি জানিয়ে দিয়েছে। যার ফলে আমরা দেখছি ভারতীয় মিডিয়ার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিজেপি দলীয় স্বার্থে ফ্যাসিস্টদেরকে পূর্নবাসন করার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা প্রচার করতে চাইছে, বাংলাদেশে নারীরা, সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তাহীন। এগুলো সম্পুর্ণ ভুলতথ্য। তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা সত্য দিয়েই লড়াই করছি। সারাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ দেখছে বাংলাদেশে এরকম কোনো পরিস্থিতি নেই। সবচেয়ে বড় কথা বাংলাদেশ মাথা নত করছেনা কাবু হয়ে যাচ্ছে না। ভারতকে আমরা দেখতে পাচ্ছি তারা ধীরে ধীরে আলোচনার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কুটনৈতিক সম্পর্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আমাদের দিক থেকে এই তৎপরতা চালিয়ে যেতে হবে। এইখানে ন্যায্যতা এবং মর্যাদার ভিত্তিতে ওইখানে আর নতজানু থাকবেনা বাংলাদেশ।
ভারতীয় গণমাধ্যমের অপপ্রচার সম্পর্কে তিনি বলেন, সত্য দিয়ে আমাদের লড়াই করতে হবে। সেখানে দেশের ভেতর ও বাইরে অবস্থানকারী বাংলাদেশীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। অপপ্রচারের বিরুদ্ধে দেশের গণমাধ্যমকে সত্য তুলে ধরতে হবে। অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মভাবে লড়াই করতে হবে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যে গণ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেটির বিচার আমরা দাবি করেছি। একই সঙ্গে ২০২৪ সালে এসে ক্ষমতা রক্ষার জন্য ফ্যাসিস্ট শাসক নিরীহ মানুষদের হত্যা করেছে। এবং সেখানে যেভাবে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে সেই হত্যার বিচার হতে হবে। ন্যায় বিচারই হবে নতুন বাংলাদেশ যাত্রার সবচেয়ে শক্তিশালী দিক। সেখানে কিছুটা ত্রুটিবিচ্যুতি হচ্ছে। যেভাবে মামলা হচ্ছে সেগুলো অনেকটা পুরোনো কায়দায় হচ্ছে। যার কারণে ওই মামলাগুলোর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। ২৪ এর আত্মত্যাগ ও সংগ্রাম যেন বেহাত না হয়, মানুষের আকাঙ্ক্ষার যেন বাস্তবায়ন হয় সেলক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে।