জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহত পরিবারের মূল্যায়ন জরুরি: ঢাবি উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের আন্দোলন সল্প সময়ে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। ছাত্রদের ওপর বিশ্বাস রেখে আপামর জনগণ রাস্তায় নেমে আসায় এই বিপ্লবের সফলতা দ্রুত এসেছে। রাষ্ট্র সংস্কার যেমন জরুরি তেমনিভাবে এ বিপ্লবে যারা শহীদ হয়েছেন বা আহত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।
রোববার (০১ ডিসেম্বর) বিকেলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক মাঠে জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের স্মরণে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এই দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণা ও একাডেমিক কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা আদান-প্রদানে আগামী দিনে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে উঠবে বলে প্রত্যাশা রাখি।
স্মরণসভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সমাজ ও রাজনীতি বিশ্লেষক ড. আব্দুল্লাহ্-আল-মামুন।
তিনি বলেন, মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন না হওয়ায় গত ১৫ বছর সমাজে বৈষম্য তৈরি হয়েছে। রংপুর বিভাগও এই বৈষম্যের শিকার। দেশকে নিয়ে চলা ষড়যন্ত্রের প্রলোভনে পা না দিতে শিক্ষার্থীদেরকে সতর্ক করেন তিনি। যে কোনো সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়ার আগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জুলাই বিপ্লবে আহত নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ড. আব্দুল্লাহ্-আল-মামুন।
স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, জুলাই বিপ্লবে নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন প্রয়োজন। তাদের কথাগুলি সরকারের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হবে। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে শহীদদের আত্মত্যাগের ঘটনার উপর বেরোবিতে শহীদ স্মৃতি কর্নার গড়ে তোলা হবে।
জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের স্মরণে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও বেরোবি ছাত্র উপদেষ্টা ড. মো. ইলিয়াছ প্রামানিক, শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ আব্দুল্লাহ আল তাহের, শহীদ সাজ্জাদ হোসেন, শহীদ মোসলেম উদ্দিন, শহীদ মেরাজুল ইসলাম, শহীদ মানিক মিয়ার স্বজনসহ বেরোবির আহত শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। স্মরণসভা শেষে রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দিবসটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ক্যাম্পাসে একটি গাছের চারা রোপণ করেন ঢাবি উপাচার্য প্রফেসর ড. নিয়াজ আহমদ খান।
এর আগে দুপুরে পীরগঞ্জ উপজেলার জাফরপাড়ার বাবনপুর গ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নিয়াজ আহমেদ খান। এসময় বেরোবি উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টাসহ শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।