শতভাগ আবাসিকীকরণের দাবিতে সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ১০ থেকে থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতীকী অনশন পালনের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের ।
রোববার (৫ জানুয়ারি) বিকাল ৪:৩০ এর দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২০২৩ সেশনের শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমু ।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, শামসুন্নাহার হলের ২০২৩-২০২৪ সেশনের শিক্ষার্থী মোছাঃ মাইশা তাসনিম মৃত্তিকা, ঝর্ণা আক্তার, রোকেয়া হলের ২০২২-২০২৩ সেশনের শিক্ষার্থী সিদরাতুল মুনতাহা ওহী, হাফসা ফাওজিয়া খান সহ আরো অনেক নারী শিক্ষার্থী।
লিখিত বক্তব্যে ইসরাত জাহান ইমু জানান, গত ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা শতভাগ আবাসিকীকরণের দাবিতে উপাচার্য মহোদয়ের কাছে ৭ টি দাবি নিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করি।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, স্মারকলিপিতে উল্লেখিত অধিকাংশ দাবি পূরণ করতেই প্রশাসন এক প্রকার অপারগতা প্রকাশ করে।
তিনি জানান, পরবর্তীতে আবার কোষাধ্যক্ষ মহোদয়ের সাথে শিক্ষার্থীরা সাক্ষাৎ করলে তিনি আমাদেরকে আশ্বস্ত করেন মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় আগামী তিন বছরের মাঝে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন হল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু নতুন হল স্থাপনের আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সিট সংকট সমাধানের কোন অস্থায়ী ব্যবস্থা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া সম্ভব নয় বলে তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন। তারা অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের আবাসিক বৃত্তি বা স্কলারশিপ প্রদানের কথা বললেও কবে স্কলারশিপের অর্থ সহায়তা শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছবে সে সম্পর্কেও আমরা কোন সদুত্তর পাইনি।
তিনি আরো জানান, কোষাধ্যক্ষ মহোদয় স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোন আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় নয়। কোন শিক্ষার্থীকে হলে বৈধ সিট নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাধ্য নয়।
প্রশাসনের এই দায়িত্বহীন বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ইসরাত জাহান ইমু বলেন, নারী শিক্ষার্থীরা আগামীকাল থেকে উপাচার্য মহোদয়ের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতীকি অনশন পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অস্থায়ী আবাসন ও পরবর্তীতে মূল ক্যাম্পাসের ভিতরে নারীদের স্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা এবং অন্যান্য দাবি আদায় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নারীবান্ধব করে তোলার আগ পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, নারী শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত দাবিগুলো হলো:
১. প্রথম বর্ষেই শতভাগ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
২. অবিলম্বে গণরুম বিলুপ্ত করা। অমানবিক ও অস্বাস্থ্যকর গণরুমপ্রথা তুলে নিয়ে পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. নতুন ছাত্রী হল চালু না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন ভবনে বা ক্যাম্পাসের পাশ্ববর্তী এলাকায় বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে ছাত্রীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে দ্রুত প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি প্রদান ও নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার ঘোষণা দিতে হবে।
৪. ছাত্রীদের নতুন হল বাধ্যতামূলকভাবে মূল ক্যাম্পাসের ভেতরেই নির্মাণ করা এবং দ্রুত নির্মাণ কাজ দৃশ্যমান করতে হবে।
৫. অনতিবিলম্বে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক ছাত্রীদের হল কার্ড জমাদানপূর্বক নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত যেকোনো হলে প্রবেশ এবং ডাইনিংসহ অন্যান্য সুবিধা গ্রহণের অনুমতি দিতে হবে।
৬. ক্রমান্বয়ে প্রতিটি হলে ডাবলিং ব্যবস্থা তুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসনের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. নতুন ভবনে স্থানান্তরের মাধ্যমে মৈত্রী এবং বঙ্গমাতা হলকে ধারাবাহিকভাবে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করতে হবে।