‘বাঘা যতীন’ সিনেমার পরিচালক অরুণ রায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ভোররাতে কলকাতার আরজি কর হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচালকের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন একাধিক তারকা।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন অরুণ রায়। এ কারণেই আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় পরিচালককে। বুধবার রাতে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
গেল বছরের সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় কেমো নেওয়ার পর অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন অরুণ রায়। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার সকালে নিজের ফেসবুক পেজে অভিনেতা বিরসা দাশগুপ্ত লিখেছেন, ‘এটা ঠিক করলে না অরুণ দা।’ অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী লেখেন, ‘পরিচালক অরুণ রায় আর নেই। নতুন বছরের দ্বিতীয় সকালে চলে গেলেন সব মায়া ছেড়ে। অরুণদা আমাদের মনের ভিতর থেকে যাবেন সারা জীবন।’
২০১১ সালে ‘এগারো’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন অরুণ রায়। ‘হীরালাল’ দিয়েই দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। তার বানানো শেষ সিনেমা ‘বাঘাযতীন’। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শোবিজ জগতে।
বেশ ক’বছর ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের দাপুটে অভিনেতা প্রবীর মিত্র। তার শারীরিক অবস্থা খুব বেশী ভালো নেই। প্রায় অচল হয়ে গেছেন। এরমধ্যেই আবারও শারীরিক অবস্থার অবনতি হলো অভিনেতার।
বর্তমানে প্রবীর মিত্র হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। খবরটি নিশ্চিত করেছেন অভিনেতার ছেলে সিফাত ইসলাম।
২২ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রবীর মিত্রকে। বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। শরীরে অক্সিজেন স্বল্পতাসহ বেশ কিছু জটিল সমস্যায় ভুগছেন অভিনেতা।
প্রবীর মিত্রের ছোট ছেলে সিফাত বলেন, ‘বাবার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। বয়সের সঙ্গে কিছু শারীরিক জটিলতায় গত ২২ ডিসেম্বর বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শরীরে অক্সিজেন পাচ্ছিল না। এরপর আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখান থেকে কেবিনে দেয়া হয়েছিল। এখন আবার এইচডিইউতে রাখা হয়েছে। তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। খারাপ অবস্থার দিকে। ব্লাড লস হচ্ছে, প্লাটিলেটও কমে যাচ্ছে।’
১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। তার পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন।
স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন প্রবীর মিত্র। পরবর্তীতে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ নামে একটি চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়েছে বড়পর্দায় তার অভিষেক হয়। মূলত এ ছবিতে কাজের ব্যাপারে তার বন্ধু এটিএম শামসুজ্জামানই তাকে সহযোগিতা করেছিলেন। ১৯৪০ সালে পুরনো ঢাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন।
‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’-এর মতো সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় দেখা গেছে প্রবীর মিত্রকে। এছাড়া ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমায় মূখ্য চরিত্রে ছিলেন তিনি। এ কারণেই অনেকে তাকে ঢাকাই সিনেমার ‘রঙিন নবাব’ বলে ডাকেন।
তার অভিনীত অনান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে- জীবন তৃষ্ণা, সীমার, তীর ভাঙা ঢেউ, প্রতিজ্ঞা, অঙ্গার, পুত্রবধূ, নয়নের আলো, চাষীর মেয়ে, দুই পয়সার আলতা, আবদার, নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ ইত্যাদি।
কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। আর ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।
আজ সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় গায়ক, অভিনেতা তাহসানের একটি ছবিসহ বিয়ের খবর রীতিমতো ভাইরাল। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মেকওভার আর্টিস্ট রোজা আহমেদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তিনি।
তবে এ বিষয়ে আজ সকালে তাহসান একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখনো বিয়ে হয়নি। কোনো আনুষ্ঠানিকতাও হয়নি। একটা ঘরোয়া আয়োজন ছিল, সেখানে এ ছবিগুলো তোলা। আজ (শনিবার) সন্ধ্যায় বিস্তারিত জানাব।’
তাহসান ঠিক তার কথা রাখলেন। একটু আগেই ভাইরাল হওয়া ছবির মেয়েটির সঙ্গেই একটি দারুণ সুন্দর ছবি পোস্ট করলেন তিনি। আর তার মাধ্যমেই বিয়ের খবরে নিজেই সিলমোহর দিলেন এই জনপ্রিয় তারকা।
ছবির ক্যাপশনে তাহসান কবিতার আঙ্গিকে লিখেছেন,
‘কোনো এক ছুটির দিনে যখন আমি পিয়ানোতে
আমার সুরে নাচের মুদ্রায়, সেই তুমি কে?
যার ছন্দের মুগ্ধতায় কেটে যাবে বাকিটা জীবন
ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে, সেই তুমি কে?’
মাত্র ২০ মিনিটে এই পোস্টে আড়াই লক্ষ রিঅ্যাকশন পড়েছে। আর পোস্টটি শেয়ার হয়েছে ২৩ হাজার বার, মন্তব্য পড়েছে ৩৫ হাজার। বিয়েতে একেবারে সাদামাটা সাজে দেখা যাচ্ছে তাহসান ও তার নববধূকে। তারা সেজেছেন অফ হোয়াইট আর গোলাগীর মিশেলে ডিজাইন করা শাড়ি আর পাঞ্জাবীতে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রোজা আহমেদ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে ও যুক্তরাষ্ট্রে ব্রাইডাল মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। রোজা নিউইয়র্কে পড়াশোনা করেছেন। পড়াশোনা শেষ করে তিনি কসমেটোলজি লাইসেন্স অর্জন করে পরবর্তী সময়ে নিউইয়র্কের কুইন্সে রোজাস ব্রাইডাল মেকওভার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি একজন উদ্যোক্তা বলেও জানান তাহসান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোজা বেশ জনপ্রিয়, অসংখ্য অনুসারী রয়েছে তার।
প্রায় ১৮ বছর আগে ২০০৬ সালের ৭ আগস্ট বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তাহসান খান ও অভিনেত্রী মিথিলা। এরপর ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই তারা কন্যাসন্তানের মা–বাবা হন। পরে ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন তাহসান।
না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ঢালিউডের প্রখ্যাত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান। তার মৃত্যুতে মিডিয়া অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীসহ মিডিয়া অঙ্গনের অনেকেই।
শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। শনিবার (৪ জানুয়ারি) জোহরের নামাজের পর রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে এই অভিনেত্রীর। এর আগে তাকে নেওয়া হয় এফডিসিতে। সেখানে তার ১ম জানাজা হয়। এরপর নেওয়া হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে।
বিগত কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ছিলেন অঞ্জনা রহমান। অবশেষে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।
উল্লেখ্য, ‘দস্যু বনহুর’ দিয়ে চিত্রজগতে পথচলা শুরু করেন অঞ্জনা। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন সোহেল রানা। ১৯৭৬ সালের এই সিনেমার পর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর একে একে অভিনয় করেছেন তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে। ‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’-এ অভিনয়ের জন্য দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন।
কিংবদন্তী শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গে সদ্য প্রয়াত চিত্রনায়িকা অঞ্জনার বন্ধুত্বের কথা সবারই জানা। বহুবার তাদের দুরন্ত বন্ধুত্বের গল্প গণমাধ্যমে খবর হয়েছে। সর্বশেষ সাবিনা ইয়াসমিন যখন অসুস্থ হয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন, তখন বন্ধুর উদ্দেশে অঞ্জনা লিখেছিলেন এক খোলা চিঠি!
গেল বছরে লেখা সেই খোলা চিঠিতে অঞ্জনা সাবিনা ইয়াসমিনকে সম্বোধন করেছিলেন “প্রাণের বান্ধবী” হিসেবে। লিখেছিলেন দুজনের জীবনের মধুময় স্মৃতির কথা। অঞ্জনা লিখেছিলেন,“আমরা দুটি মানুষ হলেও আমাদের বন্ধুত্বে ছিল একটি প্রাণ।” সর্বোপরি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসার আহ্বান ছিলো অঞ্জনার ওই চিঠিতে!
সুস্থ হয়ে সাবিনা ইয়াসমিন ঠিকই ফিরলেন, কিন্তু চলে গেলেন ‘প্রাণের বান্ধবী’ অঞ্জনা। শুক্রবার দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রয়াত হন তিনি। তার মৃত্যুর খবরে স্বভাবতই ভেঙে পড়েছেন কিংবদন্তী শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন।
আজ (শনিবার) দুপুরে চ্যানেল আই চত্বরে চিত্রনায়িকা অঞ্জনাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। অনুষ্ঠিত হয় নামাজে জানাজাও। যেখানে ‘প্রাণের বান্ধবী’কে শেষ বিদায় জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন কিংবদন্তী শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। অসুস্থতার পর এবারই প্রথম তিনি ক্যামেরার সামনে এলেন, কারণ অঞ্জনা তার এতোটাই আপন ছিলেন।
চ্যানেল আই অনলাইনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অঞ্জনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাবিনা ইয়াসমিন। সেখানেও তিনি অঞ্জনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু ছিলাম’।
সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘অঞ্জনা যে এতো তাড়াতাড়ি এভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবে, একটুও বুঝতে পারিনি। কখনো কোনোদিন তাকে অসুস্থ দেখিনি, শরীর খারাপ দেখিনি, অসুধ খেতে দেখিনি। হঠাৎ করে কী যে হলো, কিছুই বুঝতে পারছি না।’
এসময় স্মৃতিচারণ করে সাবিনা বলেন, ‘আমরা অনেক ছোটবেলার বান্ধবী। আমাদের বয়স যখন ৬/৭ বছর, তখন থেকেই আমরা একে অপরকে চিনি, জানি। একই ওস্তাদের কাছে আমরা ক্লাসিক্যাল শিখতাম, অঞ্জনাওতো শুরুতে গান শিখতো। পরে নৃত্যকে সে বেছে নেয়। শিশু নৃত্যশিল্পী হিসেবে সে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেত, আমি যেতাম গান করতে। সেই থেকে আমাদের বন্ধুত্ব শুরু।’
সাবিনা আরও বলেন, ‘আমরা বড় হওয়ার পরেও একইভাবে আমি গান করতাম, ও তো তখন নায়িকা। একসঙ্গে অনেক ছবিতেও গান করেছি। অনুষ্ঠানেও যেতাম এক সঙ্গে। দেশে বিদেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গেলে আমরা সবার থেকে আলাদা হয়ে যেতাম। একসঙ্গে একই রুমে থাকতাম, একসঙ্গে ঘোরাফেরা করতাম। একদম অভিন্ন হৃদয় ছিলো আমাদের।’