বিদ্রোহীদের দখলে সিরিয়ার আলেপ্পো
সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর অর্ধেকেরও বেশি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিদ্রোহীরা। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্য ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, বিদ্রোহীরা শহরটির অর্ধেকেরও বেশি অংশের দখল নিয়েছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে এটিই সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের বড় পদক্ষেপ।
২০১৬ সালে বিদ্রোহীদের ওই শহর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলো প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারি বাহিনী। এরপর থেকে এটিই বিদ্রোহীদের বড় লড়াই।
বিবিসি জানায়, সবাইকে চমকে দিয়ে আলেপ্পোতে প্রবেশ করে সুন্নি মুসলিমদের নিয়ে গঠিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী। শহরের ভেতরে গাড়িতে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের দেখা যাচ্ছে।
সিরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বিদ্রোহীদের সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ে তাদের কয়েক ডজন সেনা নিহত ও আহত হয়েছে।
বিদ্রোহীরা আলেপ্পোতে প্রবেশের পর তাদের বিভিন্ন অবকাঠামো লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার বিমানবাহিনী। ২০১১ সালে সিরিয়ান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
তবে ২০১৫ সালে বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া। সে বছর সিরিয়া লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এরপর বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে যাওয়া এবং রাশিয়া ইউক্রেন নিয়ে ব্যস্ত থাকার সুযোগে বিদ্রোহীরা আবারও তৎপর হয়ে উঠেছেন। তারা ২০১৬ সালের পর প্রথমবারের মতো আলেপ্পোতে প্রবেশ করেছেন। অপরদিকে সিরিয়ার সরকার তাদের সেনাদের প্রত্যাহার করে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
শুক্রবার বিদ্রোহীদের সাথে যোগসূত্র আছে এমন চ্যানেলে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে: “আমাদের বাহিনী আলেপ্পো শহরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে”।
বিবিসি নিশ্চিত করে জানায়, ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে আলেপ্পো শহরের কেন্দ্র থেকে সাত কিলোমিটারের মধ্যে একটি রাস্তায় সশস্ত্র ব্যক্তিরা দৌড়াচ্ছে।
তবে দেশটির সরকার বলছে যে অতিরিক্ত বাহিনী আলেপ্পোতে পৌঁছেছে এবং তারা বিদ্রোহীদের তাড়িয়ে দিচ্ছে।
এদিকে উত্তেজনার মধ্যে আলেপ্পো বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।