সাহায্যপ্রার্থী যখন দোজখের আগুন চায়

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভিক্ষা বৃত্তি ইসলাম পছন্দ করে না, ছবি:  সংগৃহীত

ভিক্ষা বৃত্তি ইসলাম পছন্দ করে না, ছবি: সংগৃহীত

আমাদের আশপাশে এমন বহু মানুষ রয়েছে, যারা বাস্তবেই অতিদরিদ্র, তাদের সাহায্য করা সবার নৈতিক দায়িত্ব। আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির আশায় তাদের পাশে দাঁড়ালে মহান আল্লাহর রহমত পাওয়া যাবে। কিন্তু কিছু মানুষ এমন আছে, যারা বাস্তবে অভাবী নয়, বরং অভাবে ভান করে অর্থ সংগ্রহ করা তাদের পেশা।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্যমতে, এই ভিক্ষা বাণিজ্য করে রাজধানীসহ সারা দেশে বিভিন্ন শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে। যে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতি মাসে শত শত কোটি টাকার ভিক্ষা বাণিজ্য করা হয়।

বিজ্ঞাপন

কষ্টের বিষয় হলো, অধিক পরিমাণে ভিক্ষা পাওয়ার জন্য অনেকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় অঙ্গহানির মাধ্যমে বিকলাঙ্গ হওয়ার অভিযোগও পাওয়া যায়। আবার অনেকে শিশুদের বিকলাঙ্গ করছে বলেও বিভিন্ন পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে, যা জঘন্য অপরাধ।

পবিত্র হাদিস শরিফের তথ্যমতে, পরচুলা ব্যবহার, ভ্রু উপড়ে ফেলা কিংবা শরীরে উল্কি অঙ্কনকে অভিসম্পাত করা হয়েছে, সেখানে সরাসরি অঙ্গ কেটে ফেলা যে কত জঘন্য অপরাধ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বিজ্ঞাপন

অনেকে আবার অঙ্গহানি না করলেও দরিদ্রের বেশ ধারণ করে মানুষের কাছে হাত পেতে বেড়ায়। অথচ প্রকৃত অভাবি না হয়েও মানুষের কাছে অভাবের কথা বলে বেড়ানো, হাত পাতা জঘন্য অপরাধ। একান্ত বিপদে না পড়ে শুধু সম্পদ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কারো কাছে চাইলে, তা জাহান্নামের আগুন চাওয়ার নামান্তর।

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অমুখাপেক্ষী হওয়া সত্ত্বেও সম্পদ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে অন্যের কাছে কিছু চায়, সে অধিক দোজখের আগুন চায়।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১৬২৯

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি পর্যাপ্ত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও ভিক্ষা করে, সে কেয়ামতের দিন তার মুখমণ্ডলে অসংখ্য জখম, নখের আঁচড় ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উপস্থিত হবে। কেউ জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! সম্পদশালী কে? তিনি বললেন, পঞ্চাশ দিরহাম অথবা এ মূল্যের স্বর্ণ (যার আছে)। -সুনানে আবু দাউদ : ১৬২৬

তবে কেউ যদি সত্যিকার অর্থেই বিপদে পড়ে যায়, তার কথা ভিন্ন। নবী কারিম (সা.) এমন লোকদের খুঁজে বের করে সাহায্য করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে সে মিসকিন নয়, যাকে এক লোকমা, দুই লোকমা একটি খেজুর বা দুটি খেজুর দান করা হয়।

সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তাহলে মিসকিন কারা? তিনি বলেন, যার কাছে এই পরিমাণ সম্পদ নেই, যা দিয়ে সে নিজের প্রয়োজন মেটাতে পারে আর তার অবস্থা কারো জানা নেই যে তাকে সদকা দেওয়া যেতে পারে, আর না সে লোকের নিকট চেয়ে বেড়ায়। -মুয়াত্তা মালেক : ১৬৫৫