কচুক্ষেতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়িতে আগুন, গুলিবিদ্ধ ২
জাতীয়
বকেয়া বেতনের দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মিরপুরের কচুক্ষেত এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি এবং পুলিশের লেগুনায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় আল আমিন ও রুমা বেগম নামে দুই শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, ‘কচুক্ষেত এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে এবং পুলিশের একটি লেগুনায় আগুনের ঘটনা আছে। গাড়ি দুটির আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস।’
মিরপুর-১৪ নম্বর এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলন চলাকালে একজন বহিরাগত ব্যক্তি এ আগুন দেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
জানা গেছে, বেতন ভাতার দাবিতে ডায়না নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় নামেন। এ সময় পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এর এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের দুটি টহল গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ডায়না গার্মেন্টসের শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে মিরপুর ১৪ নম্বর কচুক্ষেত সড়কে বিক্ষোভ করে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনী শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করলে তাদের ওপর ইটপাটকেল ছোঁড়া হয়। আত্মরক্ষায় পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
এসময় সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেন শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থানে যায়। পুরো এলাকা বন্ধ করে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পরিস্থিতি এখনো থমথমে।
সিলেটের বিশ্বনাথে বাবার মৃত্যুসংবাদ মসজিদের মাইকে প্রচার করতে বাধা দেওয়ায় মামলা করেছে ছেলে। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাতে উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের তেঘরি গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে সাজ্জাদুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় একই গ্রামের নুরুল হকসহ ১৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলা দায়েরের পর পুলিশ বুধবার উপজেলার রামপাশা বাজার থেকে ১১ নং আসামি মঞ্জুল হককে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত মঞ্জুল উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের তেঘরি গ্রামের মৃত জাবিদ আলীর ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুবেল মিয়া।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১২ অক্টোবর সকাল সোয়া ৭টায় মারা যান খাজাঞ্চি ইউনিয়নের তেঘরি গ্রামের মো. চাঁন মিয়া। মারা যাওয়ার পর সকাল ৮টায় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়। কেন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হলো জানতে চেয়ে নুরুল হকসহ কয়েকজন তেঘরি গ্রামের দুটি মসজিদের মাইক বন্ধ করে দেন।
তাছাড়াও ভূবন শাহ'র মাজার থেকে তেঘরি গ্রামের রাস্তায় বিবাদীরা হাতে দা ও বাঁশের লাঠি নিয়ে মৃত চাঁন মিয়ার আত্মীয় স্বজনকে তার বাড়িতে আসতে বাধা দেয়। এমন কি ইমামকে জানাজায় আসতে দেয়নি।
তেঘরি পুরাতন জামে মসজিদের ইমাম ফারহান আহমদ বলেন, ঘটনার দিন সকালে আমাকে একটা শিশু এসে মৃত্যুর সংবাদ দেয়। পরে সকাল ৮টায় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়েছি। তখন কেউ বাধা দেননি। এছাড়া আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার কারণে জানাজার নামাজে যেতে পারিনি।
মামলায় অভিযুক্ত শফিকুল হক ঘটনাটি মিথ্যা দাবি করে বলেন, মসজিদের জায়গা নিয়ে চাঁন মিয়ার পরিবারের সাথে মসজিদ পঞ্চায়েতের বিরোধ রয়েছে। তাই হয়রারি করতে মিথ্যা মামলা করছে।
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুবেল মিয়া বলেন, একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি। তবে পূর্ব কোনো বিরোধ ছিল কি না জানা নেই।
পাবনায় স্বস্তি মিলেছে কাঁচামরিচ ও সবজির বাজারে। সরবরাহ বাড়ায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দাম আড়াইগুণ কমে প্রতি কেজি বাজারদর দাঁড়িয়েছে ১০০ টাকার মধ্যে। শীতকালীন অন্যান্য সবজি প্রতি কেজিতে দাম কমেছে ১০-১৫ টাকা। এতে কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। তবে পেঁয়াজের অতিরিক্ত দামে অসন্তোষ ক্রেতাদের।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকালে পাবনার বড় বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
বিক্রেতারা জানান, মাঝে কিছু সময় কাঁচামরিচ ও সবজির বাজার ব্যাপক অস্থিতিশীল ছিল। তবে এখন কাঁচাবাজারে অনেকটা স্বস্তি হয়েছে। চাষিদের মরিচ ব্যাপক হারে বাজারে আসছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় চাহিদা মিটছে। এর ফলে ৩৫০ টাকার মরিচ এখন ১০০ টাকায় নেমেছে। গতকাল কাঁচামরিচের দাম ছিল ৮০ টাকা কেজি। আজ সরবরাহ একটু কম থাকায় ১০০ থেকে ১১০ টাকা। সবজির দামও কমেছে। পাবনায় সবজির সবচেয়ে বড় যোগানদাতা ঈশ্বরদী উপজেলা।
দফায় দফায় অতিবৃষ্টির ফলে সেখানকার সবজিতে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। সবজির দাম আরেকটু কম হতো। তবে বছরের শেষের দিকে কৃষকের ঘরে পেঁয়াজ না থাকায় একটু বেশি। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১৩৫-১৪০ টাকা। আমদানি পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা। গত কয়েকদিন ১৫০-১৬০ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে। শীতকালীন সবজি ফুলকপি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়, শিম ১২০-১৩০ টাকা, বেগুন ৫০-৬০ টাকা ও বরবটি ৬০-৭০ টাকা।
এছাড়া পটল ৩৫-৪৫ টাকা, ঝিঙে ৩৫-৪০ টাকা, পেঁপে ২৮-৩০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩৫-৪০ টাকা, লাউ ৩৫-৪০ টাকা, কচুমুখি ৭৫ টাকা ও আলু ১২০-১৩০ টাকা প্রতি কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
মরিচ ও সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও পেঁয়াজ ও মাছ মাংসে হাত দেবার অবস্থা নেই বলছেন ক্রেতারা। ঘুম থেকে উঠে বড় বাজারে বাজার করতে এসেছেন আলিফ রহমান। পেশায় তিনি বেসরকারি চাকরিজীবী, স্কুল পড়ুয়া দুই মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে সংসার তার।
তিনি বলেন, বাজারে কি অবস্থা সেটা সবাই জানেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না দীর্ঘদিন একই বেতনে চাকরি করা আমাদের মতো বেসরকারি চাকরিজীবীদের সংসারের কথা। কাঁচামরিচ সাড়ে তিনশো টাকায় উঠেছিল। দুই মেয়েকে লেখাপড়া করানো, বাসাভাড়া, বিদ্যুৎ ও গ্যাসবিলসহ সব খরচ মিটিয়ে ওই দামে কাঁচামরিচ খাওয়া বিলাসিতা ছিল। এজন্য কাঁচামরিচ খাওয়াই বন্ধ করেছিলাম। কাঁচাবাজার করলেও কাঁচামরিচের দাম শোনাই বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু পরে দেখলাম দাম ব্যাপক কমেছে। এখন আবার কিনে খাচ্ছি।
বাজার করতে আসা শ্রাবণী ইসলাম বলেন, মরিচের দাম বেশ কমেছে। সবজির দামও কিছুটা কমেছে, যদিও এটি বেশি। কিন্তু এখন আবার পেঁয়াজের দাম বেশি। মোট পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় অংশ পাবনায় হয়। অথচ আমাদের ১৫০-১৬০ টাকায় পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। ডিম-মরিচ নিয়ে খেলা শেষ হলো, এখন নেমেছে পেঁয়াজের মাঠে। দেশের বাজারে ব্যবসায়ীদের খেলা শেষ হয় না।
আরেক ক্রেতা আলম খন্দকার বলেন, আলু, মিষ্টিকুমড়া ও ঝিঙে এক কেজি করে এবং ২টি পেঁপে নিয়েছি। বাসা থেকে বলে দিয়েছে এক কেজি পেঁয়াজ আনতে। কিন্তু মাসের শেষ, হাতে টাকা কম। তাই আধা কেজি পেঁয়াজ নিচ্ছি। অন্যান্যগুলোও তো কিনতে হবে। এভাবেই কোনোরকম টেনেটুনে চলতে হচ্ছে।
এব্যাপারে বিক্রেতা বাবু বলেন, স্থানীয় চাষিদের মরিচ আপাতত বাজার সামলাচ্ছে। আমদানি মরিচ আসা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে থেকেই বন্ধ। বাজারে চাষিদের মরিচ আনার ওপর দাম নির্ভর করে। যেমন গতকাল বেশি মরিচ আসায় ৮০ টাকা ছিল, আজ একটু কম। এ জন্য ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি করছি। আমরা যেমন কিনি তেমন বেচি। কম দামে পেলে আমাদের জন্যও ভালো। বিক্রি বেশি হয়।
আরেক ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন জানান, কৃষকের ঘরে এখন পেঁয়াজ নেই, তাই পেঁয়াজের দাম একটু বেশি। দিন পঞ্চাশেকের মধ্যে আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু করবে, তখন দাম কমে আসবে। এছাড়া কাঁচাবাজারে এখন তেমন অস্থিরতা নেই।
রাজধানীর সড়কে বিশৃঙ্খলা, যত্রতত্র পার্কিং ও যাত্রী উঠানামাসহ বিভিন্ন কারনে সৃষ্ঠ দীর্ঘ দিনের যানজটে অতিষ্ঠ নগড়বাসী। ফলে যানজটের নিরসন ঘটিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ’র সবগুলো ট্রাফিক বিভাগ।
এরই ধারাবাহিকতায় যারা সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং আইন অমান্য করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ।
গতকাল বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে এক হাজার ৫০০টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। এ সংক্রান্ত মামলায় ৫৬ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়াও অভিযানকালে ১১৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৭০টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাত-দিন কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ১৫০০টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। এ সংক্রান্তে ৫৬ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়াও অভিযানকালে ১১৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৭০টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ডিএমপির এই কর্মকর্তা।