চট্টগ্রাম ওয়াসার অপসারিত এমডির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চায় ক্যাব
বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের পর চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহকে অপসারণ করেছে সরকার। তবে এতে সন্তুষ্ট নয় তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করা কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটির নেতারা। তারা
অনতিবিলম্বে সদ্য অপসারণ করা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল্লাহর আমলে সংঘটিত সব দুর্নীতি-অনিয়মের তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনা ও তার দেশত্যাগে দ্রুত নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের প্রেসিডেন্ট জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা প্রেসিডিন্ট আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান প্রমুখ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বহু বিতর্কে ও অনিয়মে জড়িত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহকে অপসারণ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ওয়াসার মতো একটি সেবা প্রতিষ্ঠানকে অপশাসন ও দুঃশাসনের কবল থেকে উদ্ধার করলেন। চট্টগ্রামবাসীকে একজন স্বৈরশাসকের দোসর হতে উদ্ধার করে ওয়াসাকে জনগণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার সুযোগ করে দিলেন। বিগত সরকারের আমলে এই বিতর্কিত এমডির বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ থাকলেও সেই অভিযুক্ত এমডিকে স্বপদে বহাল রেখে বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির ব্যবস্থাপনায় তদন্ত টিম তদন্ত কার্য সম্পাদন করে পরে তাকে ক্লিন সনদ দিয়ে জনগণের সঙ্গে তামাশা করেছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই বিগত আওয়ামী সরকার আমলে নিয়োগ পাওয়া সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে। তবে বিগত সরকারের আমলে ৮ দফায় ১৬ বছর অবৈধভাবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে পাওয়া চট্টগ্রাম ওয়াসা এমডি পদ না ছেড়ে নানা চক্রান্তে নিয়োজিত থেকে নির্লজ্জভাবে বেহায়ার মতো চট্টগ্রাম ওয়াসাকে অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যসহ নিজের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। এই সময়ের মধ্যে ১৪ বারের বেশি পানির দাম বাড়িয়ে চট্টগ্রামবাসীর ওপর পানির অতিরিক্ত দামের বোঝা চাপিয়েছেন। এখনো শহরের এক তৃতীয়ংশ মানুষ ওয়াসার পানি পায় না, ময়লা, লবণাক্ত পানি ও ভুতড়ে বিলের যন্ত্রণায় জর্জরিত। ওয়াসার বাস্তবায়ন করা ও চলমান প্রতিটি প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। সর্বশেষ নিজের আত্মীয় স্বজনকে পদোন্নতি দেওয়া, এমনকি নিজের মেয়ের প্রতিষ্ঠানকে সুয়ারেজ প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়াসহ হাজারো অনিয়মে জড়িত। ইতিমধ্যেই তার আত্মীয় ও ওয়াসা কর্মকর্তারা দেশত্যাগ করেছেন। অপসারিত এমডি ফজলুল্লাহ যে কোনো সময় দেশত্যাগ করতে পারেন। তাই অতিদ্রুত তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা না হলে আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী এমপিদের মতো পালিয়ে যাবে।