ঈশ্বরগঞ্জে ইউএনও’র উদ্যোগে উন্মুক্ত পাঠাগার

  • উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইউএনও’র উদ্যোগে উন্মুক্ত পাঠাগার/ছবি: বার্তা২৪.কম

ইউএনও’র উদ্যোগে উন্মুক্ত পাঠাগার/ছবি: বার্তা২৪.কম

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পৃষ্ঠপোষকতায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে একটি উন্মুক্ত পাঠাগার গড়ে উঠেছে। উন্মুক্ত পাঠাগারটি স্থাপন করে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তার পুস্পিতা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১ ডিসেম্বর) পাঠাগারটি আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর থেকেই উপজেলা পরিষদে সেবা নিতে আসা বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষ ভিড় করেন পাঠাগারের বই পড়তে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলা পরিষদের ভেতর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় দ্বিতীয় তলায়। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে সাক্ষাতপ্রার্থীরা এখানে এসে অপেক্ষা করেন উনার সাথে দেখা করতে। এখন থেকে অপেক্ষার সময়টুকু সাক্ষাতপ্রার্থীরা বই পড়ে কাটাতে পারবে। এটা একটি অনন্য দৃষ্টান্তও বটে।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, উন্মুক্ত পাঠাগারের কার্যক্রমের অংশ হিসাবে উপজেলা পরিষদের তিনটি স্থানে সেলফ বসিয়ে করে বই রাখা হয়েছে। এরমধ্যে প্রথমটি সেলফ উপজেলা পরিষদের দর্শনার্থীদের গোলঘরের সামনে, দ্বিতীয় সেলফটি উপজেলা পরিষদের মসজিদের সামনে ও তৃতীয় সেলফটি স্থাপন করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ের সিঁড়ির ঘেঁষে।

বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, অবসর সময় কাটাতে চাওয়া কেউ অথবা কোনো শিশু স্কুল থেকে ফিরছে; বিকেলে খেলা শেষে এখানে এসে বসে তুলে নেয় পছন্দসই কোনো বই, বন্ধুদের সঙ্গে বই নিয়ে মেতে ওঠে আড্ডায়। বৃদ্ধরা পেনশন বা বয়স্ক ভাতার টাকা তুলতে এসেও অবসর সময়টুকু এখানেই কাটান, কোনো একটা বই নিয়ে নাড়াচাড়া করেন। এটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

ঈশ্বরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব আতাউর রহমান বলেন, একটি মহৎ কাজ করেছেন আমাদের ইউএনও। এমন কাজে সমাজের সচেতন লোকজনকে বেশি বেশি এগিয়ে আসা উচিত। যত বেশি বেশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা হবে, মানুষ তত বেশি বইমুখী হবে। এতে সমাজ অনেক সুন্দর হবে। আমাদের ইউএনও খুবই স্মার্ট একজন মানুষ। খুব ভালো মনের মানুষ। তিনি আমাদের উপজেলাকে স্মার্ট ও মডেল একটি উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন। এমন একজন ইউএনও পেয়ে আমরা আটপাড়াবাসী সত্যি আনন্দিত।

উপজেলায় একটি কাজে আসেন আজাহারুল উসলাম নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, অস্থিরতার এই সমাজে এমন কাণ্ড দেখে আমি অভিভুত। একজন ইউএনও যদি এমন একটা লাইব্রেরি করে দিতে পারেন তাহলে আমরা তার ব্যবহার না করা খুবই কষ্টের হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা ছাত্তার পুষ্পিতা বলেন, তথ্য প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষতার এই সময়ে মানুষ ধীরে ধীরে যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই ভার্চুয়াল জগতে ঝুঁকে পড়ছে। কেউ এখন আর আগের মতো বই পড়ে না। সবাই কেমন বইবিমুখ হয়ে পড়ছে। অথচ বই হল জ্ঞানার্জনের ভান্ডার। তাই মানুষকে কিছুটা হলেও যাতে করে বইমুখী করা যায়, মূলত সেই লক্ষ্যেই কিছুসংখ্যক বই দিয়ে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তার বিস্তার ঘটবে।