বিক্ষোভের মুখে প্রিজন ভ্যান থেকে নামাতে পারেনি সাবেক মন্ত্রী রাজ্জাককে
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কলেজ ছাত্র ইমন হত্যা মামলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাকের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে আদালত প্রাঙ্গণে আনা হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে তাকে প্রিজন ভ্যান থেকে নামাতে পারেনি।
আাদালত সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার ইমন হত্যা মামলার ধার্য তারিখে আব্দুর রাজ্জাককে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জেলা কারাগার থেকে বিকেল সাড়ে ৪টায় আদালত প্রাঙ্গণে আনা হয়। এদিকে দুপুরের পর থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা আদালত এলাকায় অবস্থান নিতে শুরু করে। আব্দুর রাজ্জাককে নিয়ে প্রিজন ভ্যান আদালত চত্ত্বরে প্রবেশ করার পর তারা প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে আব্দুর রাজ্জাককে ভ্যান থেকে নামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
আব্দুর রাজ্জাককে বহনকারী প্রিজন ভ্যান বিকেল ৫টার দিকে আদালত এলাকা থেকে বের হওয়ার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ওই ভ্যান লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মারে। তারা আদালতের গেটের সামনে প্রিজন ভ্যান অবরোধ করে। এসময় আব্দুর রাজ্জাকের বিচার দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে যায়। এসময় এক পুলিশ সদস্য এক ছাত্রের গায়ে লাঠি চার্জ করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। আব্দুর রাজ্জাককে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা লাঠিচার্জকারী পুলিশ সদস্যের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে মির্জাপুরের গোড়াই এলাকায় ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে কলেজ ছাত্র ইমন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ আগস্ট ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইমন মারা যান। এ ঘটনায় নিহত ইমনের ভাই সুমন বাদি হয়ে মির্জাপুর থানায় গত ১৯ আগস্ট হত্যা মামলা করেন। এতে আব্দুর রাজ্জাককে প্রধান আসামি করা হয়। গত ১১ নভেম্বর টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করে আব্দুর রাজ্জাককে ইমন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আল আমিন বলেন, আব্দুর রাজ্জাকের বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় এক পুলিশ সদস্য লাঠি চার্জ করেছে। আমরা তার শাস্তি চাই।
রাজ্জাকের আইনজীবী এ কে এম শামীমুল আক্তার জানান, মির্জাপুর আমলি আদালতে ইমন হত্যা মামলায় আব্দুর রাজ্জাকের জামিন আবেদন করা হয়। বিক্ষোভের কারণে তাকে শুনানির সময় আদালতে হাজির করা যায়নি। বাদীপক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল ম্রং জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।