তিন হাজার পাঁচশত টাকায় থাই ভিসার আবেদন করতে পারবেন আগ্রহীরা। ফলে পূর্বে ভিসা সেন্টার এবং এজেন্সির জন্য যে বাড়তি দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকা খরচ হতো, সেটি সাশ্রয় হবে। এছাড়াও আবেদনের দশ দিনের মধ্যেই ই-ভিসা প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশে অবস্থিত থাই দূতাবাস।
ই-ভিসা সম্পর্কিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দূতাবাস জানিয়েছে, আগামী ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশের সরকারি পাসপোর্টধারীরা ই-ভিসার আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া ২ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে বাংলাদেশিদের ই-ভিসা দিবে ঢাকায় নিযুক্ত থাই দূতাবাস।
বিজ্ঞাপন
ভিসার আবেদন জমা দেয়ার পর ১০ কর্মদিবসের মধ্যেই ভিসার স্ট্যাটাস জানানো হবে ফিরতি ই-মেইলে। সব ঠিক থাকলে ই-মেইলেই চলে আসবে ভিসা।
বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা আবেদনে পূর্বের মতোই ব্যাংকে সর্বনিম্ন ৬০ হাজার টাকা জমা রয়েছে দেখাতে হবে। একই সাথে বিগত ৬ মাসে একাউন্টে নিয়মিত লেনদেন থাকতে হবে৷ ভিসার আবেদন ফর্মের সঙ্গে এই একাউন্ট স্টেটমেন্ট প্রদান করতে হবে৷
বিজ্ঞাপন
ঢাকার রয়েল থাই এম্বাসি জানিয়েছে www.thaievisa.go.th ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে হবে এবং ফর্ম পূরণ করে আপলোড করতে হবে। সুতরাং পাসপোর্ট জমা দেয়ার কোনো কারণ নেই।
দূতাবাস জানিয়েছে নতুন ব্যবস্থাপনায় ভিসা ইস্যু হলে সেটি ই-মেইলে পাঠানো হবে। ভিসার কাগজটি প্রিন্ট করে সঙ্গে রাখতে হবে থাইল্যান্ডে প্রবেশের সময় ইমিগ্রেশনের প্রয়োজনে।
বর্তমানে যে ৪টি ভিসা সেন্টার চালু রয়েছে সেগুলো আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে আবেদন নেয়া বন্ধ করে দিবে।
দূতাবাসের দেয়া তথ্যমতে, কিছু কারিগরি কারণে আপাতত ই-ভিসার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভিসা ফি জমা দেয়া যাবে না। ভিসা আবেদন অনলাইনে জমা দেয়ার পর একচি কিউআর স্ক্যান এবং পেমেন্ট ইনফো সামারি প্রদান করা হবে৷ www.combank.net.bd/thaivisa ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভিসা ফি জমা দিতে হবে এবং জমা স্লিপ আপলোড করতে হবে। নগদে বা অন্য কোনো ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো ভিসা ফি জমা নেয়া হবে না।
নিজ নিজ ইমেইল থেকে ভিসা আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনে যেন দূতাবাস যোগাযোগ করতে পারে। দৈনিক ৪০০টির বেশি ভিসা আবেদন গ্রহণ করা হবে না। এবং দূতাবাসের একাউন্টে ভিসা ফি জমা দেয়ার সময় থাকবে তিন ঘণ্টা, সকাল ৯টা থেকে ১২টা।
নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এক সাগর রক্ত পেরিয়ে ১৬ ডিসেম্বর আসে বাঙালি জাতির বীরত্বের অবিস্মরণীয় দিন। ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে ৯৩ হাজার পরাজিত পাকিস্তানি সেনা নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা ও বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ্ খান নিয়াজি। সেদিন থেকেই বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে লাল সবুজ পতাকার স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের।
ত্রিশ লক্ষ মানুষের রক্ত ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আসা এই বিজয়ের উদযাপনও তাই মাত্রাহীন। আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা, গ্রাম থেকে শহর প্রতিটি পাড়া মহল্লা সজ্জিত হয় লাল সবুজে। ভোরে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সেই আয়োজনে যোগ হয় পথনাটক, বিজয় কনসার্ট, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ আরও নানান অনুষ্ঠান।
পথে পথে দেখা মেলে নানা বয়সী, নানা পেশা ও ধর্ম-বর্ণের মানুষের। অনেক ভিন্নতার মধ্যেও সবার মিল এক জায়গায়, লাল-সবুজ পতাকার প্রতি ভালবাসা। বিজয়ের দিনে রাজধানীর চিত্র ছিলো এমনই। এদিন মিরপুর থেকে সংসদ ভবন এলাকা, ফার্মগেট, বাংলামোটর, শাহবাগ, টিএসসি, জাতীয় শহীদ মিনারসহ পুরো দেশেরই ছিলো একই চিত্র।
বিজয়ের দিনে সরকারি ছুটি থাকায় এদিন রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা ছিলো সীমিত। তবে এর চেয়ে বেশি গাড়ি থাকার কোনো প্রয়োজনীয়তা ছিলো বলেও মনে হয়নি। বরং নিজেদের লাল-সবুজে রাঙিয়ে পরিবার নিয়ে হেঁটে বেড়ানোতেই বেশি মনোযোগী দেখা গেছে রাজধানীর বাসিন্দাদের।
বিজয়ের দিনে উপচে পড়া ভিড় জাতীয় জাদুঘরে
নৃতত্ত্ব, চারুকলা, ইতিহাস, প্রকৃতি এবং আধুনিক ও প্রাচীন বিশ্ব-সভ্যতা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি জানার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। দেশের মানুষের ইতিহাস জানার তৃষ্ণা মেটানোর কাজ করে এই প্রতিষ্ঠানটি। তাই বিজয়ের দিনে বিজয়ের ইতিহাস জানতে চাওয়া মানুষের বাড়তি চাপ ছিলো এখানে।
রুনা ও রফিক দম্পতী দুই সন্তানকে নিয়ে আসছেন জাদুঘর প্রদর্শণে। প্রায় ১৫ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে পেয়েছেন টিকিট। অতীতের সঙ্গে ভবিষ্যতের যে মেলবন্ধন সেটাই দেখাতে চান সন্তানদের। জাদুঘরে প্রবেশ করার মুহুর্তে কথা হয় এই দম্পতীর সঙ্গে।
রফিক বার্তা২৪.কমকে বলেন, শুধু স্কুলে পড়াশোনা করা বা স্কুলের বই পড়লেই তো আর সব কিছু জানা যায় না। এই যে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, আমাদের পূর্বপুরুষদের যে ইতিহাস এটাই দেখাতে নিয়ে আসলাম বাচ্চাদের। এমনিতে তো আর সব সময় সুযোগ পাওয়া যায় না পরিবার নিয়ে বের হবার। ঘুরাও হলো আবার বাচ্চারা ইতিহাসও জানলো সে জন্যই এখানে আসা।
ইনকিলাব মঞ্চের আজাদীর ৩ দুয়ার
দেশের মানুষের স্বাধীনতার যে আকাঙ্ক্ষা, সেটা কি শুধুই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে? নাকি তার আগে ১৯৪৭ এর দেশ ভাগের সময়ও সেই একই আকাঙ্ক্ষা ছিলো এই জনপদের মানুষের মনে? তাহলে আমাদের ইতিহাসের পাঠ্যবইয়ে কেন শুধু ১৯৭১ কে কেন্দ্র করে, তার আগের আমাদের পূর্বসূরীদের যে আত্মত্যাগ সেটার সঠিক মূল্যায়ন কে করবে?
এমনই নানা প্রশ্নকে সামনে রেখে ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি সংগঠন শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজন করেছে ছবি ও ডকুমেন্টোরি প্রদর্শনীর। এ নিয়ে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আজাদীর প্রথম দুয়ার ১৯৮৭, আর একাত্তর হল আমাদের মানচিত্র, যেটা আমরা ৩০ লক্ষ মানুষের রক্ত ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে পাইছি। ২০২৪ হল আমাদের অস্তিত্ব। ২৪ এর মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিস্টকে বিদায় করেছি।
তিনি বলেন, ১৯৭১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আমাদের যে ইতিহাস পড়ানো হইছে সেটার বিপরীতে গিয়ে যে আরও একটা অংশ আছে সেটাকে আমরা আজকে ডকুমেন্টেশন আকারে এখানে প্রদর্শণ করবো।
বিদ্রোহী কবির মাজার থেকে রাজুভাস্কর্য
বিজয় মানে দ্রোহ, রক্ত ও প্রতিবাদ। বিদ্রোহ, রক্ত ও প্রতিবাদবিহীন বিজয় আসে না। যেমন আসেনি ৪৭, ৭১ বা ২৪ এ ও। তাই তো এই বিজয়ের দিনে কবিভক্তরা ভুলে যাননি সেই বিদ্রোহের আগুন জ্বালানো কবি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে। এদিন উৎসুক জনতার অনেককেই দেখা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত কবির সমাধি প্রাঙ্গনে ভিড় করতে।
একই চিত্র দেখা গেছে টিএসসির সামনে অবস্থিত রাজু ভাস্কর্য ঘিরে। দিনটি উৎযাপনে এসে অনেকেই ছবি তুলছিলেন ভাস্কর্যটির সঙ্গে। সন্ত্রাসীদের হাতে মারা যাওয়া সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা মঈন হোসেন রাজুর এই ভাষ্কর্য সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনতার প্রতিরোধের প্রতিরূপ হয়ে আছে এই ভাষ্কর্যটি।
রক্ত দানে বিজয় উদযাপন
‘রক্ত দিন, জীবন বাঁচান’ দেশে বহুল প্রসারিত পঙতি এটি। শুধু এক ব্যাগ রক্ত দিয়েই যদি একজনের জীবন বাঁচানো যায় তাহলে এর চেয়ে মহৎ কাজ আর কিই বা হতে পারে! তাই তো, বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাধন ও সন্ধানির যৌথ আয়োজন রক্তদান কর্মসূচিতে ছিলো মানুষের লক্ষণীয় উপস্থিতি।
সংস্থা দু’টির স্থাপিত বুথে দেখা মেলে উৎসুক জনতার উঁকিঝুঁকি। তবে সবাই রক্তদান না করলেও অনেকেই আসছিলেন রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করাতে। জনগণকে রক্তদানে উৎসাহী করতে এই আয়োজন করে সংস্থাগুলো। সেজন্য বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ জানার ব্যবস্থাও রাখা হয় বুথে।
আয়োজন নিয়ে বাধন ঢাকা সিটি জোনের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা আমাদের এই আয়োজনে ভাল সাড়া পাচ্ছি। অনেকেই এখানে জানতে আসছেন, তাদের আমরা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছি। আবার যারা রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করতে আসছেন তাদের ফ্রিতে গ্রুপ জানিয়ে দিচ্ছি। সকাল ১০টা থেকে এখন (দুপুর ৩টা) পর্যন্ত প্রায় ১০০ জনেরও অধিক মানুষের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে দিয়েছি। এছাড়াও আমাদের এখানে ১২ জন রক্ত দান করেছেন। আশা করছি বিকেলে এটা আরও বাড়বে।
এসময় রক্ত দান করা মোহাম্মদ মিলন হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি আজকেই প্রথম রক্ত দিচ্ছি, এর আগে কখনো রক্ত দেইনি। এখানে এসে, ভাইদের কথা শোনে মনে হলো রক্ত দেয়া উচিৎ। আমার এক ফোটা রক্তে যদি আরেকজনের জীবন বাঁচে এটাই বড় কথা।
লাল-সবুজের পতাকায় বাড়তি আয়ের সুযোগ
রাজধানী শহর ঢাকায় প্রায় আড়াই লাখেরও অধিক মানুষ ভাসমান নানা কাজ করে তাদের জীবন পরিচালনা করে থাকে। তাদের অনেকেরই বাড়তি আয়ের উৎস রাষ্ট্রীয় বিশেষ দিবস। ব্যতিক্রম নয় বিজয় দিবসও। দিনটিকে কেন্দ্র করে তাই হকারদের সামনে থাকে বাড়তি আয়ের সুযোগ। তাই তো দিবসটিকে কেন্দ্র করে অনেকেই এদিন লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে নেমে পড়েন রাস্তায়।
কেরানীগঞ্জে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বিভিন্ন মৌসুমী ফল কেটে বিক্রি করেন কুদ্দুস মিয়া। আজকে বিজয় দিবসে যেহেতু অফিস বন্ধ, রাস্তায় গাড়িও কম তাই একদিনের জন্য বের হয়েছেন পতাকা নিয়ে। এতে যেমন আয়ের পথটা খোলা থাকলো তেমনি রয়েছে বাড়তি আয়েরও সুযোগ।
কুদ্দুস মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, সকাল থেকেই শাহবাগ, টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে পতাকা বিক্রি করছি। সবাই পুলাপাইন, পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হয়, এই দিন মানুষ পতাকাও কিনে বেশি তাই ফল বাদ দিয়ে আজকে পতাকা নিয়ে বের হইছি। ভালই বিক্রি করছি। তবে আশানুরুপ না। তবে বিকেলে লোকজন বেশি বের হলে, বিক্রিও বাড়বে বলে মনে হয়। এখন দেখা যাক কি হয়। কপালে যা আছে তাই হবে।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার বঙ্গভবনে এক সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন।
বাংলাদেশের ৫৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনের সবুজ লনে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সফররত পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস-হোর্তা যোগ দেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট তার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলসহ বাংলাদেশে আসেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত হাসান, উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্যরা, রাষ্ট্রদূত, বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনারসহ কয়েক হাজার অতিথি এদিন বিকেল ৩টা ২৮ মিনিট থেকে ৪টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধান, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, শিল্পী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্তদের পরিবার, মুক্তিযুদ্ধের সহায়তাকারী ভারতীয় যোদ্ধা এবং বিশিষ্ট নাগরিকরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সংবাদপত্রের সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দও উৎসবে যোগ দেন।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন সফররত পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস-হোর্তাকে নিয়ে এ উপলক্ষে ভিভিআইপি এনক্লোজারে একটি কেক কাটেন।
পরে রাষ্ট্রপতি অনুষ্ঠানে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তি, ছাত্র প্রতিনিধি ও অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বলা হতো ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক। কিন্তু সেটা আসলে বন্ধুত্বের ছিল না। একটা দল তার গদি রক্ষার জন্য দেশের স্বার্থকে বিকিয়ে দিয়ে তার গদি রক্ষা নিশ্চিত করেছে।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী আমরা ভারতের প্রতিবেশী। বাস্তব সত্য হলো প্রতিবেশী বদলানো যায় না। আমরা সবসময় বলেছি ভারতসহ অনান্য দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক থাকবে। কিন্তু সেই সুসম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক মর্যাদা রক্ষা করে এবং ন্যায্যতার উপর ভিত্তি করে। বলা হতো ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক। কিন্তু সেটা আসলে বন্ধুত্বের ছিল না। একটা দল তার গদি রক্ষার জন্য দেশের স্বার্থকে বিকিয়ে দিয়ে তার গদি রক্ষা নিশ্চিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যু্ত্থান জনগণের রায় হলো, বাংলাদেশকে আর ওই নতজানু অবস্থায় আর পাওয়া যাবে না। সারা বিশ্বকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই বাংলাদেশ আর নতজানু থাকবে না। বাংলাদেশ তার মর্যাদা ও জাতীয় স্বার্থের ভিতর ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে অপরাপর দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবে। নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের সঙ্গেও আমরা ওই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে সুসম্পর্ক করতে চাই। এই সরকারকে আমরা সাধুবাদ জানাবো, তারা অভ্যুত্থানের পর থেকে ভারত সরকারের স্পষ্টভাবে সেটি জানিয়ে দিয়েছে। যার ফলে আমরা দেখছি ভারতীয় মিডিয়ার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিজেপি দলীয় স্বার্থে ফ্যাসিস্টদেরকে পূর্নবাসন করার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা প্রচার করতে চাইছে, বাংলাদেশে নারীরা, সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তাহীন। এগুলো সম্পুর্ণ ভুলতথ্য। তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা সত্য দিয়েই লড়াই করছি। সারাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ দেখছে বাংলাদেশে এরকম কোনো পরিস্থিতি নেই। সবচেয়ে বড় কথা বাংলাদেশ মাথা নত করছেনা কাবু হয়ে যাচ্ছে না। ভারতকে আমরা দেখতে পাচ্ছি তারা ধীরে ধীরে আলোচনার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কুটনৈতিক সম্পর্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আমাদের দিক থেকে এই তৎপরতা চালিয়ে যেতে হবে। এইখানে ন্যায্যতা এবং মর্যাদার ভিত্তিতে ওইখানে আর নতজানু থাকবেনা বাংলাদেশ।
ভারতীয় গণমাধ্যমের অপপ্রচার সম্পর্কে তিনি বলেন, সত্য দিয়ে আমাদের লড়াই করতে হবে। সেখানে দেশের ভেতর ও বাইরে অবস্থানকারী বাংলাদেশীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। অপপ্রচারের বিরুদ্ধে দেশের গণমাধ্যমকে সত্য তুলে ধরতে হবে। অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মভাবে লড়াই করতে হবে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যে গণ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেটির বিচার আমরা দাবি করেছি। একই সঙ্গে ২০২৪ সালে এসে ক্ষমতা রক্ষার জন্য ফ্যাসিস্ট শাসক নিরীহ মানুষদের হত্যা করেছে। এবং সেখানে যেভাবে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে সেই হত্যার বিচার হতে হবে। ন্যায় বিচারই হবে নতুন বাংলাদেশ যাত্রার সবচেয়ে শক্তিশালী দিক। সেখানে কিছুটা ত্রুটিবিচ্যুতি হচ্ছে। যেভাবে মামলা হচ্ছে সেগুলো অনেকটা পুরোনো কায়দায় হচ্ছে। যার কারণে ওই মামলাগুলোর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। ২৪ এর আত্মত্যাগ ও সংগ্রাম যেন বেহাত না হয়, মানুষের আকাঙ্ক্ষার যেন বাস্তবায়ন হয় সেলক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ভোলায় জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের ‘যুদ্ধজাহাজ’ বিসিজিএস সোনার বাংলা।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এটি উন্মুক্ত ছিল।
জাহাজটি এক নজর দেখার জন্য ভিড় জমায় বিপুল সংখ্যক মানুষ। ভোলা সদরের ইলিশা লঞ্চঘাট এলাকায় নোঙর করে রাখার পর থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ ছুটে আসেন। আগতরা জানিয়েছেন, তারা যুদ্ধ জাহাজের নাম শুনেছেন কিন্তু স্বচক্ষে দেখা হয়নি। তাই প্রবল আগ্রহ থেকেই দেখতে আসা।
কোস্টগার্ড জানিয়েছে, জাহাজটি সেসি অটো রোবটিক সিস্টেমের যেখানে ৩০ মিলিমিটারের ২টি অটোগান এবং ১৪.৫ মিলিমিটারের আরও ২টিসহ মোট চারটি অটোগান রয়েছে।
এটি ঘণ্টায় ২৩ নটিক্যাল মাইল অতিক্রম করতে সক্ষম। ৪৭ জন নাবিক এ জাহাজ পরিচালনা করছে। ১৫৫ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ২২ ফুট প্রস্তের এ জাহাজের ওজন ৩০৭ টন।
কোস্টগার্ড আরও জানায়, উপকূলের জলসীমায় দস্যুতা এবং অপরাধ নির্মূলে ব্যবহারের পাশাপাশি যুদ্ধকাজেও ব্যবহার হয় জাহাজটি। লাল-সবুজের পতাকায় সজ্জিত এ জাহাজের নিরাপত্তায় নৌ পুলিশ, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের ডুবুরি দলসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত ছিল।