শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে: বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক
উপমহাদেশের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও শিক্ষাখাতে বাজেটের ৪ শতাংশ বরাদ্দ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে কাউন্সিল ফর দ্য রাইটস অব একাডেমিয়া আয়োজিত 'বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে একাডেমিক অধিকার লঙ্ঘন: প্রতিকারে নীতি সুপারিশ' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম বলেন, আপনারা মাইন্ড করবেন না। আমাদের প্রাইমারি স্কুলে অত্যন্ত খারাপ শিক্ষকরা পড়ান। কারন সেখানে বেতন খুবই কম। ১৭ হাজার টাকায় আপনি কি ডিজার্ভ করেন ? আপনি ভালো ইউনিভার্সিটি চানতো, ইন্ডিয়াতে ভালো ইউনিভার্সিটি আছে।
তিনি বলেন, উপমহাদেশের ভালো ইউনিভার্সিটির তালিকা করে, এশিয়ার ইউনিভার্সিটির তালিকা করে। সেখানে ইন্ডিয়ার ২০টা আছে, আপনার একটাও নাই। পাকিস্তানের ১০/১২টা আছে; আপনি লজ্জা পান তো! বাজারটা একটু দেখবেন, তাদের মাস্টারদের কি পরিমান টাকা দেয়। তাদের এনুয়াল বাজেট কত। তাহলে শিক্ষার জন্য আমাদের প্রধান ও প্রায়োরিটি বেসে আলাপ করতে হবে। আমার মনে হয় আগামী পাঁচ বছরে এটা সম্ভব। আপনি কিভাবে এটাকে বাড়িয়ে বাড়িয়ে কিভাবে তাদের মতো করা সম্ভব সেটার একটা রোডম্যাপ দেন।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১/২টা বিশেষ ইনস্টিটিউট করে ফুলটাইম ফুল ফান্ডেড পিএইচডি প্রোগাম আপনাকে চালু করতে হবে। এটা বাংলাদেশে নাই। বাংলাদেশের বেসিকালি কোন পিএইচডি প্রোগ্রাম নাই। এখানে একজন ভর্তি হয় আর তিন বছর পর একটা কাগজ জমা দেয়, এই আরকি। ফলে ফুলটাইম, ফুল ফান্ডেড পিএইচডি প্রোগাম চালু করতে হবে এবং এটা পসিবল। আমাদের দুই তিনটা ইউনিভার্সিটিতে এটা করার মতো লোকবল আছে।
এসময় মাদ্রাসা শিক্ষাটাকে মেইনস্ট্রিম শিক্ষা বলতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনা সভা থেকে সংগঠনের মুখপাত্র প্লাবন তারিক ১২ দফা শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন; শিক্ষাক্রম প্রণয়ন ও পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন; মূল্যায়ন পদ্ধতির সংস্কার; শিক্ষা বাজেট অগ্রাধিকার; গবেষণামুখী উচ্চ শিক্ষা; নিয়োগ কমিশন প্রণয়ন; মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার; কারিগরি শিক্ষার মান বৃদ্ধি; শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর; মানসিক স্বাস্থ্য সেবা ও কাউন্সেলিং ব্যবস্থা করা; বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং বুলিং এবং র্যাগিং বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
কাউন্সিল ফর দ্য রাইটস অব একাডেমিয়ার সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল এন্ড আফ্রিকান স্টাডিজের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মুশতাক খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন, এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি মীর মোহাম্মদ জসিম প্রমুখ।