চার বছর পর চালু হচ্ছে পঞ্চগড় চিনিকল

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তাা২৪.কম

ছবি: বার্তাা২৪.কম

চার বছর পঞ্চগড়ের ভারী শিল্প সুগার মিল বন্ধ থাকার পর পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) এর অধীন ৬টি (পঞ্চগড়, রংপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া, সেতাবগঞ্জ ও শ্যামপুর) ৬টি চিনিকলের আখ মাড়াইয়ের স্থগিতাদেশ প্রদান করে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে।

বিজ্ঞাপন

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মাড়াই স্থগিতকৃত চিনিকলসমূহ পুনরায় চালু করার জন্য ও চিনিকল লাভজনকভাবে চালানোর নিমিত্ত সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা প্রণয়নের লক্ষে গঠিত টাস্কফোর্সের সুপারিশ ও মতামতের আলোকে ০৩/১২/২০২৪ তারিখে স্মারক মূলে পর্যাপ্ত আখ প্রাপ্তি সাপেক্ষে ১ম পর্যায়ে শ্যামপুর, সেতাবগঞ্জ চিনিকল, ২য় পর্যায়ে পঞ্চগড় ও পাবনা চিনিকল এবং ৩য় পর্যায়ে কুষ্টিয়া ও রংপুর চিনিকলের মাড়াই কার্যক্রম পুনরায় চালুকরণের লক্ষে উপর্যুক্ত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হলো।

জানা যায়, প্রায় ২১ দশমিক ২৮ একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে উত্তরের জেলার একমাত্র ভারী শিল্প চিনিকল। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে নানা কারণে লোকসান গুণতে শুরু করে কারখানাটি। ২০২০ সালে এসে লোকসানে পড়ে দেশের ছয়টি কারখানার সঙ্গে পঞ্চগড় চিনিকলেরও আখ মাড়াই কার্যক্রম স্থগিত করে সরকার। তখন থেকে আখ মাড়াই বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে গত ৪ বছর ধরে মিলের পুরো এলাকা জুড়ে ভুতুরে পরিবেশ বিরাজ করে। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে আখ মাড়াই ও পরিবহনের মূল্যবান যন্ত্রপাতি।

বিজ্ঞাপন

ভারী শিল্পের এ খাতটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নষ্ট হতে চলেছে চিনিকলের মূল্যবান জিনিসপত্রও। ২০১৮ সালে ৬ কোটি ৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয়ে বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) নির্মাণ শুরু হলে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ ইটিপির নির্মাণ কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবিএম ওয়াটার কোম্পানি লিমিটেড।

ছবি: বার্তা২৪.কম

পঞ্চগড় চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানায়, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার চিনিকলটি চালুর উদ্যোগ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ঠাকুরগাঁও চিনিকলের তত্ত্বাবধানে পঞ্চগড়ে আখ চাষ হচ্ছে। ৩১টি ইক্ষুক্রয় কেন্দ্র এর মধ্যে ৮টি চালু রয়েছে। বর্তমানে ৭৯২ একর জমিতে আখ আবাদ হচ্ছে। এখন আখ মাড়াইয়ের মৌসুম চলমান। মাঠে ২০০ একর জমিতে আখ চলমান রয়েছে। আখ চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হবে। যাকে কৃষকরা আখ চাষে আগের সেই উদ্যমে আসে।

এদিকে গত ১৬ নভেম্বর বন্ধ হয়ে থাকা সুগার মিল পরিদর্শনে এসে পঞ্চগড়সহ বন্ধ থাকা সকল সুগার মিল চালুর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে কথা বলেছিলেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

পঞ্চগড় চিনিকলের তেঁতুলিয়ার সিডিএ মনিরুজ্জামান জামান , চিনিকল চালুর প্রজ্ঞাপনের বিষয়টি বিকেলে শুনেছি। পঞ্চগড়ে আগে ৫০-৬০ হাজার মেট্রিক টন আখ আবাদ হতো। বর্তমানে ১৫-২০ হাজার মেট্রিক টন আবাদ হচ্ছে। ইক্ষুক্রয় কেন্দ্রগুলো চালু করে দেয়া হয় তাহলে আখ আবাদ বেড়ে যাবে। আগে তেঁতুলিয়া উপজেলায় ২০/২২ হাজার মেট্রিক টন আখ হতো। এখন ১০ হাজার হবে। চিনিকল চালু ঘিরে আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রাখছি।

পঞ্চগড় সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ৬টি চিনিকল চালুর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। গত নভেম্বর মাসে শিল্প উপদেষ্টা মহোদয় পরিদর্শন করে গেছেন। বর্তমানে এ জেলায় ৭৯২ একর জমিতে আখ আবাদ হচ্ছে। ৩১টি ইক্ষুক্রয় কেন্দ্র এর মধ্যে ৮টি চালু রয়েছে। এখন তো আখ মাড়াইয়ের মৌসুম। মাঠে ২০০ একর জমিতে আখ রয়েছে। আখ রোপনের সময় শুরু হয়েছে। আমরা চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা চেষ্টা করছি।