হাদিয়া দিয়ে ফুল ছিটিয়ে মসজিদের ইমামকে রাজকীয় বিদায়

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪১ বছর ইমামতির পর মাওলানা আশরাফ আলি (৭০) নামে এক ইমামকে লাখ টাকা হাদিয়া দিয়ে ফুল ছিটিয়ে রাজকীয় বিদায় দিয়েছেন স্থানীয় মুসুল্লিরা।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার রানিহাটি ইউনিয়নের চকলামপুর বেলপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আশরাফ আলিকে জুমআর নামাজ শেষে নানা আয়োজন ও রাজকীয় সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে বিদায় দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শেষবারের মতো উপস্থিত মুসল্লি ও এলাকাবাসীর কাছে নিজের ভুল ত্রুটির ক্ষমা চান তিনি। পরে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা দিয়ে মাইক্রোবাসে করে নিজ গ্রামে ইমামের বাড়িতে তাকে নিয়ে যান এলাকাবাসী।

এর আগে মসজিদের বিদায়ী ইমাম মাওলানা আশরাফ আলিকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নগদ ১ লাখ ৩ হাজার টাকা ও ব্যবহারযোগ্য কিছু সরঞ্জাম তুলে দেন মুসল্লিরা। এছাড়াও শত শত মুসল্লির উপস্থিতে মাইক্রোবাসে ওঠানো হয় ইমামকে। সামনে-পেছনে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ইসলামের বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে ইমাম সাহেবকে তার নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসা হয়।

বিজ্ঞাপন

আসরাফ সদর উপজেলার রানিহাটি ইউনিয়নের কৃষ্ণ গোবিন্দপুর ক্যাঠ্যাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও চুনাখালি কলেজের সাবেক প্রভাষক।

স্থানীয় বাসিন্দা আলি হাসান বলেন, বেলপাড়া জামে মসজিদে ৪১ বছরের বেশি সময় ধরে ইমামতি করে আসছেন আশরাফ আলি। কোনদিন কারও সাথে খারাপ আচরণ করেননি। এমনকি কেউ কটু কথা বললেও উত্তর দেননি। এজন্য এলাকার মুসুল্লিরা তাকে খুব ভালবাসেন।

হাসিব আলি নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জাগো নিউজকে বলেন, আমার পিতাও তার কাছে কোরআন পড়তে শিখেছেন। আমিও তার কাছে কোরআন এবং নামাজ আদায় করতে শিখেছি। তিনি এই এলাকার মানুষকে অনেক শিক্ষা দিয়েছেন।

এমদাদুল ইসলাম নামে এক সাবেক ইউপি সদস্য বলেন, আমরা এই ইমামের কাছে অনেক সৎ আচরণ শিখেছি। তিনি রেগে গিয়ে কখনো কোন কথা বলতেন না। এজন্য স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে সম্মান করতেন। তার চলে যাওয়া স্থানীয়রা মেনে নিতে পারছি না।

বিদায়ী ইমাম মাওলানা আশরাফ বলেন, বিগত ৪১ বছর এই মসজিদে ইমামতি করে আসছি। মানুষ আমাকে এতোভাবে আগে বুঝে উঠতে পারিনি।আমি তাদের এত ভালোবাসা সত্যিই মুগ্ধ।

চকলামপুর বেলপাড়া জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন জুয়েল বলেন, আমরা এই প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি আমাদেরকে অনেক কিছুই দিয়েছেন। অনেক ভাবেই তার কাছে শিখেছি। আজ তাকে বিদায় দিতে হচ্ছে। এটি খুবই কষ্টের।