কাজ রেখে পালিয়েছেন ঠিকাদার, দুর্ভোগে এলাকাবাসী
শেষ হয়নি সেতুর কাজ, দু’পাশে রাস্তা পারাপারের জন্য বানানো হয়েছে কাঠের তৈরি মই। অধিকাংশ কাঠ ভেঙে যাওয়া আর নিচে পানির বিশাল গর্ত থাকায় সেতুটি মরণ ফাঁদে রুপ নিয়েছে। পারাপারের সময় বেড়েছে দূর্ঘটনার প্রবণতা, এতে এলাকার মানুষের ভোগান্তি প্রতিনিয়ত। দ্রুত কাজ শেষ করে ভোগান্তি থেকে মুক্তি চায় গ্রামবাসি।
২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ২৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা ব্যয়ে দূর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের সিংগিয়া গ্রামে কাজ শুরু হয় সেতু/কালভার্টের। গত বছরের শুরুতে কাজটির গতি থাকলেও গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে বন্ধ রয়েছে কাজ। সেতু তৈরির কাজে ব্যবহৃত মালামাল রেখে পালিয়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চার গ্রামের কয়েকশত মানুষকে। হেঁটে রাস্তা পারাপার, যানবাহন, কৃষি জমির ফসল, বিভিন্ন পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে ঘটছে নানা ধরনের সমস্যা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, সেতুর এমন দুর্দশা গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে এলাকাবাসীর। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত, কৃষি জমির ফসল পরিবহনসহ ব্যাঘাত ঘটছে দৈনিক কাজের। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করে ঝুঁকিমুক্ত করার দাবি এলাকাবাসীর।
পথচারী শফিকুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তা দিয়ে আমরা আশপাশের সকল মানুষ যাতায়াত করে থাকি। শহরে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি। অথচ ব্রীজটির কারনে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
কৃষক নরেশ চন্দ্র বলেন, আলুর আবাদ করেছি। বীজের আলু ভ্যানে করে নিয়ে যেতে হয়। আবাদের সময় সার কীটনাশক নিয়ে যেতে হয়। আমরা এসব ভ্যানে নিয়ে যেতে পারছি না। তারা কাজটা এমন ভাবে রেখে পালিয়েছে না শুরু না শেষ। আর দুই পাশে যে কাঠের রাস্তা করেছে সেগুলো আরো ভয়ানক। যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটে যাবে।
স্কুল শিক্ষার্থী নিলিমা রায় বলেন, প্রতিনিয়ত এই রাস্তায় বিদ্যালয়ে যেতে হয়। বাধ্য হয়ে নিচ দিয়ে নেমে ব্রিজের আরেক পাশে উঠতে হয়। বর্ষার সময় তো বইপত্রসহ ভিজে গেছে। এটি কাজ শেষ করলে যাতায়াতে সুবিধা হবে।
১৭ নং জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রহমত আলী বলেন, এলাকার মানুষের সাথে দেখা হলে ব্রিজের বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কাজে আসেনি।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাসেল পরিবহনের সাথে কয়েক দফায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু শোয়েব খান বলেন, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত কাজ শেষ করার মেয়াদ রয়েছে কাজটির। তবে ভোগান্তি নিরসনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে কাজ করা হবে।