চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, আমি মেয়র হিসেবে নয়, একজন নগরসেবক হিসেবে চট্টগ্রামকে একটি আধুনিক পর্যটন নগরীতে পরিণত করার জন্য কাজ করছি। নগরীর খাল ও ড্রেন পরিষ্কার করার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। আগামী বর্ষার আগে জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে বড় পরিসরে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হবে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে পূর্ব বাকলিয়া চেয়ারম্যান ঘাটস্থ সুজার মা’র মসজিদ প্রাঙ্গণে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছাবেদুল হক মেম্বার স্মৃতি সংসদের ফ্রি চিকিৎসা সেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করতে বিশেষ স্প্রে কার্যক্রম চালু করেছি। পাশাপাশি জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিচ্ছি, যাতে কেউ রাস্তা, খাল-বিলে প্লাস্টিক বা আবর্জনা দিয়ে পরিবেশ নষ্ট না করে।
ছাবেদুল হক মেম্বার স্মৃতি সংসদের সভাপতি আজিজুল হক মাসুমের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সদস্য আব্বাস আলী এবং মাহবুব সিদ্দিকীর পরিচালনায় এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।
ফ্রি চিকিৎসা সেবা ক্যাম্পে ড্যাবের ডাক্তাররা বিপুল সংখ্যক রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা এই সেবা গ্রহণ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। স্বেচ্ছাসেবীরা ক্যাম্পে বিভিন্ন কাজে সহায়তা করেন। মেয়র ও অতিথিরা সংগঠনের সদস্য, চিকিৎসক এবং স্বেচ্ছাসেবকদের এই মহৎ আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তারা আশা প্রকাশ করেন যে, এই ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চিকিৎসাসেবা একটি মহৎ পেশা। আজকের ফ্রি চিকিৎসা সেবা ক্যাম্পে যারা অংশগ্রহণ করেছেন, বিশেষ করে ড্যাবের ডাক্তাররা, তাদের প্রতি আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। এটি সাধারণ মানুষের প্রতি আমাদের দায়িত্ববোধের একটি উদাহরণ। ভবিষ্যতে এই ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সততা, দেশপ্রেম, এবং আদর্শ আমাদের জন্য একটি অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি দেশের জন্য যে অবদান রেখে গেছেন, তা আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তার হাত ধরেই বাংলাদেশে কৃষি, শিল্প, গার্মেন্টস, এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে ভিত্তি স্থাপিত হয়। আমরা যদি তার আদর্শ মেনে চলি, তাহলে একদিন বাংলাদেশ একটি দুর্নীতিমুক্ত এবং উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
তিনি এলাকাবাসীর আন্দোলন ও সংগ্রামে অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই এলাকার মানুষ বিভিন্ন সময়ে অত্যাচার, মামলা হামলা, এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কিন্তু তারা কখনো আন্দোলনের মাঠ থেকে পিছপা হননি। তাদের সাহসিকতা ও ত্যাগ আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা এগিয়ে যাব। তাই আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। একসঙ্গে কাজ করলে চট্টগ্রামকে আমরা আধুনিক শহরে পরিণত করতে পারব। এটি শুধু আমার স্বপ্ন নয়, আমাদের সবার স্বপ্ন।
বিশেষ অতিথি আবুল হাশেম বক্কর বলেন, দেশের মঙ্গল যারা চায়নি, তারাই জিয়াউর রহমানকে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে নির্মমভাবে খুন করেছে। জিয়ার জীবনের শুরুই এ চট্টগ্রামে, শেষও এ চট্টগ্রামে। তিনি বলতেন, স্লোগানে মুক্তি আসবে না। আমাদের উৎপাদনমুখী হতে হবে। কর্মমুখী হতে হবে। প্রত্যেকটি মানুষের হাতে কাজ পৌঁছে দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, বিএনপি নেতা শাহজাহান সিরাজ, আবদুল্লাহ আল ছগির, মো. ইলিয়াছ, রৌসাংগীর আমিন, কামরুল ইসলাম।
ফ্রি চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন ডা. ইলহাম ইমাম, ডা. শাহেদ ইকবাল হাসান, ডা. এস এম রিয়াসাদ শাহাবুদ্দীন, ডা. জোনায়েদ রায়হান, ডা. সাদ্দাম হোসেন, ডা. মেহেদী হাসান, ডা. আছরার উদ্দিন ফয়েজ, ডা. চিন্ময় বড়ুয়া, ডা. শিশির, ডা. ইরফানুর রহমান জিসান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতারা, যার মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন খান, মো. আলমগীর, আবদুল সাত্তার, খলিলুর রহমান টিপু, নুরুল আবসার টিপু, নেজাম উদ্দিন, মো. সায়মন, ইমরান হোসেন, মো. রুবেল, মো. একরাম প্রমুখ।