ময়মনসিংহে এক বছরে ট্রেনে কাটা পড়ে ৪৯ জনের মৃত্যু

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহে রেললাইনে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে এবং অরক্ষিত রেলক্রসিং এ ট্রেনের সাথে যানবাহনের সংঘর্ষে (রেল দুর্ঘটনা) গত এক বছরে (২০২৪) সালে ৪৯ জনের মৃত্যু ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ বলছে অসাবধানতার কারণেই রেল দুর্ঘটনা রাড়ছে। দুর্ঘটনা রোধে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং সংরক্ষণের পাশাপাশি লোকবল নিয়োগের দাবী সাধারণ মানুষের।

বিজ্ঞাপন

ময়মনসিংহ জংশন রেলওয়ে থানা সূত্রে জানা যায় হোসেন বলেন গত এক বছরের ময়মনসিংহ অংশে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ২০২৩ সালে ৩১ জন, ২০২২ সালে ৪২ জন, ২০২১ সালে ৩৬ জন প্রাণ হারিয়েছে।

রেল বিভাগের তথ্যমতে ময়মনসিংহ জোন হচ্ছে ময়মনসিংহ থেকে শ্রীপুর, ,মোহনগঞ্জ, আঠারোবাড়ী, জারিয়া জাঞ্জাইল। এই এরিয়ার মধ্যে ২০০ টি লেভেলক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে ১০৫ টি অরক্ষিত। বাকি ৯৫ টির মধ্যে ৭০ টিতে তিনজন করে গেইটম্যান রয়েছে। ২০ টি লেভেল ক্রসিংয়ে দুই পাশে গেইট ব্যারিয়ার আছে। ১০৫ টি অরক্ষিত রেলক্রসিং গেইটম্যান ও ব্যারিয়ার না থাকায় ট্রেন সন্নিকটে আসলেও ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ মানুষ ও যানবাহন অবাধে চলাফেরা করতে দেখা যায়। এসব কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। চলতি বছরে ময়মনসিংহে রেলে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গত ২৯ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের কেওয়াটখালি রেলব্রীজ এলাকায় দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেন থেকে পড়ে ইমরান (২৪) নামে এক টিটির মৃত্যু হয়েছে।

গত ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা-ময়মনসিংহ লাইনের গফরগাঁও উপজেলার বাসুটিয়া এলাকায় ঢাকা গামী আন্তঃনগর ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেন বালুভর্তি ট্রাক লড়ি ট্রাক্টরে অরক্ষিত রেলক্রসিং দিয়ে পারাপারের সময় চলন্ত ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের ট্রাকলড়ি দুমড়ে মুচরে যায়। সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচ যাত্রী আহত হয়েছে। এক ট্রেনযাত্রীর দু পা বিছিন্ন হয়ে যায়।

গত ১১ জুন দুপুরে পরীক্ষা শেষ নানা বাড়ীতে ফেরার পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে গফরগাঁও উপজেলার হাতিখলা গ্রামে একটি অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং দিয়ে পারাপারের সময় কমিউটার ট্রেনে কাটা পড়ে শোভা (১৬) নামে এক স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু হয়।

গত ২৪ এপ্রিল ময়মনসিংহ নগরীর পঁচা পুকুরপার এলাকায় রেলক্রসিং ব্যারিয়ার ফালানো না থাকায় দেওয়ানগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচরে যায়। ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হন।

ময়মনসিংহ-ঢাকা রেললাইনে গফরগাঁও শিবগঞ্জ রোড রেলক্রসিং দিয়ে পারাাপারকারী কাইয়ূম আহমেদ বলেন ট্রেন আসার কমপক্ষে ৫-১০ মিনিট পূর্বে ব্যারীয়ার ফালানো হয়। এতে আমরা সাধারণ মানুষ খুবই অতিষ্ট হয়ে যায় ব্যারীয়ারের ফাঁকা জায়গা (রেড জোন) দিয়ে চলাচল করি।একারণে দূর্ঘটনার সম্ভাবনা দেখা দেয়।

সমাজকর্মী অধ্যক্ষ কাব্য সুমি সরকার বলেন, রেলের দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ অরক্ষিত লেবেল ক্রসিং। এ ছাড়াও অসচেতনতার কারণে ও দুর্ঘটনা ঘটে। অরক্ষিত লেবেল ক্রসিংগুলোকে জনবল নিয়োগ ও ব্যারিয়ার স্থাপন করা হোক।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশন থানার ইনচার্জ (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন প্রত্যেকটা ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় রেল বিভাগ বাদী হয়ে অপমৃত্যুর মামলা করে। দুর্ঘটনা রোধে আমরা মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেয়। দেখেশুনে রেললাইন পার হওয়া, রেললাইনে সেলফি না তোলা, রেললাইনে বসে মোবাইল গেমিং না করা । সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে থাকি তার মধ্যে বিট পুলিশিং ও ওপেন হাউজডে অন্যতম। এর মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করে থাকি।