মাদারীপুরের রাজৈরে ২০১৫ সালে চাঁদাবাজির মামলার সাক্ষী ব্যবসায়ী বাবুল হাওলাদারকে কুপিয়ে হত্যায় পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় ১৯ আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে জেলার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারত নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবির এই রায় দেন। রায়ে ক্ষুব্ধ হওয়ায় উচ্চ আদালতে যাবার কথা জানিয়েছে বাদী ও আসামিপক্ষ।
মামলার এজাহারে জানা যায়, একটি চাঁদাবাজি মামলায় সাক্ষী করা হয় মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার শাখারপাড় গ্রামের ফল ব্যবসায়ী বাবুল হাওলাদারকে। এরই জেরে ২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি ফল ব্যবসায়ী বাবুলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার দুইদিন পর ৬ জানুয়ারি ৪২ জনের নামে রাজৈর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বড় ছেলে ইমরান হাওলাদার। মামলা দায়েরের পর ইমরানকে বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখায় আসামিপক্ষ। পরে তিনি বিদেশ চলে যান। এরপর উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলা পরিচালানার দায়িত্ব পান নিহতের ছোট ছেলে আসাদুল হাওলাদার।
সর্বশেষ তৃতীয় দফায় ২০১৬ সালের ২৪ মে, ২৪ জনের নামে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান ফকির। মামলা চলাকালীন সময়ে চার্জশিটভুক্ত তিন আসামির মৃত্যুও হয়। এরপর যুক্তিতর্ক, দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া ও ১২ জনের সাক্ষ্য নেয় আদালত। বুধবার বিকেলে সাহেবালী মুন্সি, খোকন মুন্সি, সাহাবুদ্দিন মুন্সি, লাবলু মুন্সি ও হান্নান মুন্সি এই ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। একইসাথে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়। জরিমানার অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হলে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। এছাড়া দোষ প্রমাণ না হওয়ায় বাকি আসামিদের খালাস দেয়া হয়েছে। মামলার রায়ের সময় হান্নান মুন্সি ছাড়া সাজাপ্রাপ্ত ৪ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কড়া নিরাপত্তায় জেল হাজতে পাঠানো হয়। এদিকে রায়ে ক্ষুব্ধ হওয়ায় উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছে উভয়পক্ষ।
নিহতের ছোট ছেলে আসাদুল হাওলাদার বলেন, আমার বাবাকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে আসামিরা। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট হয়নি। রায়ের কপি সংগ্রহ করে উচ্চ আদালতে যাবো। আমার বাবা একটি চাঁদাবাজি মামলার সাক্ষী হওয়ায় এই ঘটনা ঘটিয়েছে আসামিরা। আমরা উচ্চ আদালতে ন্যায় বিচার পাবো বলে প্রত্যাশা করছি।
আসামিপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট ফয়জুর রহমান হিরু বলেন, আসামিরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, এমন কিছুই প্রমাণ হয়নি। ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে এই রায়ের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমরা এই আপিল করব।