রক্তপাতের দায় সরকার এড়াতে পারবেন না: এবি পার্টি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রক্তপাতের দায় সরকার এড়াতে পারবেন না

রক্তপাতের দায় সরকার এড়াতে পারবেন না

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, দেশের সকল ঘটনার দায় এই সরকারকে নিতে হবে। কোনো একটা দুর্ঘটনা, রক্তপাতের দায়ও সরকার এড়াতে পারবেন না। শুধু সরকার নয়, আমরা যারা গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার ছিলাম কেউই এর দায় এড়াতে পারব না। আগামীদিনে ৩০ থেকে ৪০ বছর পরেও যেকোনো দুর্ঘটনার, যেকোনো অন্যায়ের দায়ে আমাদেরকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। 

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। 'ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে উদ্বেগ ও শান্তি রক্ষায় করণীয়' বিষয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, সর্বাত্মক জনসমর্থন, বিপ্লবের স্পিরিট, প্রভূত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব পাওয়া সত্বেও ড. ইউনূসের মত শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া জননন্দিত ব্যক্তিত্ব যদি দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়। আমরা এবি পার্টির পক্ষ থেকে দেশপ্রেমিক জনতাকে আহ্বান জানাচ্ছি, আসুন সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার সকল পক্ষ মিলে অস্থিরতা পরিহার করে ধৈর্য ও সহনশীলতার ভিত্তিতে একটি সমঝোতা সনদ তৈরি করি। আমরা আমাদের দলের উদ্যোগে শিগগিরই বৈষম্যবিরোধী সকল ছাত্র-জনতাকে নিয়ে গণঅভ্যুত্থান সনদ তৈরির পদক্ষেপ নেব ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, প্রফেসর ডক্টর ইউনূস সরকারকে আমরা দেখছি, উনি শুধু ভালবাসা দিয়ে শাসন করার পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এই জায়গায় আমরা তাদেরকে সতর্ক করেছি। উনি বারবার বলছেন যে উনি শাসক নয়। কিন্তু, উনিতো শাসনের দায়িত্ব নিয়েছেন। এত বড় গণঅভ্যুত্থানে তাকে এককভাবে নেতৃত্ব হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি সর্বময় নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব হাতে পেয়েছেন। অনবরত আমরা তাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। সারা পৃথিবীতে তার প্রতি সমর্থন রয়েছে। এটা সত্বেও তিনি যদি বাংলাদেশের শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে না পারেন, তাহলে নিশ্চয়ই তার শান্তি পুরস্কার প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমরা সরকারকে বলতে চাই, অনেক পরীক্ষা-নীরিক্ষা হয়েছে এবার কাজ দেখতে চাই। আমরা ফ্যাসিস্ট ও গণহত্যাকারীদের গ্রেফতার ও উপযুক্ত বিচার চাই, আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিচার চাই, জুলাই-আগস্টের স্মৃতিকে ধরে রাখার জরুরি পদক্ষেপ চাই। সরকারের সবস্তরে জুলাই-আগস্টের স্পিরিটের সাথে চলতে না পারা কেউ থাকলে তার অপসারণ চাই। উপদেষ্টা থেকে শুরু করে প্রশাসনের সব স্তরে বিপ্লবের স্পিরিট ও গতির সাথে তাল মেলাতে ব্যর্থদের অপসারণ করে যোগ্য লোকদের নিয়োগ দেয়ার দাবি জানাই।

মজিবুর রহমান মঞ্জু আরও বলেন, গত কয়েকমাসের সংঘাত, সংঘর্ষ, অস্থিরতা ও গণ অভ্যুত্থানের মিত্রদের বিভক্তির দায় অন্তর্বর্তী সরকার কোনভাবেই এড়াতে পারে না বলে আমরা মনে করি। সরকারকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার ও দেশবাসীর উদ্বেগ দূর করতে হবে। হাজারো ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত এই সরকার আন্দোলনে সম্পৃক্ত সকল পক্ষের ঐক্য রক্ষার ব্যপারে শুরু থেকেই উদাসীন।

এবি পার্টির সদস্য সচিব বলেন, দ্রব্যমূল্যরে ঊর্ধ্বগতিতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের উদ্বেগ তারা আমলে নিচ্ছেন না। আহত সংগ্রামীরাসহ প্রতিদিন রাজপথে নেমে আসতে হচ্ছে অধিকারের দাবিতে নানা শ্রেণি পেশার মানুষকে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে একটা ভালো সমন্বয় টিম তৈরি করে এসকল আন্দোলন ও দাবি দাওয়া টেবিলে বসেই সমাধান করা যেত।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের চরম নৈরাজ্যবাদী শাসনের অবসানের পর দেশবাসী আশা করেছিলেন সব জায়গায় ধীরে ধীরে শান্তি ফিরবে। কিন্তু পতিত ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে অরাজকতা তৈরির জন্য বারবার চেষ্টা চালাচ্ছে, সরকার সে ষড়যন্ত্রের বিষয়ে কোন আগাম পদক্ষেপ নিতে তো পারছেইনা বরং কখনও কখনও নিজের মিত্র শক্তিদের দূরে সরিয়ে তাদেরকে ষড়যন্ত্রকারীদের দোসর বলে দায় এড়াতে চাচ্ছে। আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই, রাষ্ট্র শাসনে কোমলতা বলে কিছু নেই বরং ন্যায় ও ইনসাফের জন্য যথার্থতার নীতি অনুসরনই কাম্য।

সংবাদ সম্মেলন আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক এড. গোলাম ফারুক, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব খালিদ হাসান, অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।