জাতীয় প্রয়োজনে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই: জামায়াত আমির

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান

জাতীয় প্রয়োজনে জনগণের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশে অভূতপূর্ব সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি রয়েছে। কিন্তু বিগত পনের বছরে একটি দল দেশকে এলোমেলো করে দিয়েছিল।

রোববার (১ ডিসেম্বর) সকালে খুলনার খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে স্থানীয় ইস্টার্ন জুট মিলস শ্রমিক ময়দানে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জামায়াত আমির এসব কথা বলেন। খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামীর আমীর সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটোর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদ মামুনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন।

বিজ্ঞাপন

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এ দেশ কারও একার নয়, সবার। দেশ এখনও পনের বছরের জঞ্জালমুক্ত হয়নি। তাই সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। মর্যাদাশীল দেশ গড়ার কাজে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। পরনির্ভরশীল নয়, কৃষি ও শিল্পকে গুরুত্ব দিয়ে দেশ গড়া প্রয়োজন।

প্রভু নয়, বন্ধু প্রতিবেশী রাষ্ট্র চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো আগ্রাসী হাত আমরা দেখতে চাই না।

বিজ্ঞাপন

আমিরে জামায়াত বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের দু’টি দেশপ্রেমিক সংস্থাকে ধংস করে দেয়। প্রথমেই তারা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। এরপর জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে ও কারাগারে রেখে তিলে তিলে হত্যা করে। কিন্তু তাদের সে অত্যাচার-নির্যাতনের জবাব এদেশের শান্তিকামী ছাত্র-জনতা জুলাই-আগষ্টের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দিয়ে দিয়েছে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসররা এখনো দেশকে অস্থিতিশীল করতে উসকানি দিচ্ছে। তবে সেই ফাঁদে কোনোভাবেই পা দেওয়া যাবে না। যতই ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত হোক তা ব্যর্থ করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশ এখনো জঞ্জাল ও স্বৈরাচারমুক্ত হয়নি। তাই জাতীয় প্রয়োজনে জনগণের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। ফ্যাসিস্ট সরকারের সমালোচনা করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত পনের বছরে আওয়ামী লীগ দেশকে কারাগার বানিয়েছিল। তাদের মতের ন্যূনতম বাইরে গেলে খুন, গুম করা হতো এবং নির্যাতন ও জেল জুলুম দেওয়া হতো। দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে এদেশের ছাত্র-জনতা ন্যায়বিচারের স্লোগান নিয়ে রাজপথে নেমেছিল। তাদের জন্য নিরাপদ ভবিষ্যৎ উপহার দেওয়া এখন আমাদের দায়িত্ব। সে লক্ষ্য নিয়েই জামায়াতের প্রতিটি কর্মীকে কাজ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, এ অঞ্চলের প্রধান দু’টি সমস্যা হলো মিল ও বিল। আওয়ামী লীগ আমলে ওই দু’টিই ধ্বংস হয়েছে। একদিকে ২৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে শ্রমিকদের বেকার করা হয়েছে, অপরদিকে বিল ডাকাতিয়াসহ বিভিন্ন জলাশয় দখল ও স্লুইচগেট বন্ধ করে হাজার হাজার মানুষকে পানিবন্দি করে রাখা হয়েছে। প্রশাসনের দুর্নীতির কারণে মিলগুলো লোকসানে পরিণত হলেও তার দায়ভার চাপানো হয়েছে শ্রমিকদের ওপর। ডুমুরিয়া-ফুলতলা সন্ত্রাস কবলিত এলাকা ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাঁচ বছরের জন্য আমাকে এমপি নির্বাচিত করার পর আমি সাধ্যানুযায়ী সন্ত্রাসমুক্ত করেছি। জনগণ আবার দায়িত্ব দিলে আমি প্রধান প্রধান সমস্যাগুলোর দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করে সমাধানের সর্বাত্মক চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ।