বিজয়ের আকাঙ্ক্ষা যাতে ব্যর্থ না হয়: নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। কেননা গণতন্ত্র না থাকায় বঞ্চিত ছিলাম। এবারও যে বিজয় হলো সেই বিজয়ের আকাঙক্ষা যাতে ব্যর্থ না হয়।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা, “রক্ত স্নাত বিজয়” প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি), ঢাকা কেন্দ্র।
আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তানভীরুল হাসান তমাল প্রমুখ।
আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন বিখ্যাত শিল্পী কনক চাঁপা ও ব্যান্ড তারকা হাসান।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়কে আমরা ধারণ করি আমাদের হৃদয়ে এবং মাথায়। কিন্তু বিজয় তো একটিই নয়। আমাদের বিজয় তো ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬২’র ছাত্র আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, নব্বয়ের স্বৈরাচার পতনের বিজয়। প্রত্যেকটা লড়াইয়েও জীবন দিতে হয়েছে। একইভাবে গত জুলাই-আগস্টে হাজারও ছাত্রজনতা ও সহকর্মীর রক্তের বিনিময়ে বিজয় পেয়েছি। তবে আমরা কি বিজয়ের তাৎপর্য বুঝতে ভুল করেছিলাম? নাকি বিজয় শুধু সাময়িক প্রশান্তির কারণ ছিল। যার জন্য আমরা বিজয়ের সুফল ভোগ করতে পারি নাই।
তিনি বলেন, আমরা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের বিজয় অর্জন করেছিলাম। কিন্তু সেটাকে ধরে রাখতে পারিনি। একাত্তরের বিজয়ের স্মৃতিকে ধারণ করে সচেতনভাবে চিন্তু করতে হবে। আজকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারগুলো কোনো সহায়তা পাননা। এটা খুবই লজ্জার বিষয়। কি অবস্থায় আছে তারা; খোঁজ কে রাখে? বিজয়ের তাৎপর্য অনুধাবন করতে হলে বিজয়ে যার যে অবদান তার স্বীকৃতি দিতে হবে। আইইবি যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরেই তো অনিশ্চয়তা দূর হয়েছিল। যাদের একাত্তরে যারা একাত্তরে যাওয়ার বয়স হয়নি। তারা যেন সেটা ভাবেন। তাহলে ঋণ পরিশোধের দায় পূরণ করা যাবে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, মাইনাস টু ফর্মুলার নামে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে মাইনাস করার চক্রান্ত হয়েছিল। কিন্তু সেটি সফল হয়নি। বরং তাদের করুণ পরিণতি হয়েছে। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের নেপথ্যের মূল কারিগর আমাদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনিই বলেছিলেন- যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি ঘুরে দাঁড়াও তুমিই বাংলাদেশ’, ‘দেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে’ ইত্যাদি স্লোগান তিনিই দিয়েছেন। তিনি লন্ডন থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দেশের জন্য কাজ করছেন। রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রুপরেখা দিয়েছেন। আমরা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সেটি বাস্তবায়ন করবো। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো রাজনৈতিক দল দিতে পারেনি। আজকে আমাদেরকে সরকারের বিরুদ্ধে মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে।
প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু বলেন, বাঙালি জাতির অনেক অর্জন। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর, ৭৫’র ৭ নভেম্বরে এবং নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিদায়। তবে অনেক অজর্নকে আমরা ধরে রাখতে পারিনি। এবার জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান কোনো ব্যক্তি বিশেষের নয়। এটা ছাত্রজনতার সম্মিলিত ফসল। যা একদিনে গড়ে ওঠেনি। ১৭ বছরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে। সবশেষে আমাদের ছাত্র, ছোট ভাই ও জনগণ রক্ত দিয়ে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। মা-বোনেরা শিশু সন্তান নিয়ে রাজপথে নেমেছেন। যেমনটি আমরা একাত্তরেও দেখেছি
আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী কেএম আসাদুজ্জামান চুন্নুর সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন, এ্যাবের নেতা প্রকৌশলী আফজাল হোসেন সবুজ, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, আইইবির কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী খান মঞ্জুর মোরশেদ, নিয়াজ উদ্দিন ভূঁইয়া, আল-আমিন, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আহসানুল রাসেল, মোহাম্মদ মাহবুব আলম, সাব্বির আহমেদ ওসমানী, নূর আমিন লালন, ঢাকা কেন্দ্রের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন, কামরুল হাসান উজ্জ্বল, অ্যাব’র সহসভাপতি প্রকৌশলী মো. মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, আজিম উদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব আল মামুন গাজী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম রাব্বি সঞ্চয়, ফয়সাল মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার সজল, মোহসীন আলী, শফিকুল ইসলাম খান, জহির উদ্দিন, সাজ্জাদ হোসেন, রায়হান নবী, প্রকৌশলী হানিফ, মোহাম্মদ আরিফ, শরিফুল বাবু, মিনহাজ, সিরাজুল ইসলাম, মোহাম্মদ নেসার উদ্দীন, বিজু বড়ুয়া, কামরুল হাসান খান সাইফুল, প্রকৌশলী ডালাস, করিম, ওসমান গনি, গোলাম রহমান রাজীব, প্রকৌশলী আইয়ুব, জাহাঙ্গীর আলম, মহিঊদ্দিন সেলিম, রুহুল আমিন, নাজনিন আক্তার, আজম খান চৌধুরী ও মো. আব্দুর রাজ্জাক, শাহরিয়ার পারভেজ, জাহিদু রহমানসহ আইইবি ও এ্যাবের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।