বিপিএলের শুরু থেকে টানা ৮ জয়ে অপরাজিত থেকে প্লে অফ নিশ্চিত করা রংপুর রাইডার্স শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে বেশ শক্তভাবে নেমেছে। এবার প্লে অফ পর্বে কোন ঝুকি নিতে চাচ্ছে না তিন ম্যাচ টানা হারতে থাকা দলটি। তাই বিশ্বখ্যাত তারকা খেলোয়াড়দের নিজেদের দলে ভেড়াচ্ছে উত্তরাঞ্চলের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। যেখানে নাম আছে অজি তারকা ডেভিড ওর্য়ানার, ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল, সুনিল নারিন ও পাকিস্তানের ইউসুফ আলীর মতো খেলোয়াড়দের।

রংপুরের হয়ে ব্যাট-বলে বেশ ফর্মে ছিলেন পাকিস্তানের খুশদিল শাহ। ধারাবাহিক পারফর্মেন্সে আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের স্কোয়াড নির্বাচকদের নজরে পড়ে যান তিনি। তাই জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পরই ছাড়তে হয় রংপুর শিবির। তার অনুপস্থিতিতে দলের ছন্দ হারিয়ে গেলেও প্লে অফ আগেই নিশ্চিত করায় ভোগতে হচ্ছে না দলটিকে। তবে প্লে অফে কোন ঝুকি নিতে চাচ্ছে না রংপুর রাইডার্স।

চিটাগং কিংসের বিপক্ষে হারের পর আজ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন রংপুর ম্যানেজার আহসান উর রহমান মল্লিক। তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা কিছুটা দুর্ভাগা। খুশদিল শাহর ৭ তারিখ পর্যন্ত অনুমতি ছিল। হঠাৎ করে (ক্যাম্পে) ডাক পেল। কোয়ালিফায়ারের জন্য আমরা যাদের সঙ্গে কথা বলার, আপনারা তো দেখছেনই... সময়মতো আমাদের ক্রিকেটাররা চলে আসবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু টানা দুই ম্যাচ, তাই খুব দ্রুত কাউকে আনতে পারছি না। কারণ সবাই খেলার মধ্যে আছে, সবারই টুর্নামেন্ট আছে। তাই কালকের ম্যাচটা হয়তো আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তবে ৩ তারিখে…।’ এরপরে আর কিছু বলতে চাননি তিনি।

তবে রংপুর রাইডার্স সুত্রে জানা গেছে, প্লে অফকে সামনে রেখে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার ও টিম ডেভিড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল ও সুনিল নারিন এবং পাকিস্তানের আসিফ আলির সঙ্গে চুক্তি হলেও তারা কবে নাগাদ শিবিরে যোগ দিতে পারবেন তা এখনও নিশ্চিত নয় দলটি।

কারণ আইএলটি-টোয়েন্টিতে আবু ধাবি নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলছেন নারিন ও রাসেল। আর বিগ ব্যাশের ফাইনাল খেলার পর আমিরাতের টুর্নামেন্টে দুবাই ক্যাপিটালস দলে যোগ দেওয়ার কথা ওয়ার্নারের। সেখানে গালফ জায়ান্টসের হয়ে খেলার কথা টিম ডেভিডের। বিপিএল খেলতে হলে সেখানের পাঠ চুকিয়ে আসতে হবে তাদের।

মাত্র ৭৪ রানের চ্যালেঞ্জ! জয়টা তো হাতের মুঠোয় নিয়েই মাঠে নেমে ছিল ফরচুন বরিশাল। শুধু দেখার ছিল তামিম ইকবালের দল কতো তাড়াতাড়ি ঢাকা ক্যাপিটালসের রান টপকে যায়। চটজলদিই লক্ষ্যে পা রাখে বরিশাল।

রীতিমতো ফুঁ দিয়ে ঢাকা ক্যাপিটালসকে উড়িয়ে দিয়েছে ফরচুন বরিশাল। ৯ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে তারা, ৮১ বল হাতে রেখেই! বিপিএলে এটিই বেশি বল বাকি থাকতে জয়। ২০১৭ সালের আসরে সিলেট সিক্সার্সের ১০২ রানের লক্ষ্য ৭৩ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলেছিল ঢাকা ডায়নামাইটস।

ঢাকাকে হারিয়ে ১১ ম্যাচে ৯ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিল টপার হয়েছে তামিম ইকবালরা। অন্যদিকে এ হারে প্লে-অফে ওঠার সামান্য যে সম্ভাবনাটুকু ছিল তাও শেষ হয়ে গেল ঢাকার।

টস হেরে আজ বুধবার ব্যাট করতে নেমে ১৫.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৭৩ রানে থামে ঢাকা ক্যাপিটালস। জবাবে ৭৪ রানের লক্ষ্যে তাড়ায় নেমে ৬.৩ ওভারে জয়ের বন্দরে নোঙর করে তামিম ইকবালের বরিশাল।

মিরপুরের চেনা উইকেটে যেনো রান তুলতে ভুলেই গেলেন লিটন দাসরা। দলের ওপেনিং থেকে শুরু করে শেষপর্যন্ত কেউই নিজের ইনিংসকে ২০ রান অব্দি নিয়ে যেতে পারলেন না। শেষপর্যন্ত মাত্র ১৫.৩ ওভারে সবকটি উইকেট বিলীন করে দিয়ে ৭৩ রান তুলে মাঠ ছাড়ে দলটি।

ঢাকার হয়ে সবোর্চ্চ ১৫ (১১) রানের ইনিংস খেলেন লঙ্কান খেলোয়াড় থিসারা পেরারা। অন্য ম্যাচে জ্বলে উঠা লিটনও আজ নিষ্প্রভ ছিলেন। মাত্র ১০ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। ১০ রানে ফেরেন রন্সফোর্ড বিটন। বরিশালের হয়ে মোহাম্মদ নবি ছিলেন দুর্দান্ত। ৪ ওভারে ৯ রানে নেন ৩ উইকেট।ফাহিম আশরাফ ২.৩ ওভারে ১৫ রানে তুলে

জবাবে ৭৪ রানের লক্ষ্যে মাঠে নামা তামিম ইকবাল-তাওহিদ হৃদয়ের ওপেনিং জুটিতে ২১ রান তুলে বরিশাল। ২য় ওভারের শুরুতে মুস্তাফিজের বলে ১৫ (৯) রান করে তাওহিদ হৃদয় সাজঘরে ফিরলে দলের হাল ধরেন ১৬ বলে ৩৭ রানের জড়ো ইনিংস খেলা ডাভিড মালান। শেষ পর্যন্ত ১ উইকেট হারিয়ে তামিম-মিলান অপরাজিত জুটিতে ৬.৩ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌছে যায় তামিমরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

ঢাকা ক্যাপিটালস: ১৫.৩ ওভারে ৭৩/১০ (থিসারা ১৫, লিটন ১০; নবী ৩/৯)
ফরচুন বরিশাল: ৬.৩ ওভারে ৭৭/১ (মালান ৩৭(১৬)* তামিম ২১(১৪)*
ফল: ফরচুন বরিশাল ৯ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: ডাবিড মালান

ব্যাট করতে যেনো ভুলেই গেল ঢাকা ক্যাপিটালস। বিপিএলে আজ ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ম্যাচে উ্ইকেটে আসা যাওয়ার দায়টুকুই যেনো সারলেন দলটির ব্যাটাররা। তাতেই লজ্জার এক ইনিংস গড়ল চিত্রনায়ক শাকিব খানের দল।

মিরপুরে আজ বুধবার বরিশালের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৭৩ রানে অল আউট হয়ে গেছে ঢাকা। বরিশালের মোহাম্মদ নবী, তানভির ইসলাম ও ফাহিম আশরাফ নেন ৩টি করে উইকেট।

মিরপুরের উইকেটে রান তুলতে ভুলেই গেলেন লিটন দাসরা। দলের ওপেনিং থেকে শুরু করে শেষপর্যন্ত কেউই নিজের ইনিংসকে ২০ রান অব্দি নিয়ে যেতে পারলেন না। শেষপর্যন্ত মাত্র ১৫.৩ ওভারে সবকটি উইকেট বিলীন করে দিয়ে ৭৩ রান তুলে মাঠ ছাড়ে দলটি।

ঢাকার হয়ে সবোর্চ্চ ১৫ (১১) রানের ইনিংস খেলেন লঙ্কান খেলোয়াড় থিসারা পেরারা। অন্য ম্যাচে জ্বলে উঠা লিটনও আজ নিষ্প্রভ ছিলেন। মাত্র ১০ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। ১০ রানে ফেরেন রন্সফোর্ড বিটন।

বরিশালের হয়ে মোহাম্মদ নবি ছিলেন দুর্দান্ত। ৪ ওভারে ৯ রানে নেন ৩ উইকেট।ফাহিম আশরাফ ২.৩ ওভারে ১৫ রানে তুলেন ৩ উইকেট। ২ ওভারে ২ রানে ৩ উইকেট নেন তানভির ইসলাম।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলতি আসরে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক নিয়ে বেশ জলঘোলা হয়েছে। তাতে বিপিএলের আয়োজনের সক্ষমতা নিয়ে দেশ থেকে শুরু করে আর্ন্তজাতিক অঙ্গনেও প্রশ্ন উঠছে! এবার সেই বিষয়ে মুখ খুললেন বিপিএলে খুলনা টাইগার্স অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।

বিপিএলের নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি দুর্বার রাজশাহীর খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক বিলম্বের ঘটনাটি বেশ খারাপ লাগার জানিয়ে মিরাজ বলেন, ‘অবশ্যই এতে খারাপ লাগছে। দিনশেষে তো আমরা খেলোয়াড়েরা ক্রিকেট খেলি টাকার জন্য। যদি পারিশ্রমিক না পাই, প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্যই খারাপ।’

সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কাজ করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাই আশাবাদী, যেহেতু ক্রিকেট বোর্ড আমাদের অভিভাবক, ক্রিকেট বোর্ড অবশ্যই এ ব্যাপারে কথা বলবে। তারা আমাদের দায়িত্ব নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের সঙ্গে কথা বলবে।’

সমস্যা যদি সমাধান করা না যায় তাহলে সেটা বিপিএলের জন্য ক্ষতিকর জানিয়ে টাইগার্স অধিনায়ক বলেন, ‘দিনশেষে কিন্তু আমাদের সবারই বদনাম হবে। আমরা যদি এ জিনিসগুলো ঠিকঠাক মতো মেনটেইন না করি, ঠিকঠাক ব্যবহার না করতে পারি; তাহলে সেটা আমাদের ক্রিকেটের জন্য বদনাম হবে। আমাদের সবার বদনাম হবে। সেটি যেন না হয় সেজন্য আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব রয়েছে। আমরা যেভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রিকেট খেলছি, বিশ্বে আমরা ভালো করলে বাহবা দেয়; সে জিনিসটা আমাদের এখানেও বজায় রাখা দায়িত্ব।’

যদিও খুলনা টাইগার্স ম্যানেজমেন্ট নিয়ে এখনও কোনো অভিযোগ শোনা যায়নি। জানা গেছে মিরাজদের টিমে টাকাপয়সা নিয়ে কারো অভিযোগ নেই, অন্যান্য দিক দিয়েও তাদের কার্যক্রম বেশ পরিচ্ছন্ন। মিরাজ জানিয়েছেন, পূর্ব প্রতিশ্রুত ৪০ শতাংশ টাকা পেয়ে গেছেন তারা। এরইমধ্যে মালিক পক্ষ জানিয়েছে, এ সপ্তাহের মধ্যে আরো ৩০-৩৫ শতাংশ টাকা দিয়ে দেবে।

মাঠের অবস্থা খুব একটা ভালো নয় খুলনার। ১০ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৮ নেওয়া মিরাজরা এখনো প্লে অফ নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে পরের দুই ম্যাচ জিতলেই প্লে অফে নোঙর করতে পারবে মিরাজের দল।