শত্রুদেশের গুলিতে ‘রোলানদো’ হওয়ার স্বপ্ন শেষ ফিলিস্তিনি কিশোরের

, ফিচার

ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2024-12-07 19:31:05

ফুটবল জগতে মেসি-রোনালদো জনপ্রিয় দুই তারকা। এই দুইজনের মতো তারকা ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন প্রায় প্রত্যেক তরুণ ফুটবলারের। অন্যান্য তরুণদের মতো প্রিয় তারকা রোনালদো মতো বিশ্বখ্যাত ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে উঠছিলেন ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর। বিশ্ববিখ্যাত হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে নিয়মিত চর্চা আর কঠোর পরিশ্রমও করতেন তিনি।

কিন্তু পাহাড়সম স্বপ্ন তার অধরা-ই রয়ে গেলো। শত্রুপক্ষের গুলিতে ফুটবল মাঠেই অপূর্ণ স্বপ্ন চোখে নিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন নাজি আল-বাবা নামের ১৪ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি কিশোর।

‘নাজি‘ নামের অর্থ উত্তরজীবী বা যে বেঁচে থাকে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বেঁচে থাকার পরিবর্তে আজ কিশোর অন্ধকার কবরে।

নাজি আল-বাবা’র লাশকে ঘিরে স্বজনদের আর্তনাদ, ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের উত্তর হেব্রনে বাবা-মা এবং ৫ ভাইবোনের পরিবারে বসবাস করতো নাজি। প্রতিদিন স্কুলের ক্লাস শেষে বন্ধুদের সাথে ফুটবল প্র্যাকটিসে যেতেন হালহুলের খেলার ক্লাবে।

প্রতিদিনের মতো গত ৩ নভেম্বর স্কুল শেষে দুপুর ১২টা নাগাদ বাবার সাথে বাড়ি ফিরে নাজি। সেদিন বাড়িতে নাজির পছন্দের খাবারও রান্না করেছিল ওর বোনেরা। স্কুল থেকে ফিরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রায় আধঘণ্টা সময় দেয়। এরপর বিকাল ৩টার দিকে খেলার জন্য বাসা থেকে বেরিয়ে যায় নাজি। এই প্রস্থানই ছোট্ট এই কিশোরের বাসা থেকে শেষ প্রস্থান।

নাজির বাবা নাদিম জানান, সাড়ে ৩ টার দিকে নাজির চাচাতো ভাই দৌড়ে এসে চিৎকার করে আমাকে ডাকতে থাকে। সে বলে, জঙ্গলের কাছে খেলতে থাকা কিছু শিশুদের উপর ইসরায়েলি সৈন্যরা গুলি চালাতে শুরু করেছে। সেখানে নাজিও আঘাত পেয়েছে। আমরা সামান্য আঘাতই ভেবেছিলাম। গিয়ে দেখি আমার ছেলে আর নেই।

শোকে বিহ্বল নাজির মা সামাহার আল-জামারা, ছবি: সংগৃহীত

তিনি আরও বলেন, আমি এবং আমার ভাই সামির ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আমার ছেলেকে চাইলাম। প্রায় ১০ জন সৈন্য আমাদের উপর হিংস্রভাবে হামলা করে এবং আমার হাতও ভেঙে দেয়।‘

নাজিকে মেরে ফেলার কারণ জানতে চাইলে ইসরায়েলি সৈন্যরা জানান, নাজি ফিলিস্তিনের নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করেছিল।

এছাড়া, প্রথমদিন নাজির লাশের কাছেও তার পরিবারের সদস্যদের যেতে দেয়নি ইসরায়েলি সৈন্যরা। পরের দিন হাসপাতাল থেকে লাশ নিতে পেরেছে নাজির বাবা।

নাজির পরিবার এখনো বাড়ন্ত বয়সের ছেলেটিকে হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। হাস্যোজ্জ্বল সেই ছেলেটি আর নেই! নিজের শরীরের একটি অংশ যেন চিরতরে হারিয়ে ফেলেছেন নাজির মা সামাহার আল-জামারা।

সূত্র: আল জাজিরা

Related News