রংপুরে অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত তিস্তা
ভোরের শিশির ভেজা ঘাস ও হিম ভাবে শীত মৌসুমকে ঘিরে প্রকৃতি ফিরে পায় তার নতুন যৌবন। নীল আকাশ,নদীর বুক চিরে ভেসে বেড়ানো অতিথি পাখি, সবুজ শ্যামলা প্রকৃতির সৌন্দর্য বেড়ে যায় আরও দ্বিগুণ। প্রকৃতির বুকে প্রেমের টানে বার্তা নিয়ে ছুটে আসে জানা অজানা অতিথি পাখি। প্রকৃতির এই নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে যায় বিনোদন পিপাসুরা।
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত চর এলাকায় অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত এমন দৃশ্যের দেখা মিলে। এই মনোরম দৃশ্যের প্রেমে পড়ে যায় যে কেউ। শীত মৌসুমে প্রকৃতির টানে হাজার হাজার মাইল পথ পেরিয়ে ছুটে আসে অতিথি পাখি। প্রাণ খুলে তাদের উন্মুক্ত বিচরণে যেন প্রকৃতি সৌন্দর্যে পায় পূর্ণতা। তবে সময়ের সাথে সাথে পরিবেশের পরিবর্তনকে ঘিরে দিন দিন অতিথি পাখির বিচরণ কমে যাচ্ছে।
একদিকে ফসলী জমিচাষে ব্যবহৃত হচ্ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক সার এতে হুমকি সরুপ পরিবেশে কমে যাচ্ছে পাখির আনাগোনা। অপরদিকে, পাখি শিকার করে অর্থ আয়ের প্রতিযোগিতায় নেমেছে পাখি শিকারীরা৷ তারা জাল বিছিয়ে অথবা বিষটোপ দিয়ে পাখি নিধনে করে বাজারে দামে বিক্রি করা হয়। সখের বসে পাখি কিনে নিয়ে যায় পাখিপ্রেমীরা।
প্রতিবছর এই অতিথি পাখিরা শুধু জলাশয় এর সৌন্দর্য বৃদ্ধিই করে না বরং প্রকৃতি ও পরিবেশেরও বন্ধু। অতিথি পাখিরা ফসলের ক্ষতিকর কীট পতঙ্গ খেয়ে মানুষের মনের খোরাক বৃদ্ধি ও জীব বৈচিত্র রক্ষায় অতিথি পাখি কৃষকদের সহায়তা করে। এছাড়াও আমাদের দেশে অতিথি পাখিদের অনেক অবদান রয়েছে।
বর্তমানে জানা যায়, মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের ফলে পাখিরা বিষে অক্লান্ত হয়ে কীটপতঙ্গ খেয়ে মারা যাচ্ছে। এতে করে একদিকে প্রকৃতি পরিবেশ উজার হয়ে যাচ্ছে অপরদিকে জলাশয়ের দূষণ বাড়ছে। নগরায়নের ফলে পুকুর নদী-নালা ভরাট হচ্ছে। অতিরিক্ত দর্শনার্থীর উপস্তিতিতে পাখির স্বাভাবিক আচরণও বিনষ্ট হচ্ছে।
অতিথি পাখির আনোগোনার এমন দৃশ্য ধরে রাখতে হলে প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষা, মানুষের মানবিকতা ও সচেতনতাই পারে তাদের নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে। অতিথি পাখি রক্ষার্থে মানুষদের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।