চাঁদাবাজ-দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শেষ হয়নি: জামায়াত আমির

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী | 2025-01-18 14:52:58

চাঁদাবাজ, ঘুষ, মামলা বাণিজ্যকারী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে জামায়াতের রাজশাহী জেলা ও মহানগর শাখা আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকার আলেম ওলামাসহ বিভিন্ন মানুষের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর দুইজন আমিরসহ একজন সেক্রেটারি জেনারেল, তিনজন নায়েবে আমির, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও একজন কার্যনির্বাহী সদস্যসহ মোট ১১ জন দায়িত্বশীল নেতাকে কেড়ে নিয়েছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ যারা করেছে তাদের শত শত কর্মীকে হত্যা করেছে, অসংখ্য ভাই-বোনকে গুম করেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে পঙ্গু করেছে, আহত করেছে, তাদের চাকরি কেড়ে নিয়েছে। তাদের ভিটেমাটি উচ্ছেদ করেছে, ব্যবসা-বাণিজ্য তছনছ করেছে। কাউকে দেশেও থাকতে দেয়নি। হাজার মামলায় তাদের হয়রানি করেছে। লাখো সহকর্মীকে জেলে নেওয়া হয়েছে। 

উপস্থিত রাজশাহীবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, রাজশাহীতে ৫ আগস্টের পর কোনো চাঁদাবাজ আছে? দুর্নীতিবাজ আছে? ঘুষ বাণিজ্য আছে? যদি থেকে থাকে তবে আপনাদের কাছে অনুরোধ, আল্লাহর ওয়াস্তে এসব ছেড়ে দিন। আপনাদের কাছে আমাদের বিনীত নিবেদন। আমাদের অনুরোধ যদি কেউ না মানেন, তাহলে বলতে চাই, আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়নি। ইনসাফ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। বাচ্চারা এখনও স্লোগান দিচ্ছে, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ।’

জামায়াতের আমির আরও বলেন, এই সরকার আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করে পশুর মতো গুলি করেছিল। অনেক লাশ গুম করা হয়েছিল। লাশ পুড়িয়ে ছাই হয়ে গেছে। এখনও বহু জায়গায় গেলে তারা আমাদের কাছে তাদের সন্তানের খবর চায়।

রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির মাওলানা ড. কেরামত আলীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মো. সাহাবুদ্দিন।

মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডলের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, পাবনা জেলা আমির আবু তালেব মণ্ডল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমির আবু জার গিফারি, নাটোর জেলা আমির ড. মীর নূরুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা আমির খন্দকার মো. আব্দুর রাকিব, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস রাজশাহী মহানগর সভাপতি মুফতি মোহাম্মদ আবুল বাশার, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ রাজশাহীর আহ্বায়ক মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমী প্রমুখ।

স্থানীয় নেতাদের মধ্যে রাজশাহী মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির এডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম, সাংগঠনিক সেক্রেটারি জসিম উদ্দিন সরকার, যুব বিভাগীয় সেক্রেটারি সালাহ উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী ছাত্রশিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ, রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি শামীম উদ্দিন, জেলা পূর্ব সভাপতি রুবেল আলী, জেলা পশ্চিমের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক নওসাজ জামান, নগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুল, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নগর সভাপতি অধ্যাপক আবদুস সামাদ, রাজশাহী জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নাজমুল হক, জেলার শ্রমিক কল্যাণ সভাপতি অধ্যাপক কামরুজ্জামান, রাজশাহী বিভাগের উলামা সেক্রেটারি মাওলানা রুহুল আমিন, রাজশাহী জেলার মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মাওলানা এফ এম ইসমাইল আলম।

রাজশাহী মহানগরের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাজশাহী জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল খালেক।

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জুলাই বিপ্লবের শহীদ সাকিব আনজুমের গর্বিত পিতা মাইনুল হক। এর আগে মাওলানা আরিফুল ইসলামের অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সম্মেলন শুরু হয়।

Related News