মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে চবির চারুকলার শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
চট্টগ্রাম নগরীতে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়ার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নেমেছে ওই বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। আগামীকালকের মধ্যে দাবি আদায় না হলে অনশনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে নগরীর চারুকলার পাশে বাদশামিয়া সড়কটি বন্ধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তবে সেশনজট কমাতে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নেবেন বলেও জানান।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা, বাদশা মিয়া সড়কের দুপাশে বেঞ্চ ও বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেট দিয়ে রাখা হয়েছে। রাস্তায় প্রায় ২০ জন মতো শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন। সড়কের মাঝখানে আগুন জ্বালিয়ে রাখা হয়। এসময় দুদিক থেকে আসা ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলকে ফিরেয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে রোগীবহণ করা কোনো গাড়ি বা অটোরিকশা আসলে তাদের যেতে দেওয়া হচ্ছে।
এসময় অন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে চারুকলায় তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া তৈমুর মামুন বার্তা২৪.কমকে বলেন, দাবি আদায়ের জন্য আমরা গতকাল প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছি। আজকে দুপুরের পর থেকে রাস্তায় নেমেছি। আমরা চাই শহর থেকে মূল ক্যাম্পাসে আমাদের নিয়ে যাওয়া হোক। আমাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ যোগাযোগ করেনি এখনো। তবে স্যারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেছে হয়ত। আমাদের দাবি না মানলে আমরা কালকে থেকে মূল ক্যাম্পাসে অনশনে যাব।
এক শিক্ষার্থী জানান, আগে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের নানানভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়া হচ্ছে। কাউকে কাউকে ফেল করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষার এক বছর পরে ফলাফল দিচ্ছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রতি নানা অসংগতি ও বৈষম্য করছেন শিক্ষকেরা। এসবের প্রতিবাদেই আমরা তালা দিয়েছি।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়া জানান, যেসব শিক্ষার্থীরা ফেল করেছে এবং ফল খারাপ হয়েছে তারা তালা দিয়েছেন এবং বিষয়টি প্রক্টরকে জানানো হয়েছে। প্রক্টর ব্যবস্থা নেবেন।
জানা গেছে, মূল ক্যাম্পাসের ফেরার দাবিতে এর আগে দুইবার আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ১১ দাবিতে ২০২২ সালের নভেম্বরে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ইনস্টিটিউট নগর থেকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিতে তারা এক দফা দাবি দেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত বছর ২ ফেব্রুয়ারি চারুকলায় সশরীর শ্রেণি কার্যক্রম এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের চারুকলা ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। ভবন সংস্কারের কথা বলে কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নেয়। এরপরও শিক্ষার্থীরা মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে আন্দোলন করতে থাকেন। তবে একপর্যায়ে সেশনজট কমাতে গত বছর ৩ মে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল থেকে তারা আবার আন্দোলন শুরু করেছেন।