প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে সুপারিশপ্রাপ্তদের যোগদানের দাবি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩ এর তৃতীয় ধাপে সুপারিশপ্রাপ্ত ৬৫৩১ জন শিক্ষকের দ্রুত যোগদানের দাবি জানিয়েছে সুপারিশপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকবৃন্দ তৃতীয় ধাপ।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়েছে। মানববন্ধনের আয়োজন করেছে সুপারিশপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকবৃন্দ তৃতীয় ধাপ।

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম এবং অপেক্ষমান তালিকা থেকেও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে প্রহসন যেন থামছেই না। ২০২৩ সালের ১৪ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গতবছরের ২৯ মার্চ। এ ধাপের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয় গতবছরের ২১ এপ্রিল এবং ১২ জুন ভাইভা সম্পন্ন হয়। ৩১ জন হাইকোর্টে রিট করে, যারা সুপারিশপ্রাপ্ত হয়নি। এরই প্রেক্ষিতে ৬৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত হয়ে যায়। ইতিমধ্যে চেম্বার জজ আদালত, আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্টে ৪টি শুনানির পরও কোন সুরাহা হয়নি।

তারা বলেন, গতবছরের ১১ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৫ ডিসেম্বর জেলা শিক্ষা অফিস এবং ৮ ডিসেম্বর স্কুল পদায়ন সম্পর্কিত নিয়োগ আদেশ জারি করা হয়। নিজ নিজ জেলা সিভিল সার্জনে মেডিকেল টেস্ট এবং জেলা শিক্ষা অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাদানও সম্পন্ন করা হয়েছে। অনেক জেলার কিছু কিছু উপজেলায় চূড়ান্ত সুপারিশ প্রাপ্তরা যোগদানপত্রও হাতে পেয়েছে। চূড়ান্ত সুপারিশ প্রাপ্ত হওয়ার পরও যোগদান করতে না পেরে ৬৫৩১টি পরিবার এ অনাকাক্ষিত পরিস্থিতির জন্য ভুক্তভোগী এবং সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে। সবাই একপ্রকার মানসিক বিপর্যয় ও মানবেতর জীবনযাপন করছি।

বিজ্ঞাপন

তারা আরও বলেন, আর কত ধৈর্য্য ধরতে হবে। এভাবে আর কতদিন মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে? এখন আমাদের থাকার কথা নিজ নিজ কর্মস্থলে অথচ আমরা আজ রাস্তায়। এ কেমন প্রহসন আমাদের সাথে? গতবছরের ৫ তারিখে আমাদের যোগদান করার কথা কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে আমরা যোগদান করতে পারিনি। ৫টি শুনানির পরও আমরা কোনো আশানুরূপ ফল পাচ্ছি না। এর দায়ভার আসলে কে নিবে? আমরা এক প্রকার মানবেতর জীবন-যাপন করছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই সরকারি চাকরি করতেন তারা এই প্রাথমিকে যোগদান করার জন্য কর্মরত চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। অনেক পরিবারে হয়তো তিনিই ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। আজ সে বেকার হওয়ার কারণে তার পুরো পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। সবাইকে আজ কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কিন্তু আমরা কি এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী?

বক্তারা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশ করেছে। আর এতে করে আমরা ৬৫৩১ জন চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। এটাই কি আমাদের অপরাধ? চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও যোগদান করতে না পারা কতটা কষ্টের তা কি বুঝেন আপনারা? নিয়োগপত্র পাওয়ার পরও কর্মস্থলে যোগদান করতে না পেরে আজ রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হচ্ছে। এটা যে কতটা বেদনাদায়ক তা কেবলমাত্র একজন ভুক্তভোগী বুঝতে পারবে। আমাদের মধ্যে অনেকেরই বয়স শেষ তাদের আর কোনো চাকরিতে আবেদন করার সুযোগও নাই। তাদের জীবনের দায়ভার আসলে কে নিবে? ফলাফল প্রকাশের দীর্ঘদিন পার হওয়ার পরও যোগদান করতে পারছি না। আমাদের একটাই দাবি দ্রুত এর সমাধান করে আমাদের যোগাদানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

এসময় মানববন্ধনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকবৃন্দ ৩য় ধাপের সমন্বয়ক তালুকদার পিয়াস, জেরিন, নওরীন, লিজা আক্তারসহ প্রায় দুই থেকে তিন শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।