গতকাল রাতের প্রথম প্রহরে নিজের ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন এ সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আপন মনে গাইছেন তিনি। ফারিণ এদিন ব্রিটিশ গায়ক ল্যাবরিন্থের ‘জেলাস’ গানটি কাভার করেন।
গানের ভিডিওর সঙ্গে গান নিয়ে নিজের অনুভূতিও ভক্তদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন। ফারিণ লিখেছেন, ‘গান গাওয়া আমার জন্য থেরাপির মতোই। যখনই মন খারাপ হয়, গানে ধ্যানমগ্ন হয়ে যাই।’
বিজ্ঞাপন
গানই তাকে বাঁচিয়ে রাখে উল্লেখ করে অভিনেত্রী আরও লিখেছেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে এত বিশৃঙ্খলার মধ্যে আমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু সংগীতের সঙ্গেই দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। গান ভালো-মন্দে সব সময় পাশে ছিল। এই মধ্যরাতে সেটা আবারও মনে করিয়ে দিল, বেঁচে থাকার জন্য আমাকে গাইতেই হবে।’
ছোটবেলায় গুরু ধরে গান শিখেছেন ফারিণ। জাতীয়, বিভাগীয় পর্যায়ে গান করে অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। তবে গায়িকা ফারিণের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে চলতি বছর ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে। তাহসানের সঙ্গে তার গাওয়া ‘রঙে রঙে রঙিন হব’ শিরোনামের সেই গানটি দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল। সুর ও সংগীত করেছেন ইমরান মাহমুদুল। শোনা যাচ্ছে তিনি আরেকটি নতুন গানে কন্ঠ দিয়েছেন। যদিও এই মুহূর্তে সে গান নিয়ে কোন তথ্য দিতে চাইছেন না ফারিণ।
গান ছাড়াও ফারিণ আলোচনায় ভিকি জাহেদের ওয়েব সিরিজ ‘চক্র’ দিয়ে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আই স্ক্রিনে মুক্তির পর ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে সিরিজটি।
এছাড়া সম্প্রকি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ‘বঙ্গ’র ফিল্ম ‘হাউ সুইট’-এ। কাজল আরিফিন অমির এই রোমান্টিক কমেডি গল্পে ফারিণের বিপরীতে দেখা যাবে ছোটপর্দার সুপারস্টার জিয়াউল ফারুক অপূর্বকে। ছবিটি আগামী বছরের ভালোবাসা দিবসে মুক্তি পাবে।
বলিউড সুপারস্টার রণবীর কাপুর ব্লকবাস্টার ‘ধুম’ সিরিজের ৪র্থ কিস্তিতি যোগ হওয়ার পর ছবিটি এখন আলোচনার শীর্ষে। রণবীরের পর ‘ধুম ৪’-এর খলনায়কের চরিত্রে কে থাকবেন সেটিও সামনে আসে। রণবীরের মুখোমুখি হবেন দক্ষিণি সুপারস্টার সুরিয়া।
তবে নায়িকা কে হচ্ছেন তা জানানো হয়নি এখনো। ফলে এখন সবার আগ্রহ রণবীর কাপুরের বিপরীতে কে থাকবেন তা জানার।
ক’দিন ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, রণবীরের সঙ্গে জুটি হয়ে ‘ধুম ৪’ মাতাতে আসছেন শ্রদ্ধা কাপুর। শ্রদ্ধার বিশাল ভক্ত-অনুসারী খবরটি পেয়ে বেজায় খুশি। আবার কেউ কেউ এই খবরে অবাকও হয়েছেন। কারণ, বলিউডপ্রেমীদের জানতে বাকী নেই যে শ্রদ্ধা কাপুর আর ‘ধুম’ সিরিজের প্রযোজনা সংস্থা যশরাজের সম্পর্ক একদমই ভালো না।
বলিপাড়ায় এও গুঞ্জন রয়েছে, শ্রদ্ধার ক্যারিয়ারে বরং বাঁধা সৃষ্টি করেছে যশরাজ। অনেকেই জানেন, শক্তি কাপুর কন্যা শ্রদ্ধার বলিউড অভিষেক হয়েছিলো এই যশরাজের হাত ধরেই ‘তিন পাত্তি’ ছবিতে। যশরাজ যে তারকাদের লঞ্চ করে তাদের সঙ্গে শুরুতেই তিনটি ছবির চুক্তি করে। সেই ছবি তিনটি না করে তারা অন্য কোন প্রজেক্ট করতে পারেন না। যেমনটি করেছেন রণবীর সিং, আনুশকা শর্মা, পরিনীতি চোপড়া, ভূমি পেডনেকার, বানী কাপুর, শর্বরী বাগ প্রমুখ। কিন্তু শ্রদ্ধা তা করেননি। যশরাজের পর পর দুটি ছবি ফ্লপ হবার পর সেই চুক্তি না মেনে তিনি ‘আশিকি ২’ ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হন। যা তার ক্যারিয়ারে দারুণ সাফল্য এনে দেয়।
কিন্তু যশরাজ সিদ্ধান্ত নেয় কখনোই শ্রদ্ধার সঙ্গে কাজ করবেন না। এমনকি যশরাজের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকায় করণ জোহরের ধর্মা প্রোডাকশনসও শ্রদ্ধাকে বয়কট করে। অবশেষে ‘ধুম ৪’-এ যদি শ্রদ্ধা সত্যি কাজ করেন তাহলে সেই মন কষাকষির অবসান হবে।
যাই হোক, গতকাল মুম্বাইয়ে এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে ‘ধুম ৪’ প্রসঙ্গে একেবারেই ভিন্ন কথা বলেন শ্রদ্ধা। তার ভাষ্য, ‘আমি এখনো কোনো ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হইনি। আমি জানি না এসব গুজব কীভাবে ছড়ায়! অনেক খবরে দেখলাম, আমি নাকি চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। সত্যিটা হলো, আমি এখনো প্রস্তাবই পাইনি।’
এরইমধ্যে গুঞ্জন থেমে নেই। আজ ভারতের একাধিক গণমাধ্যম প্রকাশ করেছে ‘ধুম ৪’-এর দেখা যেতে পারে এ সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা কিয়ারা আদভানিকে। আরেকটি চরিত্রে অভিনয়ের কথা শোনা যাচ্ছে যশরাজের ঘরের মেয়ে শর্বরী বাগের।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরটা অবশ্য দুর্দান্ত কাটছে শ্রদ্ধার। অমর কৌশিকের ‘স্ত্রী ২’ দিয়ে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন তিনি। হরর-কমেডি সিনেমাটি বক্স অফিসে ৮০০ কোটি রুপির বেশি আয় করেছে। তিনিই এখন বলিউডের সবচেয়ে বেশি আয় করা ছবির নায়িকা। এমনকি এই ছবিতে তিনি ছাড়া আর কোন সুপারস্টার অভিনয় করেননি। ফলে ছবির এই বিরাট সাফল্যের জন্য তার ভূমিকা কতোখানি তা সহজেই অনুমান করা যায়।
হোটেলের বারান্দা থেকে পড়ে মারা গেছেন বিশ্ববিখ্যাত ব্যান্ড ‘ওয়ান ডিরেকশন’-এর সদস্য লিয়াম পেইন। গত (১৬ অক্টোবর) আর্জেন্টিনার বুয়েনস অ্যাইরেসের একটি হোটেলের বাইরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। এ ঘটনা বেশ ব্যথিত করেছে বিশ্বজুড়ে তার ভক্তদের। গায়কের এমন অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারেননি অনেকেই।
এদিকে ময়নাতদন্তের পর নতুন তথ্য সামনে এসেছে লিয়াম পেইনের মৃত্যুকে ঘিরে। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, আর্জেন্টিনার প্রসিকিউটর অফিস নিশ্চিত করেছে যে লিয়াম পেইন একাধিক ট্রমার কারণে মারা গিয়েছেন। যার ফলে বুয়েন্স অ্যাইরেসের হোটেলের বারান্দা থেকে পড়ার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছিল। বুয়েন্স অ্যাইরেসের জরুরি পরিষেবার প্রধান প্রকাশ করেছেন যে পেইনের মৃত্যু ‘ক্রেনিয়াল ফ্র্যাকচার এবং অত্যন্ত গুরুতর আঘাতের’ কারণে হয়েছে।
একটি নতুন ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে যে তার মাথার আঘাতগুলো মারাত্মক ছিল। এ ছাড়া তার হোটেলরুমে পাওয়া পদার্থগুলো সম্ভাব্য অ্যালকোহল এবং ড্রাগ সেবনের ইঙ্গিত দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেইন একাধিক আঘাত এবং অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক রক্তক্ষরণের কারণে মারা গিয়েছেন।
আর্জেন্টিনার ময়নাতদন্ত-পরবর্তী রিপোর্টে বলা হয়েছে, লিয়াম পেইনের মৃত্যুতে তারা একাধিক অসংগতি খুঁজে পেয়েছেন, যার ফলে তার মৃত্যুর কারণকে প্রশ্নবিদ্ধ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
যদিও সব কিছু ইঙ্গিত দেয় যে মৃত্যুর আগ মুহূর্তে সংগীতশিল্পী একা ছিলেন এবং তিনি মাদকের অপব্যবহার থেকে এক ধরনের প্রাদুর্ভাবের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন, যার ফলে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনি চতুর্থ তলার বারান্দা থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা যান।
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে পেইনের শরীরে ২৫টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, যা মূলত উঁচু থেকে পড়ে যাওয়ার কারণেই হয়েছে। এমনকি তার মাথার আঘাতগুলো মারাত্মক ছিল।
ওয়ান ডিরেকশন ব্যান্ডের কম্পোজার ও গিটারিস্ট ছিলেন পেইন। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই ওয়ান ডিরেকশনের অংশ হন পেইন।
২০১৬ সালে ব্যান্ডটি ভেঙে যায়। এর পর থেকে এই ব্যান্ডের শিল্পীরা এককভাবে কাজ করছেন। একাধিক অ্যালবামে হ্যারি স্টাইল, জেইন মালিকের সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন পেইন।
দুই বাংলার তুমুল জনপ্রিয় দুই চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা আর শ্রাবন্তী চ্যাটার্জি। দুর্দান্ত অভিনয় দক্ষতার পাশাপাশি ডাকসাইটে সুন্দরী হিসেবেও এই দুই নায়িকার রয়েছে আলাদা গ্রহণযোগ্যতা। নয় থেকে নব্বই সব বয়সী পুরুষ তাদের ওপর ক্রাশ খায়। বয়সকে যেন মুঠোবন্দী করে রেখেছেন এই লাস্যময়ীরা।
পূর্ণিমা আর শ্রাবন্তী দুজনই জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের সঙ্গে। শাকিবের ক্যারিয়ারে পূর্ণিমার সঙ্গে বেশকিছু হিট ছবি রয়েছে। আর শ্রাবন্তীর সঙ্গেই ‘শিকারী’ ছবিতে অভিনয় করে ক্যারিয়ারে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন শাকিব খান।
এবার একসঙ্গে দেখা যাবে শাকিব খান, পূর্ণিমা ও শ্রাবন্তীকে। তবে সিনেমার পর্দায় নয়, বিদেশের একটি ইভেন্ট মাতাবেন এই জনপ্রিয় তিন তারকা।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা প্রাপ্তির পর ঢাকাই ছবির শীর্ষ নায়ক শাকিব খানকে নিয়ে দুবাইয়ে নানা আয়োজনের স্বপ্ন দেখেছেন একাধিক পরিচালক ও ব্যবসায়া প্রতিষ্ঠানের কর্তারা। ক’দিন আগেই বেশ মোটা অংকের টাকায় তিনি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন দুবাইয়ের এনআরআই জুয়েলারির ব্র্যান্ড-এর অ্যাম্বাসেডর হিসেবে। প্রতিষ্ঠানটিরই একটি শোরুম উদ্বোধন করতে দুবাই যাচ্ছেন এই নায়ক।আগামী ২৬ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটির ৬ষ্ঠ শাখা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন ঢালিউড কিং। সঙ্গে থাকবেন চিত্রনায়িকা দিলারা হানিফ পূর্ণিমা, কলকাতার অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়সহ একঝাঁক তারকা। একই মঞ্চে থাকবেন সাবেক তারকা ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল।
ইতোমধ্যে ভিডিও বার্তায় নিজেদের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্পীরা। কোটি টাকা ব্যয়ে দুবাইয়ে কোন বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের এমন আয়োজন এবারই প্রথম। একই আয়োজনে যোগ দিবেন সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার বেশ কয়েকজন তারকা শিল্পী।
আয়োজকরা জানান, এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে প্রিয় তারকাদের দেখতে দুবাই গোল্ড সুকের এশিয়া অঞ্চলে অন্তত ২০ হাজার দর্শক উপস্থিত থাকবেন। দুবাইয়ের বিখ্যাত গোল্ড বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এনআরআই জুয়েলারি তাদের অবস্থান ক্রেতা-দর্শনার্থীর কাছে জানান দিতে এমন আয়োজন বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে আগামীকাল থেকে মুম্বাইতে ‘বরবাদ’র শুটিং শুরু হবে। শোনা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহে থেকেই বরবাদের শুটিংয়ে অংশ নেবেন শাকিব খান।
চিত্রনায়িকা নিপা আহমেদ রিয়েলির চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় ২০২১ সালে অনন্য মামুন পরিচালিত ‘মেকাপ’ সিনেমার মাধ্যমে। হাতে রয়েছে ঈদুল ফিতরের উদ্দেশ্যে নির্মিত ‘খোদা হাফেজ’ সিনেমাটি। এই নায়িকা বার্তা২৪.কমের ক্যামেরার ধরা দিয়েছেন ভিন্ন আমেজে। তার সঙ্গে কথা বলেছেন মাসিদ রণ
মাসিদ রণ: আপনার তৃতীয় ছবি ‘খোদা হাফেজ’-এর টিজার মুক্তি পেয়েছে। ছবিটি নিয়ে জানতে চাই...
নিপা আহমেদ রিয়েলি: টিজারে আমরা বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি। দর্শক বলেছে, আমাকে তারা নতুনভাবে দেখতে পাচ্ছে। আসলেই তাই, এর আগে আমার যে দুটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে (‘মেকাপ’ আর ‘ক্যাসিনো’) তাতে গ্ল্যামারাস চরিত্রে অভিনয় করেছি। তবে এই সিনেমায় আমাকে একেবারেই সাদামাটা একটা মেয়ের চরিত্রে দেখা যাবে। ছবিটির শুটিং পুরোপুরি শেষ। শুধু একটি গানের কাজ বাকী। পুরো শুটিং দেশে হলেও গানের শুটিং করতে আমরা বিদেশের লোকেশনে যাব বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনিক বিশ্বাস পরিচালিত এই ছবিতে আমার বিপরীতে আছেন সাঞ্জু জন আর নবাগত দিদার। ঈদুল ফিতরে ছবিটি মুক্তির পরিকল্পনা করছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। আশা করছি দর্শক ছবিটি পছন্দ করবেন।
মাসিদ রণ: হাতে আর কোন কাজ আছে?
নিপা আহমেদ রিয়েলি: আমি আসলে সিনেমার অভিনেত্রী হিসেবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছি। তাই যে কোন কাজ পেলেই করছি না। শুধু টাকার কথা ভাবলে হয়তো মডেলিং, টিভি নাটক কিংবা শো রুম উদ্বোধনের কাজগুলো করতাম। শুধু ভালো মানের সিনেমাতেই কাজ করতে চাই, যাতে দর্শকের একটা আস্থা তৈরি হয় আমার ওপর।
তবে বর্তমান সময়ে ওটিটি দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই সিনেমার পাশাপাশি একটি ওয়েব সিরিজের কাজ করেছি। সেটিও পরিচালনা করেছেন আমাদের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নির্মাতা সৈকত নাসির। সিনেমার আদলেই ‘নেটওয়ার্ক’ নামের সিরিজটির শুটিং করেছেন তিনি। আমরা পরপর দুই সিজনের কাজ শেষ করেছি। এখন ভালো একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাবে সিরিজটি। এই সিরিজে আমাকে অ্যাকশন লেডি হিসেবে দেখতে পাবেন দর্শক।
আমার কাজের দিকে খেয়াল করলে দেখবেন প্রতিটি চরিত্রই একটি থেকে আরেকটি ডিফরেন্ট। আমি আসলে অভিনয়টা খুব ভালোবাসি। অভিনয় নিয়ে অনেক দূর যেতে চাই। তাই নিজেকে সব ধরনের চরিত্রে দেখতে চাই।
মাসিদ রণ: অভিনয় ব্যস্ততার মাঝে প্রেম-ভালোবাসার জন্য সময় পান?
নিপা আহমেদ রিয়েলি: আমি আসলে এখনই ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই না। আমি চাই আমার কাজ নিয়েই যেন আমাকে নিয়ে আলোচনা হয়। এজন্য দেখবেন আমাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অতোটা চর্চা নেই। কারণ, খুবই সচেতন থাকি এসব নিয়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রল হতে হবে এমন কোন কাজ বা এমন কোন কথা বলি না। এমনকি যে সব টক শোতে শিল্পীদের ডেকে নিয়ে ব্যক্তিগত বিষয়, জামা কাপড়ের দাম, সুগার ড্যাডি আছে কি না, এটা কে কিনে দিলো? ওটা কে কিনে দিলো- এসব প্রশ্ন করা হয় সেসব অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানালেও যাই না।
মাসিদ রণ: ঢালিউডে আপনি নতুন। নতুনদেরকে এই ইন্ডাস্ট্রি কতোটা সহজে গ্রহণ করে বলে আপনি মনে করেন?
নিপা আহমেদ রিয়েলি: আসলে নতুন পুরনো সব ধরনের শিল্পী নিয়েই তো ইন্ডাস্ট্রি চলে। ফলে নতুন বলে কাউকে এই ইন্ডাস্ট্রি দূরে সরিয়ে দেয় না। দিলে প্রতি বছর নতুন শিল্পী আসতো না। তবে এটাও ঠিক যে, একজন নতুন শিল্পী নিজেকে প্রমাণ করার জন্য উপযুক্ত সুযোগটুকু সহজে পান না। আমার মনে হয় সুযোগটা অন্তত দেওয়া উচিত, তাহলে না বোঝা যাবে কে কতোদূর যেতে পারবে।
আর নতুনদেরও ইন্ডাস্ট্রিতে আসার আগে কিছু শিখে আসতে হবে। দূর থেকে শোবিজ ইন্ডাস্ট্রির গ্ল্যামার দেখে চলে আসলে হবে না। এটাও অনেক কষ্টের জায়গা, সবাই অনেক পরিশ্রম করে নিজের জায়গা নিজে তৈরি করেন। ফলে কাজ করতে হলে অভিনয়, নাচ, কথা বলা, ফ্যাশন সেন্স- এসব একটু হলেও শিখে তারপর আসা উচিত।
মাসিদ রণ: অভিনয় নিয়ে আপনার অনেক স্বপ্নের কথা বললেন। কিন্তু বিয়ের পর যদি শশুরবাড়ি থেকে কোন বাঁধা আসে?
নিপা আহমেদ রিয়েলি: আমি যেহেতু অভিনয়টা চালিয়ে যেতে চাই, তাই অবশ্যই এমন কাউকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেবো যিনি আমার অভিনয় পেশাকে সম্মান করবেন এবং সাপোর্ট করবেন।
মাসিদ রণ: জীবনসঙ্গীর মধ্যে কোন গুণগুলো প্রত্যাশা করবেন?
নিপা আহমেদ রিয়েলি: জীবনসঙ্গী হিসেবে আমার খুব বেশি চাওয়া নেই। তাকে আমি স্পেস দেবো, সব বিষয়ে নাক গলাবো না। সে এতোদিন যেভাবে বড় হয়েছে আমি চাইবো না সেসব ভুলে নিজেকে বদলে ফেলুক। শুধু এইটুকু চাই, যেন আমার সঙ্গে তিনি সবকিছুতে সৎ থাকেন। অনেক টাকা পয়সাওয়ালা মানুষও আমি চাই না। অতো টাকা পয়সার পেছনে ছুটলে তো নিজেই শোবিজে অনেক ধরনের কাজ করতে পারতাম। আমি তা না করে শুধু ভালো কিছু চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছি। সেটা করতে পারলেই আমার সন্তুষ্টি হবে।
মাসিদ রণ: শোবিজে নারীদের যৌন হয়রানির শিকার হওয়া নতুন কিছু নয়। আপনার ছোট্ট ক্যরিয়ারে এমন কিছুর সম্মুখীন হতে হয়েছে কি?
নিপা আহমেদ রিয়েলি: অবশ্যই যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। খারাপ প্রস্তাব দেয়াটাকেও আমি যৌন হয়রানি বলেই মনে করি। আমি সিনেমায় অভিনয় করতে এসেছি, অনেক বেশি সততার সঙ্গে কাজটি করতে চাই। এখন কেউ যদি আমাকে কাজ দেয়ার কথা বলে অন্য উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায় তাহলে তারসঙ্গে কখনোই কাজ করবো না। কিন্তু কাজের সূত্রে মিটিং-এ গিয়ে আমাকে বাজে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি সোজাভাবে তাদের জানিয়ে দিয়েছি আমি অনৈতিক কিছু করে কাজ করতে চাই না।
তবে একটা কথা বলতে চাই। শুধু শোবিজে নয়, সমাজের যে কোন ক্ষেত্রেই কিন্তু নারীদের যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়। রাস্তায় একটি মেয়ে হাটলে অনেক পুরুষ তাকে খুব বাজেভাবে দেখে। এটাও তো এক ধরনের যৌন হয়রানি। তবে আমরা মেয়েরা সব সময় এগুলোকে আমলে না নিয়ে শুধু কাজটাই করি। তবে সীমালঙ্ঘন করলে অবশ্যই সেটা নিয়ে মুখ খোলা উচিত। যাতে সেই লোকটি আর কারও সাথে একই আচরণ না করতে পারে। এজন্য আমি মি টু মুভমেন্টকে সমর্থন করি। যারা মি টু নিয়ে মুখ খুলেছেন তাদের সাহসের তারিফ না করে পারা যায় না।