সিরিয়ার বাফার জোনের পর হারমন পর্বত ইসরায়েলের দখলে
বাশার আল-আসাদের পতনের পরপরই সিরিয়া সীমান্তের বাফার জোন অধিগ্রহণের পর পরেই হারমন পর্বতের সিরিয়ার অংশের দখল নিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ। যদিও ইসরায়েলের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা স্থায়ীভাবে পর্বতের দখলে থাকবেন না। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এমনটা না হওয়ারও শঙ্কা রয়েছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক সিএনএনের বিশ্লেষণে এসব তথ্য উঠে আসে।
সিএনএন জানায়, ২ হাজার ৮১৪ মিটার উচ্চতাসম্পন্ন হারমন পর্বত কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি ওই অঞ্চলের সবচেয়ে উঁচু স্থান।
পর্বতের চূড়া থেকে সিরিয়ার রাজধানীর দূরত্ব মাত্র ৩৫ কিলোমিটার। এ পর্বতকে এ অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক দুর্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর অর্থ হলো, এ পর্বতের অবস্থান দামেস্ককে ইসরায়েলের কামানের গোলার সীমার মধ্যে এনে দেয়।
জেরুজালেম ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড সিকিউরিটির পরিচালক ইফ্রাইম ইনবার বলেন, লেবানন, সিরিয়া, ইসরায়েলের দিকে তাকালে এটি এ অঞ্চলের সর্বোচ্চ স্থান। এ জন্য হারমন পর্বত কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে ইসরায়েল। এর পর ১৯৭৪ সালে সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি নিয়ন্ত্রণ রেখা প্রতিষ্ঠার চুক্তি করা হয়। এ চুক্তির পর গত ৫০ বছরে সীমিত অভিযান ছাড়া এ রেখা অতিক্রম করেনি ইসরায়েল। কিন্তু ৮ ডিসেম্বর আসাদ পালিয়ে যাওয়ার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেন, সিরিয়ার সঙ্গে ১৯৭৪ সালের চুক্তির আর কার্যকারিতা নেই।
তার এই ঘোষণার পর বাফার জোনের সিরিয়া অংশের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় আইডিএফ। একই দিন সিরিয়া-লেবানন সীমান্তে অবস্থিত হারমন পর্বতও দখল করে তারা। নেতানিয়াহুও জোর দিয়ে বলেন, এ দখলদারিত্ব অস্থায়ী। তিনি বলেন, ৭ অক্টোবরের আক্রমণের মতো গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলি সম্প্রদায়কে হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারি না। ১৯৭৪ সালের চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেল ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের চিন্তা করা যেতে পারে।
গত ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহী যোদ্ধাদের ঝোড়ো অভিযানের মাত্র ১২ দিনের মাথায় বাশার আল-আসাদের ইস্পাত-কঠিন শাসনের অবসান ঘটে। তবে প্রশ্ন উঠেছে বাশার আল-আসাদের পতনের পরও সিরিয়ায় একের পর এক হামলা কেন চালাচ্ছে ইসরায়েল।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতনের পর পরই সিরিয়ার সামরিক বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে থাকে ইসরায়েলি সেনারা।