বাংলাদেশের সরকারি পাসপোর্টধারীরা থাইল্যান্ডে ভিসা ছাড়া ৩০ দিনের বেশি অবস্থান করতে পারবে না বলে জানিয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত থাই দূতাবাস। এ নিয়ম আগামীকাল (১৯ ডিসেম্বর) থেকে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকার রয়েল থাই এম্বাসি এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি সরকারী পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়া ৩০ দিনের বেশি অবস্থান করতে পারবেন না। আগামী ১৯ ডিসেম্বর থেকে এটি কার্যকর হবে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে গত সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকার রয়েল থাই এম্বাসি জানিয়েছে, আগামী ১৯ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশের সরকারি পাসপোর্টধারীরা ই-ভিসার আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া ২ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে বাংলাদেশিদের ই-ভিসা দিবে ঢাকায় নিযুক্ত থাই দূতাবাস।
দূতাবাস জানিয়েছে, নতুন ব্যবস্থাপনায় ভিসা ইস্যু হলে সেটি ই-মেইলে পাঠানো হবে। ভিসার কাগজটি প্রিন্ট করে সঙ্গে রাখতে হবে থাইল্যান্ডে প্রবেশের সময় ইমিগ্রেশনের প্রয়োজনে।
বর্তমানে যে ৪টি ভিসা সেন্টার চালু রয়েছে সেগুলো আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে আবেদন নেওয়া বন্ধ করে দিবে।
উত্তর গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। শুধু তাই নয় অঞ্চলটিতে ত্রাণ সরবরাহেও বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। এতে বাসিন্দারা হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) স্টিফেন ডুজারিক এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। খবর আল জাজিরা।
সংবাদ সম্মেলনে স্টিফেন ডুজারিক বলেন, উত্তর গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলা অব্যাহত থাকায় সেখানে ত্রাণ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। অঞ্চলটির বেইত লাহিয়া, বেইট হানুন এবং জাবালিয়ার কিছু অবরুদ্ধ এলাকায় জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন সাহায্য মিশন পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু ইসরায়েল সেখানে ত্রাণ সরবরাহে বাধা দিচ্ছে।
তিনি আরও জানান, জাতিসংঘের সাহায্যকারী মিশন ৪০ বার এই অবরুদ্ধ এলাকায় পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু ৩৮ বারই সেটি প্রত্যাখান করা হয়েছে এবং দুইবার বাধা দেওয়া হয়েছে।
ডুজারিক উত্তরে বেসামরিক নাগরিকদের "প্রয়োজনীয় চাহিদা" মেটাতে এবং মানবিক সহায়তা প্রদানের সুবিধার্থে ইসরায়েলকে আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
শপথ নেওয়ার আগেই এবার ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রাজিলের ওপরও একই নীতি প্রয়োগ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার নিজের বাসভবন মার-এ লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে তিনি বলেন, যদি কোনো দেশ আমাদের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও সেই দেশের পণ্যের উপর চড়া হারে কর চাপাবে।
ভারত ও ব্রাজিলের প্রসঙ্গ তুলে ধরে ট্রাম্প বলেন, তারা প্রায় সব ক্ষেত্রেই আমেরিকান পণ্যের ওপর ওপর অধিক কর চাপায়। অথচ এতদিন আমরা ওদের ওপর কোনো কর চাপাইনি।
তিনি বলেন, বাণিজ্যে স্বচ্ছতা থাকতে হবে। ভারত যদি মার্কিন পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপায় তবে আমেরিকাও সেই পরিমাণ শুল্ক চাপাবে। ওরা আমাদের ওপর শুল্ক চাপাক তাতে সমস্যা নেই, কিন্তু আমরাও চাপাবো।
গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হন, যদিও তিনি এখনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। আগামী ২০ জানুয়ারি তার শপথ গ্রহণের দিন। তবে শপথ নেওয়ার আগে ট্রাম্প ভারত ও ব্রাজিলকে বাণিজ্য সংক্রান্ত হুমকি দিয়েছেন।
মস্কোতে বোমা হামলায় রাশিয়ার পারমাণবিক সুরক্ষা বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কিরিলভকে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ২৯ বছর বয়সী উজবেকিস্তানের এক নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থার বরাতে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, ২৯ বছর বয়সী উজবেক যুবক ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। ইগর কিরিলভকে হত্যার বিনিময়ে ১ লাখ ডলার এবং ইউরোপে বসবাসের অনুমতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনী ইগর কিরিলভকে হত্যার পিছনে রয়েছে।
ইউক্রেনের একটি সূত্র জানিয়েছে, কিরিলভ যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার কারণে তিনি ‘ন্যায্য লক্ষ্যবস্তু’ ছিলেন। হামলার একদিন আগে ইউক্রেনে তার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়।
এফএসবি জানায়, সন্দেহভাজন ব্যক্তি মস্কোতে এসে হাতে তৈরি একটি বিস্ফোরক ডিভাইস স্কুটারের মধ্যে স্থাপন করে। তিনি একটি গাড়ি ভাড়া করে কিরিলভের বাসস্থান পর্যবেক্ষণ করেন এবং ক্যামেরা দিয়ে সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে ইউক্রেনের দনিপ্রো শহরে তার পরিচালকদের সাথে যোগাযোগ রাখেন। কিরিলভ যখন বাড়ি থেকে বের হন, তখন তিনি বিস্ফোরকটি বিস্ফোরিত করেন।
৫৪ বছর বয়সী কিরিলভ রাশিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগে যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিলেন। ইউক্রেন জানিয়েছে, তার নেতৃত্বে রাশিয়া ৪,৮০০ বারেরও বেশি রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। তবে মস্কো এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, তারা ২০১৭ সালেই তাদের রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ ধ্বংস করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগার থেকে ১৭ বছর পর মুক্তি পেয়েছেন আরও এক বন্দি। তার নাম মোহাম্মদ আবদুল মালিক বাজাবু। তিনি কেনিয়ার নাগরিক।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদন মতে, গতকাল মঙ্গলবার পেন্টাগন আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তি ঘোষণা দেয়। বলা হয়েছে, গত মাসে বাজাবুর কেনিয়ায় প্রত্যাবাসনের বিষয়টি প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন মার্কিন কংগ্রেসকে অবহিত করেছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০০৭ সালে কেনিয়ার মোম্বাসায় আবদুল মালিক বাজাবুকে গ্রেফতার করে দেশটির কর্তৃপক্ষ। মূলত আল কায়েদার পূর্ব আফ্রিকার শাখার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে মার্কিন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়া হয়। কয়েক সপ্তাহ পর তাকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দি পর্যালোচনা পরিষদ পিরিয়ডিক রিভিউ বোর্ড ২০২১ সালে তাদের এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে জানায়, আবদুল মালিক বাজাবু আর ‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য উল্লেখযোগ্য হুমকি নন’। এরপর তার মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়।
আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তিপ্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল ‘রিপ্রাইভ ইউএস’ নামের একটি সংগঠন। বাজাবুর মুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে তারা।
আবদুল মালিক বাজাবুকে সহায়তা দেওয়া একজন আইনজীবী এক বিবৃতিতে বলেন, নিরীহ একজন ব্যক্তিকে তার জীবনের সেরা সময়টায় বন্দী রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এমন একটা সময়ে তাকে তার স্ত্রী ও সন্তানদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল, যখন তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল। তাকে এভাবে বন্দি রাখায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা কখনই পূরণ করা যাবে না। তবে মার্কিন সরকার অন্তত যেটা করতে পারে, সেটা হল আবদুল মালিক যাতে নতুন করে জীবন শুরু করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সুযোগ করে দেয়া।
তথাকথিত নাইন-ইলেভেন হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ শুরু করে। যার ফলশ্রুতিতে ২০০২ সালে গুয়ানতানামো বে কারাগার চালু করা হয়। কিউবার কাছে মার্কিন এক সামরিক ঘাঁটিতে এই কারাগার অবস্থিত।
জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রথাগত আদালতে যেসব সুযোগ-সুবিধা থাকে, সেখানে সেগুলো নেই। এ কারাগারে বন্দীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন করা হয় বলে মার্কিন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। আর এতেই কারাগারটির কুখ্যাতি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। একসময় এই কারাগারে ৮০০ বন্দী ছিলেন। পেন্টাগনের হালনাগাদ তথ্য, এখন গুয়ানতানামো বে কারাগারে ২৯ জন বন্দী আছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন স্থানান্তর করার মতো উপযুক্ত পর্যায়ে রয়েছেন।
বন্দিদের সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করা হয়। এই কার্যক্রমের অনুমোদন করেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। পরবর্তীতে ব্যাপক সমালোচনার মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গুয়ানতানামো বে কারাগার বন্ধ করার ঘোষণা দেন। তবে তা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এরপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে কারাগারটি চলমান রাখার আদেশ জারি করেন।
আদেশে বলা হয়, 'জাতির সুরক্ষার জন্য আইনানুগ এবং প্রয়োজনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অতিরিক্ত বন্দীদের ইউএস নেভাল স্টেশন গুয়ানতানামো বেতে নিয়ে যেতে পারে।'