রংপুরে ঘন কুয়াশায় বীজতলা নষ্টের আশঙ্কা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে ঘন কুয়াশায় বীজতলা নষ্টের আশঙ্কা, ছবি: বার্তা২৪.কম

রংপুরে ঘন কুয়াশায় বীজতলা নষ্টের আশঙ্কা, ছবি: বার্তা২৪.কম

রংপুরে মাঘের শুরুতে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদ ঝলমলে থাকলেও সন্ধ্যায় ঘনকুয়াশায় মোড়ানো থাকে প্রকৃতি। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার ফলে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় কৃষক। এমন বৈরি আবহাওয়া থাকলে বীজতলার ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন রংপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো থাকায় এখনো তেমন ক্ষতি হয়নি বীজতলায়। তবে বীজতলার বিশেষ যত্নে বিষয়টি নিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান কৃষি বিভাগ।
এদিকে বীজতলা নষ্ট হলে বোরো ধানের চারার সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন কৃষকরা।

বিজ্ঞাপন

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর তথ্য সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলায় এই মৌসুমে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৩২ হাজার ৭৪৬ হেক্টর জমিতে। সেই লক্ষ্য পূরণে প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলায় ধানের বীজ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার থেকে ৫০০ হেক্টর বেশি বীজতলা রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সংশ্লিষ্টরা।

এই অবস্থা থেকে বীজতলার বিশেষ পরামর্শ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলেন, বীজতলা নষ্ট হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে তীব্র শীত। এজন্য রাতের বেলায় বীজতলায় পানি রাখতে হবে এবং দিনের বেলায় পানিটা সরিয়ে ফেলতে হবে। তাহলে এটি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এসব বোরো ধানের বীজতলা রক্ষার জন্য ইউরিয়া ও জিপসাম সার প্রয়োগের পাশাপাশি প্রতিদিন বীজতলার কুয়াশা ঝেড়ে দিতে হবে। সম্ভব হলে চারাগুলোকে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে বোরো ধানের বীজতলার অধিকাংশ চারাই লালচে হলুদ হওয়া শুরু করেছে। আবার কোথাও কোথাও লালচে হওয়ার পর আস্তে আস্তে পাতার আগা শুকিয়ে যাচ্ছে। ঘন কুয়াশার ফলে অনেক বীজতলায় এখনও ভালো করে বীজ গজায়নি। আবার অনেক স্থানে সুস্থ-সবল হয়ে বড় হচ্ছে না। বীজতলা নষ্টের আশঙ্কা থেকে অনেকেই কৃষি অফিসের পরামর্শে রাতে বীজতলায় পানি রাখছে।

রংপুর নগরীর বোতলাপড়ার বাসিন্দা জাদু মিয়া বলেন,এবার দিনের বেলাত রোইদ আর রাইতে কুয়াশা এলাও বীজতলা নষ্ট হয় নাই। কিন্তু এইতন অবস্থা থাইকলে পরে বীজতলা নষ্ট হইবে। তকন বীজ নিয়া হামার কষ্ট হইবে।

নগরীর মাহিগঞ্জ, দর্শনাসহ বেশকিছু স্থানের কৃষকরা জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শ মত যত্ন নেয়া হচ্ছে বীজতলার। সঠিক পরিচর্যায় ব্যস্ত তারা।

এ বিষয়ে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক রিয়াজ উদ্দিন জানান, সারাদেশের মতো রংপুরেও তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা বিদ্যমান। আর এই ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলা নষ্ট হয়ে থাকে। কিন্তু দিনে পর্যাপ্ত রোদের কারণে এখনও বীজতলা নষ্ট হওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়নি। তবে এমন ঘন কুয়াশা বিরাজমান থাকলে বীজতলা নষ্ট হতে পারে। কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি । মাঠে মাঠে গিয়ে সরেজমিনে দেখছেন কৃষি কর্মকর্তাগণ। কৃষকরাও আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করছেন। যার কারণে বীজতলা নষ্টের আশঙ্কা নেই।