তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে শ্রমিকরা
জাতীয়
ষাটোর্ধ্ব ১৬০ জন শ্রমিককে চাকরিতে পুনর্বহাল এবং অন্যান্য ন্যায্য দাবিতে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) শ্রমিক ইউনিয়ন সড়ক অবরোধ করে তীব্র আন্দোলন শুরু করেছে। একইসাথে কর্পোরেশনের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে শ্রমিকরা কর্পোরেশনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। এতে কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। গুরুত্বপূর্ণ চকবাজার সড়ক অবরোধের ফলে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
তাদের দাবিগুলো হলো চাকরি থেকে ছাঁটাই হওয়া ১৬০ জন শ্রমিককে পুনর্বহালসহ বেতন বৈষম্যের নিরসন, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক প্রদান এবং সব ভাতা পরিশোধ।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা শ্রম আইন অনুযায়ী চাকরি স্থায়ীকরণসহ অন্যান্য সুবিধার জন্য দাবি জানালেও তা পূরণ হয়নি। সম্প্রতি ১৬০ জন শ্রমিক ছাঁটাই হওয়ায় তারা চরম দুর্দশায় পড়েছেন। ফলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
বিজ্ঞাপন
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী বলেন,অস্থায়ী শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়টি সরকারের নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এছাড়া সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা ৬০ বছর। তবুও আমরা তাদের দাবিসমূহ চিঠি আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা বলেছি। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে পরিস্থিতি আরও জটিল হলে প্রশাসনের সহায়তা নেওয়া হবে।
অবরোধের ফলে নগরীতে যান চলাচল একপ্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দায়িত্বরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক আমির বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে, তবে বিক্ষোভ দমনে শ্রমিকদের মনোভাব এখনও অনড়।
এই অবরোধ ও বিক্ষোভের ফলে নগরবাসীর চলাচল এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে। দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আহ্বান জানিয়েছে সাধারণ জনগণ।
দুই বছর আগে পিতার মৃত্যু আর প্রায় দুই মাস ধরে মা কারাগারে। দিশেহারা এতিম নাতিদের নিয়ে নানা ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে।
দুই বছর আগে স্বামী আমিন শেখের মৃত্যুর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে একাই মা-বাবা দুজনের দায়িত্ব পালন করছিলেন বিধবা পপি খাতুন।
গত ২ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে পপি খাতুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তখন পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন মৃত আমিন শেখের ঋণের দায়ে মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, এই মামলায় আমিন-পপি দম্পতির শিশু তিন সন্তান আইরিন (১০), আহমাদুল্লাহ (৬) আর জানাতুন নাঈমা (৪) নাবলক এতিম তিন শিশুও পিতার ঋণের দায়ে ব্র্যাক ব্যাংকের দায়ের করা অর্থ ঋণের মামলার আসামি।
মায়ের জেলে যাবার পর থেকে ওই তিন শিশু দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। আসামির হয়ে সব সময় পুলিশের ভয়ে থাকে তারা।
এতিম শিশুদের নিয়ে এমনিতেই দিশেহারা অবস্থা তার ওপর ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পপি খাতুন জেলে যাবার পর নানার কাছে আশ্রয় পেয়েছে তিনটি অবুঝ শিশু। তাদের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায়।
পিতাহারা সন্তানেরা ঋণের মামলায় কারাগারে থাকা মা কে জেল থেকে মুক্তির জন্য তারা পাগলপারা।
একদিকে বাবা হারানোর শোক, মা জেলে। অন্যদিকে সুদে আসলে ২৯ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণের ওয়ারিশ সূত্রে মা, দাদির সাথে অর্থ ঋণের মামলায় আসামি তারাও।
অসহায় এতিম তিন শিশু, যারা এখনো ঠিকমতো টাকা, ঋণ, লেনদেনের অর্থই বোঝে না। বয়স লুকিয়ে তাদেরও করা হয়েছে আসামী।
পিতার মৃত্যুর পর বেহাত হয়ে গেছে বাবার ব্যবসা। এদিকে পপির জামিন করাতে আদালতে ঋণের দায়ের ২৫ শতাংশ ৭ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
পপির বাবা বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বান্দুগ্রামের বৃদ্ধ সিরাজ শেখ বলেন, নিজেরই সংসার চলে না তার উপর যুক্ত হয়েছে মেয়ের এতিম নাবালক তিন সন্তান। দিনমজুর শশুরেও সাধ্য নাই মৃত জামাতার ঋণ পরিশোধ করার।
তিন বলেন, আমার মেয়ের জামাই বোয়ালমারী বাজারের পোল্ট্রি মুরগী ব্যবসায়ী আমিন শেখ ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মৃত্যুর পর জানতে পারি সে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি বোয়ালমারী শাখা থেকে ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর ৩০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করে । এর মধ্যে জীবিত থাকা অবস্থায় কিস্তিতে সুদে আসলে ৬ লাখ ২১ হাজার ৩৭৮ টাকা পরিশোধ করে।
আমিনের মৃত্যুর পর ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর ফরিদপুর জেলা জজ ১ম অর্থঋণ আদালতে আমার মেয়ে পপি খাতুন, তার তিন এতিম নাবালক শিশু সন্তানসহ, আমিন শেখের মা সালেহা বেগম ও মো. চুন্নু মিয়া নাম উল্লেখ পূর্বক ছয় জনের নামে মামলা করে।
মামলার বিষয়ে কিছুই জানতো না আসামিরা। মামলার বিবরণে ফরিদপুর জজ আদালতের বাদির পক্ষের আইনজীবী তার স্বাক্ষরিত আর্জিতে বিবাদীগণের নামে ৯ ডিসেম্বর ২০২১ সালে লিগ্যাল নোটিশ জারি করেছেন বলে দাবি করেছেন।
অথচ ঋণ গৃহীতা ব্যাংক থেকে ঋণ নেন তারও এক বছর পর ২০২২ সালে।
ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি বোয়ালমারী শাখা আমিন শেখের দুই এতিম নাবালক মেয়ে ও নাবালক ছেলের বয়স গোপন করে তাদেরও মামলার আসামি করেছে।
মায়ের গ্রেপ্তারের পর থেকেই একই মামলার আসামি তিনটি এতিম নাবালক শিশু সারাক্ষণ শঙ্কা ও পুলিশে ধরে নেওয়ার আতংকের মধ্যে থাকে।
পপি খাতুনের আত্মীয় হুমায়ুন কবির বলেন, অবুঝ তিনটি শিশুকে ঋণের দায়ী হিসেবে আসামি করা হয়েছে। এরা নাকি জামিনদার হয়েছিলো। এরা ঋণের কী বুঝে। আদালতের নিকট আবেদন মৃত ঋণ গ্রহীতার অসহায় ওয়ারিশদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে ঋণ মওকুফ করে তাদেরকে দায় মুক্ত করা হোক।
এই বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বোয়ালমারী শাখার ব্যবস্থাপক রাসেল আহমেদ বলেন, ঋণ গ্রহীতা মৃত আমিন শেখ আমাদের শাখা থেকে ত্রিশ লাখ টাকা ঋণ নেয়। আমাদের ব্যাংকের শর্ত ও নিয়মের মধ্যে থেকেই চলমান ব্যবসার অনুকূলে ঋণ দেওয়া হয়েছে। শর্তাবলী মেনেই ঋণের টাকা অনাদায়ে জামিনদার ও ওয়ারিশ গণের নামে মামলা হয়েছে।
বিবাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড. মেহেদী হাসান বলেন, মৃত আমিন শেখের অপ্রাপ্ত বয়সী তিনটি অবুঝ শিশুকে এ মামলায় ওয়ারিশ সূত্রে আসামী করা হয়েছে। তারা ওয়ারিশ হলেও বয়স হওয়ার আগে পিতার সম্পত্তির অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। আর অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের আসামি করা আইন সমর্থন করে না। শিশুদের বিরুদ্ধে যারা মামলা করেছে তারা প্রত্যারণার আশ্রয় নিয়ে আদালতকে ভুল তথ্য দিয়েছে। এটা আদালত অবমাননার সামিল।
আগামী মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) থেকে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সেইসঙ্গে সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর ও মৌলভীবাজার জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সেইসঙ্গে সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
আগামী বুধবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সেইসঙ্গে সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
এ ছাড়া আগামী পাঁচদিনের প্রথম দিকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টির প্রবণতা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালি ইউনিয়নের রিফাইত সরকারতারি গ্রামে এখনো টিকে আছে ঝিনুক পুড়িয়ে পান খাওয়ার চুন তৈরির ঐতিহ্য। বংশানুক্রমে এ পেশায় নিয়োজিত তিনটি সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবার তাদের পূর্বপুরুষদের শেখানো পদ্ধতিতে চুন তৈরি করে আসছে আজও। তাদের তৈরি চুন চাহিদা পূরণ করছে স্থানীয়দের। তবে, ক্ষুদ্র এই শিল্প সম্প্রসারণে প্রয়োজন সরকারি সহায়তা।
ঝিনুক থেকে চুন তৈরির পদ্ধতি হাজার বছরের পুরনো। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা থেকে জানা যায়, প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে এটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়। পরে চীনা এবং রোমান সভ্যতায় এটি আরও উন্নত হয়। প্রাচীন ভারতে চুন ব্যবহৃত হতো পানীয় ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। বিশেষত ভারতীয় উপমহাদেশে পান চিবানোর ঐতিহ্যের সাথে চুনের ব্যবহার শুরু হয় খ্রিস্টপূর্ব কয়েক শতক আগে। এটি তখন থেকেই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের একটি প্রতীক।
সরেজমিনে সদর উপজেলার বাদিয়াখালি ইউনিয়নের রিফাইত সরকারতারি গ্রামে দেখা যায়, চুন তৈরির বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত যোগী পরিবারগুলো। যারা চুন তৈরি করে থাকেন স্থানীয়ভাবে তাদেরকে যোগী বা চুনারু বলা হয়। কেউ কেউ বলে থাকেন চুনি। চুন তৈরিতে কর্মব্যস্ত থাকেন যোগী পরিবারের নারী-পুরুষ উভয়ই।
চুন তৈরির পদ্ধতি
চুন তৈরির মূল উপকরণ ঝিনুক। যেটাকে সিঁপি বলা হয়। এই সিঁপি বা ঝিনুক থেকে চুন তৈরির প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ ও শ্রমনির্ভর হলেও প্রাকৃতিক ও বিজ্ঞানসম্মত। ঝিনুক সংগ্রহ করা, ছোট আকারে খরি কেটে রোদে শুকানো, ভাটা সাজানো ও আগুনে পোড়াসহ চুন তৈরির মূল প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লাগে বেশ কয়েকদিন ।
চুন তৈরির প্রথমে জেলার বিভিন্ন নদী, বিশেষ করে গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি এলাকা থেকে ঝিনুক সংগ্রহ করেন যোগীরা। এ ঝিনুক পানিতে পরিষ্কার করে বিশেষভাবে তৈরি ভাটিতে সাজানো হয়। খরি ও ঝিনুক স্তরে স্তরে সাজিয়ে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা ধরে আগুনে পোড়ানো হয়। পোড়ানো ঝিনুক থেকে তৈরি হয় ‘ঝুড়ি’, যা চুন তৈরির প্রধান উপাদান। পরে আধুনিক শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ব্লেন্ডার মেশিনে এই ঝুড়ি ও পানি মিশিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা ধরে ঘষামাজার মাধ্যমে তৈরি হয় চুন। পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত যত্ন ও নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পন্ন করেন যোগী পরিবারগুলো।
চ্যালেঞ্জ ও সংকট
একসময় এই পেশায় নিয়োজিত যোগীদের সংখ্যা বেশি থাকলেও নানা সংকটের কারণে অনেকেই পেশা পরিবর্তন করেছেন। বর্তমানে এ গ্রামের সুভাস চন্দ্র দেবনাথ, বর্ণ চন্দ্র দেবনাথ ও স্বপন চন্দ্র দেবনাথ- এই তিন ভাই তাদের পরিবারসহ বাপ-দাদার পেশা ধরে রেখেছেন। সরকারি সহযোগিতার অভাব, উপকরণের দাম বৃদ্ধি এবং আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পটি টিকে থাকা পড়েছে চ্যালেঞ্জের মুখে।
উন্নয়নে সরকারি সহযোগিতার প্রয়োজন
এই প্রাচীন শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। যোগী পরিবারগুলোর দাবি, আধুনিক সরঞ্জাম সরবরাহ এবং সুষ্ঠু ঋণ সুবিধা পেলে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প নতুন মাত্রা পাবে। গাইবান্ধার রিফাইত সরকারতারি গ্রামের চুন তৈরি প্রক্রিয়া একদিকে প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক, অন্যদিকে বিজ্ঞান ও প্রকৃতির অপূর্ব মেলবন্ধন। এটি কেবল একটি পেশা নয়; বরং বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। তাই এই শিল্প রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের।
বিজ্ঞান ও ঐতিহ্যের মেলবন্ধন
ঝিনুক থেকে চুন তৈরি বিজ্ঞানসম্মত ও প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহারের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। ঝিনুকের প্রধান উপাদান ক্যালসিয়াম কার্বোনেট তাপে ভেঙে ক্যালসিয়াম অক্সাইডে পরিণত হয় এবং পানি মিশ্রণে তা ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডে রূপান্তরিত হয়, যা চুন নামে পরিচিত।
চুন শুধু পানের স্বাদ বাড়ায় না; এটি হজমেও সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত চুনের ব্যবহার মুখগহ্বর ও শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
রিফাইতপুর গ্রামের যোগী শ্রী স্বপন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, আমরা বাপ দাদার পেশা ধরে রেখেছি। সময়ের সাথে সাথে এটি টিকিয়ে রাখা কঠিন হচ্ছে। তবে সরকারি আর্থিক সহযোগিতা- বিনা সুদে ঋণ কিংবা স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা গেলে আমরা আমাদের শিল্পের উন্নয়ন ঘটাতে পারতাম। আগে অনেক পরিবারই চুন তৈরি করতো কিন্তু নানা সংকটের কারণে পেশা বদল করেছেন অনেকে।
স্বপন চন্দ্র দেবনাথের স্ত্রী আরতী দেবনাথ বলেন, আমরা পরিবারের সবাই চুন তৈরির কাছে সহযোগিতা করে থাকি। সেজন্যই টিকে আছি। এই কাজে অনেক পরিশ্রম আছে। আমাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
একই গ্রামের অপর যোগী শ্রী বর্ণচন্দ্র দেবনাথ বলেন, ঝিনুক থেকে এই চুন তৈরি করে থাকি আমরা। এই চুন স্থানীয় বাজারে আমরাই সরবরাহ করে থাকি। প্যাকেটজাত করে একেবারে প্রস্তুত করে দোকানে পৌঁছে দেই। চাহিদা আছে আমাদের চুনের।
মাত্র ছয়জন যোগীকে প্রায় ১০ লাখ টাকা কুটির শিল্প ঋণ প্রদানের কথা জানালেও জেলায় যোগীর সংখ্যা কত তা জানাতে পারেনি গাইবান্ধার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গাইবান্ধা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন মহা ব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল ফেরদৌস মুঠোফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা জেলার ৬ জন যোগীকে প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋণ সহায়তা দিয়েছি।
তবে, এসময় জেলায় মোট কতজন যোগী রয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান জানা নেই বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) মাহামুদ আল হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, জেলার ছোট ছোট এধরণের শিল্পের প্রসারে সব ধরণের সহযোগিতা করবে উপজেলা প্রশসান। আমরা শিগরিই তাদেরকে ডেকে তাদের সাথে কথা বলবো এবং তাদের এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।
সাবেক সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩০টি গাড়ি নিলামে তোলার কথা থাকলেও দর নির্ধারণের কাজ শেষ না হওয়ায় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের এবারের নিলামে তা তোলা যায়নি।
নিলামে তুলেছে ৮৩ লট পণ্য, যার মধ্যে রয়েছে কয়লা, পেপার, ব্যাগসহ পোশাক শিল্পে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ। আগ্রহী বিডাররা ২৮ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত পণ্য দেখতে পারবেন। নিলামের প্রস্তাবিত মূল্য জমা দেওয়ার সময়সীমা ২৭ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা পর্যন্ত।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, এ নিলামে রয়েছে ১৩ হাজার ২১৯ কেজি কয়লা, পোশাক শিল্পের কাপড়সহ বিভিন্ন উপকরণ। দ্বিতীয়বার ২২ লট এবং তৃতীয়বার ৫ লট পণ্য নিলামে তোলা হয়েছে।
নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এয়াকুব চৌধুরী বলেন, "গাড়ির নিলামের জন্য আমরা অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু কাস্টমস হাউস এখনও তা করতে পারেনি। নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ৩০ জানুয়ারির মধ্যে গাড়ি নিলামে তোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু এ নিয়ে ধীরগতি লক্ষ্য করছি।"
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের মুখপাত্র ও উপ-কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, সাবেক এমপিদের গাড়ির দর নির্ধারণের প্রক্রিয়া চলছে। কাজ শেষ হলে আগামী মাসে নিলামে তোলা হবে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার দ্রুত খালি করতে অনলাইন ও অফলাইন উভয় মাধ্যমেই নিলাম হচ্ছে। সম্প্রতি খেজুরের মতো পচনশীল পণ্য নিলামে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া, ই-অকশনে পোশাক শিল্পের উপকরণও রয়েছে।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় নিলামে তোলার বিষয়ে তিনি জানান, বিডাররা সময়মতো টাকা জমা না দিলে বা সংরক্ষিত মূল্যের ৬০ শতাংশ দর না উঠলে আইন অনুযায়ী পণ্যগুলো পুনরায় নিলামে তোলা হয়।