নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ কম: রিজভী

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ কম: রিজভী

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ কম: রিজভী

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, চাঁদাবাজি বন্ধ ও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ কম। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিপ্লবের মধ্যে গঠিত হয়েছে। এই সরকারকে মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। সেই প্রত্যাশা পূরণে ঘাটতি থাকলে, রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের চিন্তা অনুযায়ী কথা বলবে।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তুমি সেন্টারের সামনে জাতীয়তাবাদী এসব দলের মহানগর উত্তরের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে চাঁদাবাজি বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, রাস্তার মোড়ে মোড়ে চাঁদাবাজদের ধরুন। অনেক সময় পুলিশ খাদ্যপণ্যের গাড়ি থামিয়ে চাঁদা আদায় করছে। এগুলো বন্ধ করলেই দাম কমে আসবে। আমরা এটা বলি না যে সরকারের কোনো লোক এটা করছে। কিন্তু শক্তিশালী প্রশাসনিক নির্দেশনা থাকলে রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি হতো না। মানুষকে এই পরিস্থিতি যদি আগের আমলের চেয়ে স্বস্তি দিতে না পারে তাহলে মানুষ হতাশ হবে। খাদ্যপণ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমেনি। 

যখন গণতন্ত্র ছিল না তখন আমাদের আন্দোলন করতে হয়েছে। শেখ হাসিনার লাল চক্ষু উপেক্ষা করে বিশেষ করে তার প্রশাসনের সামনে বুকে সাহস নিয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়েছে। তাদের অনেকে গ্রেফতার হয়েছে, অনেকে মৃত্যুবরণ করেছে। দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কৃষক দল কৃষি উন্নয়নে কাজ করবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ছেলেরা যদি কৃষকের জন্য কাজ করে সেই কৃষির উন্নয়ন দ্রুত হবে। মানুষ যেন অনাহারে না থাকে সরকারকে এ দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। এটাই তাদের কাজ।

বিজ্ঞাপন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করবে। কেউ হুমকিতে থাকবে না। কিন্তু আপনারা যদি প্রশাসনে শেখ হাসিনার দোসরদের যদি লালনপালন করেন। আপনি নারায়ণগঞ্জে এসপি যিনি যুবদলের শাওন হত্যায় জড়িত। সেই এসপিকে যদি ডিসি হেডকোয়ার্টার বানান। তাহলে আপনি সমাজ থেকে কীভাবে চাঁদাবাজি, খুনাখুনি, হানাহানি বন্ধ করবেন। আপনি দেখুন কে অন্যায় করছে। তাকে গ্রেফতার করুন, আইনের আওতায় আনুন। যে পুলিশ আহত হয়েছিলো তাকে ভালো পোস্টিং দিলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না। 

রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে সম্প্রতি এক উপদেষ্টার বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, এটা একধরনের অহংবোধে অভিব্যক্তি। একাত্তর কার সৃষ্টি, যুদ্ধে বিজয় কাদের, এরশাদকে নামিয়ে যে গণতন্ত্রের আরেকবার বিজয় করেছিলাম এটা কি সুশীল সমাজের অবদান, তখন সুশীল সমাজ সমর্থন দিয়েছে। উপদেষ্টার উদ্দেশে আমি বলব আপনার কথাবার্তা মইনুদ্দিন ফক উদ্দিনের পুনরাজ্জীবন দেখছি। এটা হতে পারে না। বরং মইনুদ্দিন ও ফতুদিনের সেই তথাকথিত সংস্কারের ফলে হাসিনার মতো কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিস্ট, যিনি গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে একটা সম্রাজ্ঞী শাসন করেছিল। তার বিরুদ্ধে কথা বললে হয় জেল, না হলে রাস্তাঘাটে নদী নালায় লাশ পড়ে থাকত। এইটাই দেখেছি আমরা সেই সংস্থার ফল।

তিনি আরও বলেন, আপনারা যদি প্রকৃত সংস্কার করেন। তাহলে নির্বাচন, গণতন্ত্রের অপরিহার্য অংশগুলো, আইনের শাসন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করা এত বিলম্ব হওয়ার কথা না। এতদিনের আপনাদের ক্ষমতায় শাসন বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করতে পারতেন। অগ্রগতি একেবারে হয় নি তা না। আপনারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দলগুলো ৫০ বছরেও কোন সংস্থার করেনি এমন অহংকার দেখান কিন্তু মানুষ আপনাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। মনে করবে আপনারা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছেন। শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরের গণতন্ত্র গণতন্ত্র নিরুদ্দেশ করে দিয়েছিল। আপনারা সেই সেই ভোটের অধিকার টি আপনারা হয়তো ফিরিয়ে দিতে চান না এই ধরনের ধারণা মানুষ করবে। মানুষের মধ্যে এমন আশঙ্কা তৈরি হবে। আপনারা যেটা করবেন অতি তাড়াতাড়ি ভোট দিতে পারে, নির্বাচন হতে পারে সেই আশাবাদ মানুষের কাছে আপনারা তুলে ধরুন। সেই চেষ্টা সেই সংস্কার। অতি দ্রুত সেই কাজটি করুন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিপ্লবের মধ্যে গঠিত হয়েছে। এই সরকারকে মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। সেই প্রত্যাশা পূরণে ঘাটতি থাকলে, রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের চিন্তা অনুযায়ী কথা বলবে। নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্যের দাম কোনো ভাবেই কমাতে পারছে না সরকার। আমরা বলেছি, আপনারা মার্কেটে পাইকারি মূল্যে পণ্য বিক্রি করুন। সিণ্ডিকেট বাজদের ধরুন। যারা আগে থেকে সিন্ডিকেটের সঙ্গে দুষ্টু চক্র হাত মিলিয়ে এই কাজ করে যাচ্ছে তাদের ব্যাপকভাবে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। তাহলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে দেখবেন দাম কমে আসবে। মাঠে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য দ্রুত বাজারে আনার ব্যবস্থা করুন। এরমধ্যে যাতে মধ্যস্বত্বভোগীরা যাতে হাত দিতে না পারে, তাদের কালো হাত যেনো প্রসারিত হতে না পারে। এদেরকে চিহ্নিত করুন। তাদের আইনের আওতায় আনুন। এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। একটি রাজনৈতিক দল চাঁদাবাজি বন্ধ করতে পারে না। তারা নিজের দল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে।