জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, কুরআনের সাথে আমাদের নিজের জীবনকে মেলাতে হবে। কেয়ামতের কঠিন দিনে এই কুরআনই সুপারিশকারী হবে। ইসলামী আন্দোলনের সহযোগী সদস্য হিসেবে কুরআনের চর্চা কতখানি করতে পারছি তা অনুধাবন করতে হবে। আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত ও রাসূল (সা.) এর আদর্শ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। মক্কায় ১৩ বছর মানুষের মাঝে আল্লাহর রাসূল (সা.) ইকামাতে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছিলেন। ফলে অতি অল্প সময়ে মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪ নং মাগুরখালী ইউনিয়নের তপোবন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন সহযোগী সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে ইসলামী বিপ্লব সাধনে খুলনায় হবে মূল বাতিঘর। জামায়াতের সহযোগী ভাইদের আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করতে মাঠে ময়দানে ছড়িয়ে পড়তে হবে। অসহায় মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকতে হবে। জামায়াতে ইসলামী অসহায় মানুষের আর্থিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ইসলামের আদর্শ দিয়ে মানুষের মন জয় করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী এদেশের মানুষকে আধিপত্যবাদ মুক্ত একটি উন্নত ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র উপহার দিবে ইনশাআল্লাহ।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, কুরআনের সবগুলো বিধানই সমাজে কায়েম করা ফরজ। কোনো একটি বিধান অস্বীকার করলে কাফির বলে গণ্য হবেন। অথচ আমাদের দেশে কুরআনের বিধান চালু নেই। এজন্য নাগরিকগণ তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কুরআনের বিধান চালু হলে মানুষ তার প্রাপ্য অধিকার ফিরে পাবে। মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদেরকে শপথ নিতে হবে এ পথে হয়তো আমরা বিজয়ী হবো নতুবা আমাদের জীবন চলে যাবে তবুও এ থেকে আমরা বিচ্যূত হবো না। মানুষের ঘরে ঘরে আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত ও জামায়াতের আহবান পৌঁছে দিতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর জনশক্তিদের নিজেদের পরিবার, প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মানুষ হিসেবে আমরা আল্লাহর কাছে ওয়াদা করেই এসেছি নিশ্চয়ই আল্লাহই আমাদের রব। তিনি আমাদের হুকুমদাতা, তিনি আমাদের বিধান দাতা, রিজিকদাতা সবকিছু এটা স্বীকার করেই আমরা দুনিয়ায় এসেছি। সুতরাং সত্যিকার অর্থে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ এই কথা মেনে নেওয়ার সাথে সাথে তা বাস্তবায়নে আমাদেরকে ভূমিকা রাখার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। পৃথিবীর কোনো ঘরই আমাদের জন্য স্থায়ী নয়। অতএব আখেরাতের স্থায়ী ঘর নির্মাণের জন্য আমাদেরকে ব্যাকুল থাকতে হবে। পবিত্র কুরআনের সূরা আল কাসাসে বর্ণিত নির্দেশনার আলোকে জামায়াতের সহযোগীদের মাঠে ময়দানে ভূমিকা রাখতে হবে। আসুন দুনিয়ার অশান্তি থেকে বাঁচতে, আখেরাতের ভয়াবহ আগুন থেকে বাঁচার জন্য কালিমার বিধানের আলোকে আমাদের জীবন পরিচালনা করি।
মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা শেখ আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে ও সোহরাব হোসেনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হোসাইন, জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, কর্মপরিষদ সদস্য এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, ডুমুরিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা মোক্তার হোসাইন, নায়েবে আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, সেক্রেটারি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি মাস্টার আব্দুর রশীদ ও মাওলানা ফরহাদ আল মাহমুদ, উপজেলা সনাতনী সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী ও সেক্রেটারি অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ মন্ডল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সনাতনী ধর্মালম্বী মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার, মাওলানা আজহারুল ইসলাম, মাওলানা মনিরুল ইসলাম, ডা. হরিদাস মন্ডল, মাস্টার গৌতম মন্ডল, মাওলানা মোসলেম উদ্দিন, অধ্যক্ষ সুভাষ চন্দ্র সরদার, ছাত্রশিবির নেতা আবু তাহের, শামিদুল হাসান লিমন, স্বদেশ হালদার, বাবুল আক্তার, ইউপি সদস্য বিবেকানন্দ মহাদেব, বিকাশ চন্দ্র সরদার প্র্রমুখ।