দখল ও শক্তিমত্তার সংস্কৃতি স্বৈরাচারের উত্থান ঠেকাতে পারবে?
১. উপরের ছবিটি চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ শিল্প এলাকার রুবি গেইট সংলগ্ন বার্মা কলোনির প্রবেশমুখ। পথের উপরে দেখা যাচ্ছে অস্থায়ী ঘর ও স্থাপনা। ১০০ দিন আগে এই চিত্র ছিল ভিন্ন। এখানে আড্ডা জমাতো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও তাদের অনুগত কিশোর গ্যাং। রাজনীতি ও দল করার ছদ্মাবরণে এখান থেকে দখল রাখা হতো বার্মা কলোনির সরকারি খাস জমিতে স্থাপিত বিরাট বস্তি, যা সন্ত্রাস ও নানা অপকর্মের জন্য কুখ্যাত। ফুটপাত, সিএনজি-রিকসা স্ট্যান্ড ছাড়াও আশেপাশের হিলভিউ, রহমান নগর, টেক্সটাইল এলাকার নির্মাণ কাজসহ যাবতীয় ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের অঘোষিত নিয়ন্ত্রণ-কেন্দ্র ছিল এই ঘাঁটি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এলে পরিস্থিতি বদলে যায়। কিছু দিন খালি থাকার পর বার্মা কলোনির প্রবেশমুখের ঘাঁটি ও আড্ডাখানা দখল করেছে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। আওয়ামী লীগ যে কাজ-কারবার করতো, বিএনপি‘র নাম ভাঙিয়ে এখন সেটাই করা হচ্ছে। 'নাম ভাঙিয়ে' বলছি দুটি কারণে: ক) স্থানীয় লোকজন অভিযোগ, আগের সন্ত্রাসী লোকজনই বিএনপির ছত্রছায়ায় পুনরায় দখল ও শক্তিমত্তা দেখাচ্ছে। খ) বিএনপি'র ব্যানারগুলোতে জিয়া-খালেদা-তারেক-এর সঙ্গে আবদুল্লাহ আল নোমানের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। খোঁজ নেওয়া হলে চট্টগ্রামে নোমান-অনুসারী নামে পরিচিত জামিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ মুসুল্লি কমিটির নেতা খোরশেদুর রহমান আমাকে জানান, 'নোমান ভাই অসুস্থ হয়ে রাজনীতি থেকে দূরে আছেন। তিনি চট্টগ্রামেও আসেন নি। এসব সন্ত্রাসী দখলদারদের সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।'
২. নভেম্বরের ২য় সপ্তাহে সিলেট গিয়ে অভিন্ন চিত্র দেখতে পেয়েছি। সেখানেও দখল, চাঁদাবাজি এবং সীমান্ত চোরাচালানের হাত-বদল হয়েছে। আগে যে অপকর্ম করতো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নামধারী গোষ্ঠী, এখন তা কব্জা করা হয়েছে বিএনপি‘র নামে। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় বিএনপি কয়েকজনকে বহিষ্কার করেছে। কিন্তু এতে বিশেষ ফলোদয় হয় নি।
৩. দেশের বিভিন্ন স্থানেও একই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ায় আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজি, দখলদারি, সিন্ডিকেট হাতে নিয়েছে সমাজে শক্তিমত্তা প্রদর্শনে সক্ষম ব্যক্তি ও গোষ্ঠী। তারা প্রধানত বিএনপি এবং ক্ষেত্র বিশেষে জামাত ও অন্যান্য দলগুলোর নাম ব্যবহার করছে। দৃষ্টান্ত স্বরূপ, ফেসবুকে এক যুবদল নেতার একটা ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেখানে তিনি বলছেন, আওয়ামী চাঁদাবাজরা পালিয়ে যাওয়ার পর বাজার কমিটির নেতা হিসেবে সেই জায়গায় তিনি বসেছেন, সিস্টেম সচল রাখতে!
দেশ ও জাতিকে গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথে সচল রাখা নয়, লুটপাটের সিস্টেম সচল রাখতেই মনোযোগী অধিকাংশ নেতা ও পাতি নেতা। ফলে যে চাঁদাবাজরা পলাতক, তাদের শূন্যস্থান দ্রুতই পূর্ণ হয়েছে। হাট-বাজার-ঘাট-সড়ক-জলমহালে সরকারের প্যারালাল মাফিয়া বা সিন্ডিকেট নির্বিঘ্নে রিপ্লেসমেন্ট হয়েছে। আওয়ামী লীগের বদলে জায়গা নিয়েছে অন্য রাজনৈতিক দলের নামধারীরা। নামধারী এজন্য বলা ভালো, কারণ তারা কেউই নিষ্ঠাবান, আদর্শিক ও শুদ্ধ রাজনীতিবিদ নন। অধিকাংশই রাজনীতির ভেক ধারণ করা দুর্বৃত্ত। নেতা ও দলকে লুটপাট, দখল, তছরুপ, কর্তৃত্ববাদের পথে নিয়ে যেতে এদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। এরাই বাংলাদেশের সমাজ, রাজনীতি, নির্বাচন, টেন্ডারসহ যাবতীয় কাজে দখল ও শক্তিমত্তার রাজনৈতিক সংস্কৃতি বজায় রেখে গণতান্ত্রিকতার বারোটা বাজাচ্ছে এবং বিপ্লবাত্মক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন সরকারকে বিপদে ফেলছে।
৪. এদের দ্বারা সৃষ্ট বিপদ টের পাওয়া যায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের খতিয়ানে। এতে দেখা যায়, ১০০ দিনে সরকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিক থেকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। পুলিশে অনুপস্থিতি ও পরিস্থিতির পরিবর্তনের সুযোগে রাজনৈতিক শক্তিপ্রদর্শনের পাশাপাশি সাধারণ অপরাধও বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ মানুষ সরকারের কাছে কঠোর পদক্ষেপ দাবি করছেন। পাশাপাশি, গণ-মামলাবাজি, গণপিটুনি ও বিচার বহির্ভূত হত্যার ঘটনা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
দেশে গত মাসে (অক্টোবর) কমপক্ষে ৬৮টি 'রাজনৈতিক সহিংসতার' ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪০০ জন। এসব সহিংসতার মধ্যে ২৫টি ঘটেছে বিএনপির অন্তঃকোন্দলের কারণে। এ ছাড়া বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ২৬টি, বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে ৩টি ও আওয়ামী লীগের অন্তঃকোন্দলে ১টি সহিংসতা ঘটে। অন্য ১৩টি ঘটনা ঘটেছে অন্য বিভিন্ন দলের মধ্যে।
হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) 'বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, অক্টোবর ২০২৪' শীর্ষক মাসিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
৫. অন্তর্বর্তী সরকারের অধীন মানবাধিকার পরিস্থিতির কিছু বিষয়ে উন্নতি ঘটলেও সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি বলে এইচআরএসএস প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, কিছু ক্ষেত্রে বরং মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। আধিপত্য বিস্তারকেন্দ্রিক রাজনৈতিক সহিংসতা, গণপিটুনিতে মানুষ হত্যা, রাজনৈতিক মামলা ও গ্রেফতার, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, শ্রমিক হত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, কারা হেফাজতে মৃত্যু, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশি নির্যাতন ও হত্যা, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। অক্টোবর মাসে বেশ কয়েকজন আসামিকে আদালতে হাজির করার সময় দুষ্কৃতকারীদের মাধ্যমে শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া, প্রতিহিংসার দ্বারা মামলা দেওয়া ও আক্রান্ত করার ঘটনাও ঘটেছে অনেক। উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাউকে কাউকে আসামি বানিয়ে ব্যক্তি ও গোষ্ঠী কর্তৃক টাকা কামাইয়ের বিষয়েও পাওয়া গেছে এন্তার অভিযোগ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালের সুযোগ নিয়ে মতলববাজ গোষ্ঠীর দ্বারা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল এবং দখল ও শক্তিমত্তার রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রত্যাবর্তন সবার জন্যেই অশনি সঙ্কেত স্বরূপ।
৬. বিশেষজ্ঞ লুসিয়ান পাই রাজনৈতিক সংস্কৃতির সংজ্ঞায় বলেছেন, 'রাজনৈতিক সংস্কৃতি হল মনোভাব, বিশ্বাস এবং অনুভূতির সমষ্টি, যা একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে আদেশ ও অর্থ প্রদান করে এবং যা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে এমন অন্তর্নিহিত অনুমান এবং নিয়ম প্রদান করে।' মোদ্দা কথায় তার মানে হলো, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আমরা যে আচার-আচরণ করি, সেটাই আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। আমরা যেভাবে দখল ও শক্তিমত্তাকে ক্ষমতা পরিচালনা থেকে নির্বাচন পর্যন্ত প্রসারিত করেছি, তা সহজেই মুছে যাচ্ছে না। বরং সুযোগ পেলেই সর্বত্র প্রসারিত হচ্ছে। সরকার থেকে কর্তৃত্ববাদ বা ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও সমাজ ও রাজনীতিতে ছোট্ট ছোট্ট দ্বীপের মতো সেগুলো আবার তৈরি হচ্ছে। শীর্ষ থেকে কর্তৃত্ববাদ/ফ্যাসিবাদ হটানোর দাবি করে যদি শেকড় পর্যায়ে নানা নামে ও আঙিকে বিরাজমান দখল ও শক্তিমত্তার রাজনৈতিক সংস্কৃতি তথা কর্তৃত্ববাদী/ফ্যাসিবাদী ধারা ও মানসিকতা দমন করা না যায়, তা হলে বিপ্লব/সংস্কার/পরিবর্তন এবং ভবিষ্যতে স্বৈরাচারের উত্থান ঠেকানো কতটুকু সম্ভব ও সফল হতে পারবে?
৭. অস্বীকার করার জো নেই, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরে কিছুদিন পরিস্থিতি বেশ ভালো ছিল। বাজার দর কিংবা বাসের ভাড়া চাঁদাবাজদের অনুপস্থিতিতে কমেছিল। রাস্তাঘাটে নিয়ম-শৃঙ্খলার প্রতি মান্যতা দেখিয়েছিল বেপরোয়া চালকগণও। কিন্তু অচিরেই পরিস্থিতি পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে। যার প্রতিফলন ঘটেছে এইচআরএসএস প্রতিবেদনে, বাজারের নিয়ন্ত্রণহীনতায় ও অন্যান্য বিষয়ে। দেশে যখন বেসামরিক প্রশাসন কিছুটা অপ্রস্তুত, পুলিশ প্রশাসন একেবারেই মনোবলহীন- সেই ফাঁকা মাঠে হাত-বদল করে অতীতের দখল ও শক্তিমত্তার রাজনৈতিক সংস্কৃতির পাগলা ঘোড়া দাপিয়ে বেড়ালে পরিস্থিতি বরং আরও খারাপের দিকে চলে যেতে পারে।
৮. বাস্তব সত্য এটাই যে, আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে দেশের অন্যতম প্রধান দল হিসাবে বিএনপি‘র সারা দেশেই শক্তিশালী অবস্থায় আছে। তবে, তা জনসমর্থনে যতটুকু শক্তিশালী সাংগঠনিক শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে ততটুকু নয়। অতীতে যেমন বহুবার দলের নির্দেশ উপেক্ষা ও অমান্য করে বিএনপি‘র নেতা-কর্মীরা নির্বাচনে যোগ দিয়েছেন, বর্তমানেও দলের নির্দেশ ভুলে অনেকেই শক্তিমত্তা ও দখলদারির পথে চলেছেন। ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে বহু জায়গার বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদল নেতাদের দখলদারিত্ব, কথাবার্তা, বেয়ারা আচরণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাউর হয়েছে। সেসব বড় সমালোচনা তৈরি করছে। বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতারাও নানাভাবে সেসব অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বহিষ্কার, সদস্যপদ স্থগিত ইত্যাদি করছেন। বিএনপির নেতা তারেক রহমান বারংবার কর্মীদের এসব কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্কও করছেন। কিন্তু বিএনপির মাঠ পর্যায়ে নেতাদের থামানো যাচ্ছে না। এসব কর্মকাণ্ড বিএনপিকে বিব্রত করছে, দলের হাইকমান্ডের নেতারা অস্বস্তিতে পড়ছেন এবং দলের ইমেজ ও জনপ্রিয়তার হানি হচ্ছে বটে, কিন্তু বাস্তবে তা সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।
৯. অন্যদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতার প্রথম ১০০ দিনে গৃহীত সংস্কার ও অন্যান্য বিষয়কে মূল্যায়ন করে 'এ নিউ এরা ইন বাংলাদেশ? দ্য ফার্স্ট হান্ড্রেড ডেজ অব রিফর্ম' শীর্ষক দীর্ঘ ৩৭ পৃষ্ঠার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে 'ক্রাইসিস গ্রুপ' নামে বেলজিয়ামভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। তারা তাদের রিপোর্টে বলেছে, গণঅভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার তিন মাস পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা আরও স্পষ্ট হচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের সামনে এগুনোর পথে সুপ্ত বিপদেরও আভাস পাওয়া যাচ্ছে। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এই সরকার আরও এক বছর, সম্ভবত এর চেয়েও বেশি সময় দায়িত্ব পালন করবে বলে মনে হচ্ছে। শেখ হাসিনার পনেরো বছরের শাসনের পর শাসনব্যবস্থার উন্নতির এবং ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এক প্রজন্মের সামনে এমন সুযোগ একবারই আসে। বাংলাদেশ এমন সুযোগ পেয়েছে। এই সুযোগ আরেকটি স্বৈরাচারী সরকারের উত্থানের পথ বন্ধ করতে পারে।
১০. কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতির তৃণমূল পর্যায়ে যদি দখল ও শক্তিমত্তার রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিরাজমান থাকে এবং দলে ও নেতৃত্বে কর্তৃত্ববাদী-ফ্যাসিবাদী মনোভাব বহাল থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে আরেকটি স্বৈরাচারী দলীয় সরকারের উত্থানের পথ আদৌ বন্ধ করা সম্ভব হবে?
ড. মাহফুজ পারভেজ: অ্যাসেোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম; প্রফেসর ও চেয়ারম্যান, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম সেন্টার ফর রিজিওনাল স্টাডিজ, বাংলাদেশ (সিসিআরএসবিডি)।